জুলাইয়ে জাহাজ ভিড়বে পতেঙ্গা কন্টেনার টার্মিনালে

আজাদী প্রতিবেদন | সোমবার , ১৬ মে, ২০২২ at ৪:৪৯ পূর্বাহ্ণ

আর মাত্র দেড়মাস পরেই জাহাজ ভিড়বে স্বপ্নের পতেঙ্গা কন্টেনার টার্মিনালে (পিসিটি)। অন্তত দশ মিটার ড্রাফটের জাহাজের নোঙর করার উপযোগী করে গড়ে তোলা হচ্ছে পিসিটিকে। ইতোমধ্যে এই কন্টেনার টার্মিনাল নির্মাণ প্রকল্পের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। জুলাই মাসে পুরোদমে না হলেও আংশিক কার্যক্রমের মাধ্যমে চট্টগ্রাম বন্দরের কর্মকাণ্ডে এই টার্মিনালের অভিষেক ঘটবে।
সূত্র জানিয়েছে, পতেঙ্গার ড্রাইডক থেকে বোট ক্লাব পর্যন্ত বিমানবন্দর সড়কটি সোজা করে পতেঙ্গা কন্টেনার টার্মিনাল (পিসিটি) নির্মাণের উদ্যোগ নেয় বন্দর কর্তৃপক্ষ। ৩২ একর ভূমির উপর বন্দর কর্তৃপক্ষ নিজস্ব তহবিল থেকে প্রায় দুই হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে। ২০১৭ সালের ১৩ জুন সরকার প্রকল্পটির অনুমোদন দেয়। চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের প্রকল্পটির কাজ ২০২০ সালের ডিসেম্বরে শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ভয়াল করোনাসহ বহুমুখী সমস্যার কবলে পড়ে নির্ধারিত সময়ে প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হয়নি। পরবর্তীতে প্রকল্প মেয়াদ দুই দফায় দুই বছর বাড়িয়ে চলতি বছরের জুন পর্যন্ত করা হয়েছে। এবার নির্ধারিত সময়ে পিসিটিতে জাহাজের নোঙর ঘটবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করা হয়েছে।
এই টার্মিনালে ৬০০ মিটার লম্বা জেটি নির্মাণ করা হচ্ছে। যাতে ১৯০ মিটার লম্বা এবং দশ মিটার গভীরতার তিনটি জাহাজকে একই সাথে বার্থিং দেয়া সম্ভব হবে। এই টার্মিনাল বছরে সাড়ে ৪ লাখ টিইইউএস কন্টেনার হ্যান্ডলিং করতে পারবে। এর বাইরে ২২০ মিটার লম্বা ডলফিন জেটিতে ২২০ মিটার লম্বা অয়েল ট্যাংকার বার্থিং দেয়া সম্ভব হবে।
বন্দর সূত্র বলেছে, ২০০৭ সালে এনসিটি নির্মাণের পর গত এক যুগেরও বেশি সময়ে বন্দরে জেটির সংখ্যা আর বাড়েনি। পতেঙ্গা কন্টেনার টার্মিনাল আগামী জুলাইয়ে অপারেশন শুরু করলে ১৫ বছর পর জেটি বাড়ানোর ঘটনা ঘটবে। পিসিটি পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ প্রক্রিয়ায় পরিচালিত করা হবে বলে সিদ্ধান্ত রয়েছে। তবে কাদেরকে এটি পরিচালনার দায়িত্ব দেওয়া হবে তা নিয়ে এখনো সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়নি। তবে জুলাই মাসে বন্দর কর্তৃপক্ষের নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় জাহাজ ভিড়ানোর লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে কাজ চলছে। শুরুতে কোনো গিয়ারলেস ভ্যাসেলকে এখানে বার্থিং দেয়া হবে না। জাহাজের ক্রেন দিয়েই কন্টেনার হ্যান্ডলিং হবে। এই টার্মিনাল পরিচালনা এবং বিনিয়োগের ব্যাপারে সৌদি আরবের ‘রেড সি গেটওয়ে টার্মিনাল’, দুবাইয়ের ‘ডিপি ওয়ার্ল্ড’, ভারতের ‘আদানি পোর্ট অ্যান্ড স্পেশাল ইকোনমিক জোন লিমিটেড’ ও সিঙ্গাপুরের ‘পিসিএ’র মত আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানগুলো আগ্রহ প্রকাশ করেছে। প্রাক-সমীক্ষা অনুযায়ী প্রকল্পটি পুরোদমে পরিচালনা করতে ইকুইপমেন্ট ক্রয়সহ বিভিন্নভাবে ৫৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করতে হবে। এটির বার্ষিক ব্যয় ৮০ লাখ ডলার হবে বলেও প্রাক সমীক্ষায় উল্লেখ করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, দেশের আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যের প্রবেশদ্বার চট্টগ্রাম বন্দরে জেনারেল কার্গো বার্থ (জিসিবি), সিসিটি ও এনসিটি মিলে সর্বমোট ১৯টি জেটি রয়েছে। পতেঙ্গা কন্টেনার টার্মিনালের তিনটি জেটি যুক্ত হলে বন্দরের সক্ষমতা বেশ বৃদ্ধি পাবে বলেও সূত্র মন্তব্য করেছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধভারত জানালেই পি কে হালদারকে আনার বিষয়ে ব্যবস্থা
পরবর্তী নিবন্ধনিজ কার্যালয়ে খাদ্য কর্মকর্তার লাশ মিলল চিরকুট