জীবনের রসনাবিলাস

হৈমন্তী তালুকদার | মঙ্গলবার , ৭ জুন, ২০২২ at ৫:৫৬ পূর্বাহ্ণ

বাসার উপর থেকে মাঝেমধ্যে চোখে পড়ে, নিচে বসে থাকা কোন মা যখন বাচ্চা নিয়ে বসে থাকে কয়টা টাকার জন্য, পঙ্গু কোন মানুষ যখন হুইলচেয়ারে বসে অপেক্ষা করে থালায় কখন কেউ হাত বাড়িয়ে কিছু টাকা জমা দিবে, তখন মনে মনে ভাবি, শুধু শুধু হাহুতাশ করি কারণে অকারণে, বেশতো আছি, ভালো আছি, অন্তত তাদের চেয়ে শতগুণ ভালো আছি।

কতোকি চিন্তা ভর করে আমাদের বর্তমান আর ভবিষ্যৎ নিয়ে। অন্যদের থেকে শিখি,কিন্তু অন্যদের মতো হতে চাইনি কখনো, মনে কষ্ট, হতাশা, একঘেয়ে, শান্তি, অশান্তি, স্বপ্ন, আশা, নিরাশা, অবহেলা, আবার আহ্লাদ, রাগ, মেজাজের গতিপথ পরিবর্তন, হঠাৎ হাউমাউ করে কেঁদে ফেলা,আবার হঠাৎ হাসিতে গড়িয়ে পড়া আমরা এমনই অনেকটা। মানুষের মধ্যে কম বেশী দুঃখ কষ্ট আছেই। জীবনের সিঁড়িগুলো সবার মসৃণ নয়, কারো কারো সিঁড়িগুলো বড্ড সরু, পাশে রেলিংও নেই, চকচকে টাইলস বা মোজাইক পাথর দিয়ে তৈরি ও নয়…তবুও উঁচুতে ওঠার ইচ্ছা।

ঠিক লোভ নয়, সিঁড়ি বেয়ে নিজের জন্য একটা খোলা আকাশ দেখার জন্য একটা ছাদের খোঁজ। যে ছাদে বাগানের মতো করেই ছাদবাগান করা যাবে, ঘুড়ি ওড়ানো যাবে, হয়তো উঠান বা মাঠ নেই। তাতে কি মন ভরে নিঃশ্বাস নেওয়া যাবে। নিজের জীবনের পজিটিভ বিষয়গুলো নিয়ে আনন্দ নিয়ে কষ্ট ভুলে বেঁচে থাকার জন্য টিকে থাকার লড়াই হলো জীবন। আলু ভর্তা, আর ডালে, বেগুন ভাজি আর শাকভাজিতে যে অমৃত তৃপ্তি তা কিন্তু রোজ রোজ বিরিয়ানির গন্ধে পাওয়া গেলেও মন ভরেনা। জীবনে ছোট ছোট আনন্দের জন্য খুব কম ইনভেস্ট করলেই হয়, শুধু দরকার সুন্দর মন ও মানসিকতা। সাধ্যের মধ্যে সীমাবদ্ধ থেকে নিজেদের গন্ডিতে সুখী হওয়ার চেষ্টায় আনন্দ। জীবনে টক, ঝাল, মিষ্টি, তিতো, নোনতা নিয়েই কাটালেই আনন্দটা উপভোগ করা যায়। রোজ রোজ মিষ্টিও নয়, তিতোও নয়। একটা সুন্দর ব্যালেন্সে নিজে ভালো থাকা, অন্যকেও ভালো রাখা।

পূর্ববর্তী নিবন্ধপ্রাণেশ
পরবর্তী নিবন্ধঅমর একুশের এক নির্ভীক কলমযোদ্ধা