জুনে এসএসসি, জুলাই আগস্টে এইচএসসি

আজাদী ডেস্ক | বুধবার , ৩০ ডিসেম্বর, ২০২০ at ৯:০০ পূর্বাহ্ণ

করোনাভাইরাস মহামারীর কারণে নয় মাসের বেশি সময় ধরে বন্ধ থাকা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে খুলে দেওয়া হতে পারে বলে আভাস দিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি। গতকাল মঙ্গলবার এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, গত ১৬ মার্চ থেকে প্রত্যক্ষ শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। এসএসসি পরীক্ষার্থীদের ফেব্রুয়ারি থেকে এপ্রিল এই সময়কালে ক্লাসরুমে পড়ানোর উদ্যোগ নেব, সেই চেষ্টা করছি। ২০২১ সালের এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার্থীদের পূর্ণাঙ্গ সিলেবাস শেষ করা যায়নি বলে সিলেবাস পুনর্বিন্যস্ত করে তাদের স্কুলে নিয়ে ক্লাস করানোর এই উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে বলে জানান তিনি।
এছাড়া জানুয়ারিতে এইচএসসির ফল প্রকাশে অধ্যাদেশ হবে। জুনে এসএসসি ও জুলাই-আগস্টে এইচএসসি পরীক্ষা নেওয়ার পরিকল্পনা আছে। এদিকে এবার জিপিএ থাকবে না জেএসসি-জেডিসির সনদে। খবর বিডিনিউজের।
মন্ত্রী বলেন, পরিস্থিতি যদি অনুকূলে থাকে, ২০২১ সালের জুন নাগদ এসএসসি পরীক্ষা নেওয়ার চেষ্টা হবে। সেজন্য স্কুল খুলে দেওয়ার চেষ্টা করা হবে, যাতে মাধ্যমিকের শিক্ষার্থীদের শ্রেণিকক্ষেই সংক্ষিপ্ত সিলেবাসের ক্লাস নিয়ে পরীক্ষার জন্য তৈরি করা যায়। আর এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের আগামী ফেব্রুয়ারি থেকে মে মাস পর্যন্ত ক্লাসরুমে নিয়ে ক্লাস করানোর পরিকল্পনা করা হচ্ছে জানিয়ে দীপু মনি বলেন, জুলাই-আগস্ট নাগাদ এইচএসসি পরীক্ষা গ্রহণের আশা প্রকাশ করছি। করোনার প্রকোপ বাড়তে থাকলে গত ১৭ মার্চ থেকে দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়া হয়। কওমি মাদ্রাসা বাদে অন্য সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আগামী ১৬ জানুয়ারি পর্যন্ত ছুটি ঘোষণা করা আছে।
জুনে এসএসসি, জুলাই-আগস্টে এইচএসসি : মহামারীর কারণে সিলেবাস কমিয়ে আগামী বছরের এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা পিছিয়ে জুন মাসে এবং এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা জুলাই-আগস্ট মাসে নেওয়ার পরিকল্পনা করছে সরকার।
গতকাল এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, গত ১৬ মার্চ থেকে প্রত্যক্ষ শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। ফলে ২০২১ সালের এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার্থীদের পূর্ণাঙ্গ সিলেবাস শেষ করা সম্ভব হয়নি। সিলেবাস কাস্টমাইজ করার কার্যক্রম চলছে। ১৫ জানুয়ারির মধ্যে শিক্ষার্থীদের এ বিষয়ে জানাতে পারব। পরের স্তরে যেতে যেগুলো প্রয়োজন, সেগুলো মাথায় রেখে সিলেবাসকে কাটছাঁট করে ছোট করা হবে, সেটি আমরা জানিয়ে দেব।
