ইন্দোনেশিয়ায় বৃহৎ অর্থনীতির দেশগুলোর সংগঠন জি-২০ সম্মেলনের প্রথম দিন গতকাল মঙ্গলবার রাজধানী কিয়েভসহ ইউক্রেন জুড়ে তীব্র ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। রাজধানী ছাড়াও লিভিভ, পশ্চিমের রিউন, উত্তরপূর্বের খারকিভ, মধ্যাঞ্চলের ক্রিভি রিহ ও পোলতাভা, দক্ষিণের ওদেসা এবং উত্তরের ঝাইতোমিরে রীতিমত ক্ষেপণাস্ত্রের বর্ষণ হয়েছে। হামলায় কিয়েভে অন্তত একজন নিহত হয়েছেন। কিয়েভের প্রাণকেন্দ্রে অন্তত দুইটি আবাসিক ভবনে ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত করেছে। হামলায় ইউক্রেনের অনেক অঞ্চল বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। অর্ধেক কিয়েভে এখন বিদ্যুৎ নেই।
এদিন রাশিয়া ইউক্রেইনে ৮০টি ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে এবং আরো অন্তত ২০টি ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়বে বলে এক ভিডিও বার্তায় দাবি করেছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। তিনি নাগরিকদের নিরাপদ আশ্রয়ে থাকার পরামর্শ দিয়েছেন।
রাশিয়া বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো লক্ষ্য করেই ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালাচ্ছে বলেও জানানো হয়েছে। বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোতে হামলার কারণে বাধ্য হয়ে বিদ্যুৎ বন্ধ করে দিতে হয়েছে। ফলে কিয়েভের একাংশ অন্ধকারাচ্ছন্ন হয়ে পড়েছে।
সমপ্রতি রুশ বাহিনী তাদের দখলে থাকা অঞ্চল খেরসন থেকে পিছু হটতে বাধ্য হয়েছে। যেটিকে ইউক্রেনের বিজয় এবং রাশিয়ার জন্য চরম অপমান হিসেবে ধরা হচ্ছে। খেরসন থেকে পিছু হটার পর গতকালই প্রথম আবার ইউক্রেনে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালালো রাশিয়া এবং সেটা জি-২০ সম্মেলনের চলাকালে। অথচ, এবারের জি-২০ সম্মেলনের প্রধান আলোচ্য বিষয় হয়ে উঠেছে ইউক্রেন যুদ্ধ। সম্মেলনে বক্তব্য রাখা সব নেতাই রাশিয়াকে এ যুদ্ধ বন্ধ করতে বলেছেন।
এদিকে ইউক্রেন যুদ্ধে ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ দেয়ার পাশাপাশি রাশিয়াকে তার কর্মকাণ্ডের জন্য অবশ্যই পরিণতির মুখোমুখি করানোর প্রস্তাব রেখে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে একটি রেজ্যুলেশন পাস হয়েছে। একে পশ্চিমাদের ‘আনুষ্ঠানিক ডাকাতি’ বলে বর্ণনা করে ক্রেমলিন ক্ষোভের সঙ্গে ওই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে বলে জানায় বিবিসি। ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেন, ক্ষতিপূরণ হিসেবে পশ্চিমাদের রাশিয়ার আন্তর্জাতিক রিজার্ভ জব্দ করা আটকাতে তারা কাজ করবেন। এটা পশ্চিমাদের আনুষ্ঠানিক ডাকাতির চেষ্টা। যা ব্যক্তিগত সম্পদের সুরক্ষা এবং আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন।
জাতিসংঘের ওই রেজ্যুলেশনে বলা হয়, রাশিয়াকে অবশ্যই ‘আন্তর্জাতিকভাবে তার সমস্ত অন্যায় কাজের আইনি পরিণতি বহন করতে হবে। যার মধ্যে আহতদের জন্য ক্ষতিপূরণ প্রদান করা। তাদের এসব কর্মকাণ্ডের জন্য যে ধরণের ক্ষতিই হোক না কেনো তার ক্ষতিপূরণ দিতে হবে’। বিবিসি জানায়, জাতিসংঘের ১৯৩ সদস্য রাষ্ট্রের মধ্যে ৯৪ জন রেজ্যুলেশনের পক্ষে ভোট দেন। রাশিয়া, চীন ও ইরানসহ ১৪টি ভোট বিপক্ষে পড়ে। বাকি দেশগুলো ভোট দান থেকে বিরত থেকেছে।