জুঁইদন্ডী ইউপি নির্বাচনে বিজয়ী নৌকার প্রার্থী স্বতন্ত্র প্রার্থীর ভোট বর্জন

দুই সদস্য প্রার্থীর সমর্থকদের মাঝে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া

আনোয়ারা প্রতিনিধি | মঙ্গলবার , ১ ফেব্রুয়ারি, ২০২২ at ১০:৩৭ পূর্বাহ্ণ

আনোয়ারা উপজেলার জুঁইদন্ডী ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন গতকাল সোমবার অনুষ্ঠিত হয়েছে। ভোটাররা বিরতিহীনভাবে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইবিএম) পদ্ধতিতে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন। নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত (নৌকা) মাস্টার মোহাম্মদ ইদ্রীস ৮৩৩০ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। তার প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী রাশেদুল ইসলাম চৌধুরী (অটোরিকশা) পেয়েছেন ১৯৮ ভোট। রেহেনা আকতার (ঘোড়া) পেয়েছেন ৭০ ভোট এবং আবুল হোসেন (আনারস) পেয়েছেন ৫২ ভোট। তবে ভোট শুরুর দুই ঘণ্টা পর কেন্দ্র দখল ও অনিয়মের অভিযোগ এনে স্বতত্র প্রার্থী রাশেদুল ইসলাম চোধুরী ভোট বর্জনের ঘোষণা দেন। বিকাল সাড়ে ৫ টায় ইউনিয়নের ৫ ও ৬ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্যদের ভোটের ফলাফল ঘোষণাকে কেন্দ্র করে প্রতিদ্বন্দ্বী দুই ইউপি সদস্যের সমর্থকদের মাঝে মারামারি ও ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।
সরেজমিনে ইউনিয়নের দক্ষিণ খুরুস্কুল আল আমিন ফোরকানিয়া মাদ্রাসা ভোট কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায় ভোটারদের দীর্ঘ লাইন। প্রিজাইডিং অফিসার মাঈন উদ্দিন জানান, ইভিএময়ের নিয়ম না জানায় ভোটারদের কিছুটা সমস্যা হচ্ছে। তাই ভোটগ্রহণে একটু ধীরে হচ্ছে।
এদিকে স্বতন্ত্র প্রার্থী রাশেদুল ইসলাম চোধুরী ভোট শুরুর ২ ঘণ্টা পর সকাল ১০ টায় নিজ বাড়িতে ভোট বর্জনের ঘোষণা দিয়ে বলেন, ভোট শুরুর আগে আমার এজেন্টরা নির্দিষ্ট সময়ে ভোট কেন্দ্রে উপস্থিত হলেও আমার কোন নির্বাচনী এজেন্টকে ভোট কেন্দ্রে ঢুকতে দেয়া হয়নি। বহিরাগত লোকজন সকাল থেকে ভোট কেন্দ্র দখল করে রাখে। শুধু তা নয়, নৌকার প্রার্থীর লোকজন আমার এজেন্টদের এজেন্ট ফরম কেড়ে নিয়ে তাদের কেন্দ্র থেকে বের করে দেন। সেই সাথে ভোটারদের ভয়ভীতি দেখিয়ে নোকায় ভোট নিয়ে নিচ্ছে। তাই নির্বাচনের পরিবেশ না থাকায় আমি বাধ্য হয়ে ভোট বর্জন করলাম।
তবে স্বতন্ত্র প্রার্থীর অভিযোগ অস্বীকার করে নির্বাচিত চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগের প্রার্থী মাস্টার মোহাম্মদ ইদ্রিচ বলেন, মনোনয়ন ফরম জমা দেওয়ার পর থেকে বিদ্রোহী প্রার্থী রাশেদুল ইসলাম এক দিনের জন্যও এলাকায় আসেননি। ভোটারদের কাছে ভোটও চায়নি। তাই নির্বাচনে ভরাডুবির কথা বুঝতে পেরে কাল্পনিক অভিযোগ এনে আগেই নির্বাচন বর্জনের নাম করে ভোটের মাঠ থেকে পালিয়ে গেছে।
আনোয়ারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দিদারুল ইসলাম সিকদার বলেন, কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়াই শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচন হয়েছে। তবে ভোটগণনা শেষে ফলাফল ঘোষণাকে কেন্দ্র করে ইউনিয়নের ৫ ও ৬ নং ওয়ার্ড়ের দুই প্রতিদ্বন্দ্বী ইউপি সদস্য প্রার্থীর সমর্থকদের মাঝে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে বর্তমানে এলাকা শান্ত রয়েছে।
আনোয়ারা উপজেলা নির্বাহী অফিসার শেখ জোবায়ের আহমেদ বলেন, সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত নারী পুরুষ দীর্ঘ লাইনে দাড়িয়ে শান্তিপূর্ণভাবে ভোট দিয়েছে। ৯টি কেন্দ্রের কোথাও কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা হয়নি। নির্বাচন সুষ্ট ও শান্তিপূর্ণ করতে ৩ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটসহ বিপুল সংখ্যক আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দায়িত্ব পালন করেছেন। নির্বাচনে আমরা সব প্রার্থীকে সমান সুযোগ করে দিয়েছি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধবঙ্গবন্ধুর বিপ্লবী চেতনার উৎস
পরবর্তী নিবন্ধরাঙামাটিতে আওয়ামী লীগের ৮ নেতাকে অব্যাহতি