জেটিতে সিমেন্ট ক্লিংকারবাহী বড় জাহাজের বার্থিং

অর্থ সাশ্রয়ের পাশাপাশি বৃদ্ধি পাবে বন্দরের আয়

আজাদী প্রতিবেদন | শুক্রবার , ২৬ মার্চ, ২০২১ at ৬:৪৪ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রাম বন্দরের ইতিহাসে সিমেন্ট ক্লিংকারবাহী সবচেয়ে বড় জাহাজটি গতকাল ক্লিংকার জেটিতে বার্থিং নিয়েছে। বন্দরের অনুমোদিত সাইজের জাহাজ হলেও এরআগে এই জেটিতে ক্লিংকারবাহী এত বড় জাহাজ আর কোনদিন বার্থিং নেয়নি। এ ধরনের বড় জাহাজ সরাসরি জেটিতে বার্থিং নেয়ার ফলে আমদানিকারকদের বিপুল অংকের অর্থ সাশ্রয়ের পাশাপাশি বন্দরের আয় ও ইমেজ বৃদ্ধি পাবে। একইসাথে বন্দরের বহির্নোঙরের জট নিরসনেও এ ধরনের পদক্ষেপ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
বন্দরের দায়িত্বশীল একটি সূত্র জানায়, সিমেন্ট ক্লিংকার জেটিতে সচরাচর ১৫০ থেকে ১৬০ মিটার লম্বা জাহাজ বার্থিং নেয়। বন্দর চ্যানেলের বেশ সুবিধাজনক অবস্থানে থাকা ১৬১ মিটার লম্বা এ জেটিতে সর্বোচ্চ ৯.৪ মিটার ড্রাফটের ১৬১ মিটার লম্বা জাহাজ বার্থিং দেয়ার অনুমোদন রয়েছে। অবশ্য ড্রাফট ৮.৬ মিটার হলে ১৭০ মিটার লম্বা জাহাজ বার্থিং দেয়ার অনুমোদন রয়েছে। এর থেকে লম্বা ও বেশি গভীরতার জাহাজ এ জেটিতে কোনদিন বার্থিং দেয়া হয়নি। অনুমোদিত ড্রাফট ও লম্বার চেয়ে বড় জাহাজ সিমেন্ট ক্লিংকার নিয়ে আসলে বহির্নোঙরে অবস্থান করতে হতো। সেখানে লাইটারেজ জাহাজে খালাস করা হয় ক্লিংকার। এ প্রক্রিয়া ব্যয়বহুল। জেটিতে ক্লিংকার খালাসের চেয়ে বহির্নোঙরে লাইটারেজ জাহাজে ক্লিংকার খালাস করে নিয়ে আসার সাথে লাখ লাখ টাকার বাড়তি খরচ জড়িত। এছাড়া সময়ও বেশি লাগে। এক একটি মাদার ভ্যাসেলকে একদিনের বেশি অপেক্ষা করতে হলে অন্তত পনের থেকে বিশ হাজার ডলার বাড়তি গচ্ছা দিতে হয়। যার যোগান কার্যতঃ ভোক্তাদের দিতে হয়। অথচ জাহাজ বন্দরের অভ্যন্তরে এনে জেটিতে ভিড়িয়ে পণ্য খালাস করতে পারলে এসব বাড়তি খরচ থেকে আমদানিকারক রক্ষা পান।
চট্টগ্রাম বন্দর চ্যানেলের ক্লিংকার জেটিতে অনুমোদিত ল্যান্থ ও ড্রাফটের চেয়ে বড় জাহাজ বার্থিং দেয়ার একটি পরীক্ষামূলক উদ্যোগ নেয় চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ। এরই অংশ হিসেবে গতকাল দেশীয় কোম্পানি এসআর শিপিং এর মালিকানাধীন এমভি জাহান ব্রাদার্স নামের ১৮৫.৮৪ মিটার লম্বা জাহাজ এ জেটিতে বার্থিং দেয়া হয়। জাহাজটির সামনের দিকে ড্রাফট ৮.২০ মিটার ও পেছনের দিকে ড্রাফট ৫.৭ মিটার। গতকাল জোয়ারের সময় বেশ স্বাচ্ছন্দে জাহাজটির বার্থিং প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়। বিকেল থেকে ক্লিংকার খালাস শুরু হয়।
বন্দর সচিব মোহাম্মদ ওমর ফারুক গতকাল দৈনিক আজাদীকে বলেন, এ ধরনের বড় জাহাজ বার্থিং চট্টগ্রাম বন্দরের সক্ষমতা বৃদ্ধিতে একটি মাইলফলক। যা বন্দরের অধিক মুনাফা অর্জনসহ সার্বিক দক্ষতা বৃদ্ধিতে একটি অনন্য দৃষ্টান্ত হিসেবে কাজ করবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধচট্টগ্রামে আরো ২০৮ জনের করোনা শনাক্ত
পরবর্তী নিবন্ধকেন রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বার বার অগ্নিকাণ্ড?