জাতীয় স্বেচ্ছায় রক্ত ও মরণোত্তর চক্ষুদান দিবস আজ। ১৯৯৫ সালে এ দিনটি রাষ্ট্রীয়ভাবে পালনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। ১৯৯৬ সাল থেকে রাষ্ট্রীয়ভাবে দিনটি উদযাপন করা হয়। দিবসটি উপলক্ষ্যে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় এবং স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠান সন্ধানী কেন্দ্রীয় পরিষদ ও সন্ধানী জাতীয় চক্ষুদান সমিতির যৌথ উদ্যোগে জাতীয় স্বেচ্ছায় রক্তদান ও মরণোত্তর চক্ষুদান দিবস পালিত হবে। এ উপলক্ষে চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্নস্থানে নানা কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নিরাপদ রক্তের গুরুত্ব উপলব্ধি করে ১৯৭২ সালে তৎকালীন পিজি হাসপাতাল, বর্তমান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে রক্ত পরিসঞ্চালন বিভাগ প্রতিষ্ঠা করেন। দেশের অন্ধত্ব সমস্যা সমাধানের জন্য তিনি ১৯৭৫ সালের ১৭ জুলাই ‘দ্যা ব্লাইন্ড রিলিফ (ডোনেশান অব আই) ১৯৭৫’ প্রণয়ন করেন। সন্ধানী মানবতার পথ ধরে হাসপাতালের মুমূর্ষু রোগীর জীবন ফিরিয়ে দিতে ১৯৭৮ সালের ২ নভেম্বর ঢাকা মেডিকেল কলেজে প্রথম স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচির আয়োজন করে বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করে। ১৯৮৪ সালের পর থেকে এ পর্যন্ত তারা প্রায় পাঁচ হাজার কর্ণিয়া সংগ্রহ করেছে এবং প্রতিস্থাপনের মাধ্যমে প্রায় চার হাজার জনকে দৃষ্টিশক্তি ফিরিয়ে দিয়েছে।
বাংলাদেশে বছরে প্রায় ৮-৯ লাখ ব্যাগ রক্তের প্রয়োজন হয় আর সংগৃহীত হয় ৬-৬ দশমিক ৫ লাখ ব্যাগ রক্ত। বছরে প্রায় তিন লাখ ব্যাগ রক্তের ঘাটতি থাকে। সংগৃহীত রক্তের ৩০-৩৫ শতাংশ আসে স্বেচ্ছায় রক্তদাতাদের থেকে।
আমাদের দেশে এখন প্রায় ১৩ লাখ মানুষ অন্ধত্ববরণ করে আছে এবং বছরে প্রায় পাঁচ লাখ মানুষ কর্নিয়াজনিত দৃষ্টি সমস্যায় ভুগছে। বাংলাদেশে ১৯৮৪ সালে ২৫ জুন শ্রীলঙ্কার কর্নিয়া দান কার্যক্রমের পুরোধা ডা. হাডসন ডি সিলভা একজোড়া কর্নিয়া নিয়ে আসেন এবং প্রতিস্থাপন করেন রংপুরের টুনটুনি নামের তরুণীর চোখে। বাংলাদেশে কর্নিয়াজনিত অন্ধত্ব দূর করতে আগামী ১০ বছরে প্রতি বছরে ৩৬ হাজার কর্নিয়া সংগ্রহ করা প্রয়োজন, যা মৃতের মাত্র ২ শতাংশ।