জীবনের শেষ বয়সে ক্ষণিকের স্বপ্ন

নেছার আহমেদ খান | শুক্রবার , ২৮ অক্টোবর, ২০২২ at ৬:১০ পূর্বাহ্ণ

পৃথিবীতে প্রত্যেক মা তার সন্তানকে দশ মাস দশ দিন গর্ভে ধারণ করে। দিনের পর দিন কষ্ট করে নিজের সন্তানকে লালন পালন করে। অসুখ হলে রাত জেগে সেবা যত্ন করে। টাকা দেওয়ার সামর্থ্য না থাকলেও তাদের সন্তানকে পড়ালেখা করান। তারা নিজের সৌন্দর্যের কথা না ভেবে সন্তানের সৌন্দর্যের কথা ভাবেন। কিন্তু এত কষ্ট করে সন্তানকে বড় করে শেষে কিছু কিছু বাবা মার কপালে কী জুটে? তাদের কপালে জুটে শুধু অত্যাচার আর অপমান। প্রত্যেক মা বাবা আশা করে তার সন্তান একজন ভালো মানুষ হিসেবে গড়ে উঠবে। সুশিক্ষায় শিক্ষিত হবে এবং সবার সাথে ভালো আচরন করবে। কিন্তু না সব মা বাবার কপালে সেটা জুটে না।

শুধু ভাগ্যে ভালো মা বাবার কপালে সেইটা জুটে। একদিন সন্তান বড় হয়ে বিয়ে করে চাকরি করে। যখন সন্তান চাকরি করে বাড়ি ফিরে। তখন তার স্ত্রী বলে কত টাকা খরচ করেছ তার সন্তান বলে বাবা কী এনেছ, আর তার বাবা বলে কত টাকা উপার্জন করছ। কিন্তু মা বলে তুমি ভাত খাইছো? পৃথিবীতে অনেক সন্তান আছে যারা এই রকম মা বাবাকে বৃদ্ধাশ্রমে পাঠিয়ে দেয়। তাদের নিজেদের ঘর-বাড়ি জায়গা-জমিন থাকাসত্ত্বেও থাকতে হয় বৃদ্ধাশ্রমে। তারা হয় নিজ ঘরে পরবাসী।

তাদের দিন রাত কষ্ট করার পর যখন সুখ আসে তখন তাদের পেতে হয় শুধু কষ্ট আর কষ্ট। আবার পৃথিবীতে কিছু কিছু সন্তান আছে যারা মা বাবাকে খুব ভালোবাসে। তাদের জন্য শুধু এই পৃথিবীটা টিকে আছে। অনেকে আছে যারা তাদের স্ত্রীর জন্য নিজের মা বাবাকে বৃদ্ধাশ্রমে পাঠিয়ে দিতে বাধ্য হয়। তারা তো একদিন মা বাবা হবে তাদেরও হয়তো এইদিন আসবে তখন তাদের একই যন্ত্রনা ভোগ করতে হবে। অন্যকে কষ্ট দিলে সেই কষ্ট একদিন নিজেকে ভোগ করতে হয়। এটাই হল সত্য কথা। পৃথিবীতে হাজার হাজার মা বাবা আছে যাদেরকে জীবন কাটাতে হয় বৃদ্ধাশ্রমে। হাজার হাজার মা বাবা এরকম বুকে কষ্ট জমিয়ে রেখেছে।

কিন্তু এত কষ্ট বুকে জমিয়ে রাখার পরও তার নিজের সন্তানকে অভিশাপ দেয় না। এরাই হলো মা-বাবা যারা যারা নিজের মা বাবাকে কষ্ট দিচ্ছে তাদের উচিত নিজের মা বাবাকে কষ্ট না দেওয়া এবং বৃদ্ধাশ্রম থেকে নিজ বাড়িতে ফিরিয়ে আনা তাহলেই তাদের জীবন সুখ আসবে যারা মা বাবাকে কষ্ট দেয় তারা জাহান্নামী তারা কখনো স্বর্গে যেতে পারে না। যারা বৃদ্ধ মা বাবাকে আলাদা করে রেখেছে যারা দূরে সরিয়ে রেখেছে তারা নিজের স্বর্গটাকে যেন পায়ে ঠেলে দিলে!

পূর্ববর্তী নিবন্ধস্বর্গময় আমাদের মহামুনি
পরবর্তী নিবন্ধএই শহরে নিজেকে এখন অচেনা মনে হয়