মন্ত্রী বলেন, ফেব্রুয়ারি থেকে এপ্রিল এই সময়কালে (এসএসসি পরীক্ষার্থীদের) ক্লাসরুমে পড়ানোর উদ্যোগ নেব, সেই চেষ্টা করছি। পরিস্থিতি যদি অনুকূলে থাকে ২০২১ সালের জুন নাগদ এই পরীক্ষা নেওয়ার চেষ্টা করব। স্কুলগুলো খুলে দেওয়ার চেষ্টা করব। দশম ও দ্বাদশ শ্রেণি যেন নতুন সিলেবাসে ক্লাস করে পরীক্ষা দিতে পারে।
আগামী বছরের এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের ‘পুনর্বিন্যস্ত’ সিলেবাস ৩১ জানুয়ারির মধ্যে জানিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা তুলে ধরে মন্ত্রী বলেন, ফেব্রুয়ারি থেকে মে মাস পর্যন্ত হয়ত তাদের ক্লাসরুমে নিয়ে ক্লাস করানো হবে। জুলাই-আগস্ট নাগাদ এই পরীক্ষা গ্রহণের আশা প্রকাশ করছি।
এইচএসসির ফল প্রকাশে অধ্যাদেশ : মহামারীর মধ্যে বিশেষ পরিস্থিতিতে এবারের এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল প্রকাশ হবে নতুন বছরের শুরুতে। তবে সেজন্য একটি অধ্যাদেশ জারি করতে হবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি। তিনি বলেন, পরীক্ষার ফল সংক্রান্ত আইন রয়েছে, বিশেষ পরিস্থিতিতে ফল প্রকাশের জন্য একটি অধ্যাদেশ জারি করতে হবে। সহসাই এটি জারি করা হবে।
দেশের ১১টি বোর্ডে ১৩ লাখ ৬৫ হাজার ৭৮৯ জন শিক্ষার্থীর এবার এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা দেওয়ার কথা ছিল। পরীক্ষা শুরু হওয়ার কথা ছিল ১ এপ্রিল থেকে। জেএসসি-জেডিসির ফলাফলকে ২৫ এবং এসএসসির ফলকে ৭৫ শতাংশ বিবেচনায় নিয়ে উচ্চ মাধ্যমিকের ফল ঘোষিত হবে।
এ বছর ফেব্রুয়ারিতে এসএসসি পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব হলেও দেশে করোনাভাইরাসের প্রকোপ বাড়তে থাকায় এইচএসসি পরীক্ষা আর নেওয়া সম্ভব হয়নি। তার আগে ১৭ মার্চ থেকে দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়া হয়।
বছরের শেষ ভাগে এসে জানানো হয়, এবার মহামাররি মধ্যে আর এইচএসসি পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব হবে না। পরীক্ষার্থীদের অষ্টমের সমাপনী এবং এসএসসি ও সমমানের ফলাফলের ভিত্তিতে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল ঘোষণা করা হবে।
জিপিএ থাকবে না জেএসসি-জেডিসির সনদে : করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যে এবার পরীক্ষা ছাড়াই জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) ও জুনিয়র দাখিল সার্টিফিকেট (জেডিসি) পরীক্ষার্থীদের পরের ক্লাসে তোলা হবে বলে তাদের সনদপত্রে কোনো জিপিএ থাকবে না। শিক্ষামন্ত্রী বলেন, কোভিড-১৯ পরিস্থিতির কারণে এ বছর জেএসসি-জেডিসি পরীক্ষা গ্রহণ করতে পারিনি, সম্ভব হয়নি। মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের নির্দেশনা মোতাবেক স্ব স্ব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান অ্যাসাইনমেন্টের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন সম্পন্ন করেছে। ইতোমধ্যে শিক্ষাবোর্ডগুলো জেএসসি-জেডিসি পরীক্ষার্থীদের রেজিস্ট্রেশনের কাজও সম্পন্ন করেছে। বোর্ডগুলো সকল শিক্ষার্থীদের উত্তীর্ণ সদন দেবে, কিন্তু কোনো নম্বরপত্র দেওয়া হবে না।

পূর্ববর্তী নিবন্ধসিএসইতে লেনদেন ৪২.৭০ কোটি টাকা
পরবর্তী নিবন্ধসব শ্রেণির লটারি কার্যক্রম স্থগিত