জাহালমকে ১৫ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ

দেয়ার নির্দেশ | বৃহস্পতিবার , ১ অক্টোবর, ২০২০ at ৪:৫৪ পূর্বাহ্ণ

আসামি না হয়েও ঋণ জালিয়াতির মামলায় তিন বছর জেল খাটার ঘটনায় পাটকলকর্মী জাহালমকে ১৫ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে ব্র্যাক ব্যাংককে নির্দেশ দিয়েছে হাই কোর্ট। বিচারপতি এফ আর নাজমুল আহসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের ভার্চুয়াল হাই কোর্ট বেঞ্চ বুধবার এই রায় দেয়। ব্র্যাক ব্যাংককে বলা হয়েছে, রায়ের কপি পাওয়ার এক মাসের মধ্যে জাহালমকে ওই ১৫ লাখ টাকা দিতে হবে। আর টাকা দেওয়ার এক সপ্তাহের মধ্যে সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলের দপ্তরে হলফনামা আকারে বাস্তবায়ন প্রতিবেদন দিতে হবে।

সোনালী ব্যাংকের সাড়ে ১৮ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ২০১২ সালের এপ্রিলে ৩৩টি মামলা করে দুদক। দুদক তদন্ত করে বলে, জালিয়াত চক্র সোনালী ব্যাংকের ক্যান্টনমেন্ট শাখায় আবু সালেকসহ তিনজনের হিসাব থেকে ১০৬টি চেক ইস্যু করে। চেকগুলো ১৮টি ব্যাংকের ১৩টি হিসাবে ক্লিয়ারিংয়ের মাধ্যমে জমা করে ১৮ কোটি ৪৭ লাখ টাকা আত্মসাৎ করা হয়। ওই ১৮টি ব্যাংকের মধ্যে একটি হল ব্র্যাক ব্যাংক। খবর বিডিনিউজের।

কিন্তু তদন্ত কর্মকর্তাদের ভুলে সালেকের বদলে গ্রেপ্তার করা হয় টাঙ্গাইলের জাহালমকে। তাকে ‘আবু সালেক’ হিসেবে শনাক্ত করেছিলেন ব্র্যাক ব্যাংকের দুই কর্মকর্তা। সে কারণে ব্র্যাক ব্যাংককে এই জরিমানা দিতে বলা হয়েছে।

আদালত পর্যবেক্ষণে বলেছে, এ ঘটনায় জাহালমের কোনো দোষ ছিল না। তবু তার জীবনের তিনটি বছর জেলে কাটাতে হয়েছে। এর ফলে তাকে তার পেশা হারাতে হয়েছে। এতে জাহালমের ব্যক্তি জীবন, পারিবারিক জীবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তিনি ক্ষতিপূরণ পাওয়ার দাবি রাখেন। তিনি ক্ষতিপূরণ পাওয়ার অধিকারী। এ ঘটনায় সোনালী ব্যাংক কোনো নথিতে জাহালমের নাম উল্লেখ করেনি বা জাহালমকে শনাক্তও করেনি। ফলে এ ঘটনায় সোনালী ব্যাংকের কোনো দায় খুঁজে পায়নি হাই কোর্ট।

তবে দুদককে হাই কোর্ট সতর্ক করে দিয়ে রায়ের পর্যবেক্ষণে বলেছে, দুর্নীতি দমন কমিশন দেশের একটি সাংবিধানিক, স্বাধীন ও নিরপেক্ষ সংস্থা। দুর্নীতি রোধ করাই তাদের প্রধান কাজ। আদালত প্রত্যাশা করে, দুদকের করা মামলায় এভাবে যেন আর কাউকে জেল খাটতে না হয়। জাহালমের এই ঘটনাই যেন হয় শেষ ঘটনা।

আদালত বলেছে, দুদকের তদন্তকারী কর্মকর্তার ‘অযোগ্যতা, অদক্ষতা, অনভিজ্ঞতা, অবহেলা’ ছিল। এই ধরনের ‘দুর্বল’ কর্মকর্তাদের দিয়ে যেন কোনো তদন্ত করানো না হয়। দুদক আইনের আলোকে জাহালমের ঘটনায় দুদককে দায়ী করা না গেলেও, এ ঘটনায় দুদকের নবীন কর্মকর্তাদের অনভিজ্ঞতা, অদক্ষতা প্রতীয়মান হয়েছে। তবে তাদের অসৎ উদ্দেশ্য ছিল না।

পূর্ববর্তী নিবন্ধকরোনায় ফুসফুসে বিপজ্জনক সংক্রমণ
পরবর্তী নিবন্ধশিশিরে শীতের আবাহন