বাংলাদেশে নির্বাচন কীভাবে হবে, সে বিষয়ে জাতিসংঘের কোনো বক্তব্য নেই বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। গতকাল বৃহস্পতিবার জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়ক গোয়েন লুইসের সঙ্গে দেখা করে তার কাছ থেকে এমন প্রতিক্রিয়া পাওয়ার কথা সাংবাদিকদের জানান তিনি। বাংলাদেশে নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে দুই প্রধান রাজনৈতিক শিবিরে দ্বন্দ্বের মধ্যে আসন্ন দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে করার প্রস্তাব তুলেছেন যুক্তরাষ্ট্রের কয়েকজন সংসদ সদস্য।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ফ্রি, ফেয়ার, ইনক্লুসিভ, পিসফুল একটা নির্বাচন বাংলাদেশে হোক, এটাই তারা (জাতিসংঘ) চায়। বিরোধীরা যে শর্তগুলোর কথা বলছে, তা নিয়ে তাদের কোনো বক্তব্য নেই। তারা (জাতিসংঘ) বলেছে, এটা তোমাদের অভ্যন্তরীণ ব্যাপার, এটা নিয়ে আমাদের কোনো সে (বক্তব্য) নেই। তারা (জাতিসংঘ) বলেছে, বাংলাদেশে একটা শান্তিপূর্ণ নির্বাচন দেখলে আমাদের ভালো লাগবে। এ বিষয়টি তারা মূলত বলেছে, বলেন তিনি। খবর বিডিনিউজের।
যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেস সদস্যদের প্রস্তাব বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনেও আলোচিত হচ্ছে। বিএনপি নির্বাচনকালীন নির্দলীয় সরকারের দাবি তুলেছে। অন্যদিকে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ বলছে, সংবিধান অনুযায়ী এই দাবি মেনে নেওয়ার সুযোগ নেই। প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ, সংসদের বিলুপ্তি, নির্দলীয় সরকারের যে দাবি বিরোধীরা তুলেছে, তা নিয়ে কোনো কথা হয়েছে কি না– জানতে চাইলে ওবায়দুল কাদের বলেন, সেসব বিষয়ে জাতিসংঘের কোনো বক্তব্য ও মাথাব্যথা নেই। তারা বলেছে, এসব বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়।
আওয়ামী লীগ একটা প্রতিযোগিতামূলক নির্বাচন চায় বলে জাতিসংঘ প্রতিনিধিকে জানিয়েছেন ক্ষমতাসীন দলের সাধারণ সম্পাদক। তিনি বলেন, সেখানে বিএনপির মতো বড় দল আসুক, সেটাই চাই। কারণ নির্বাচনটা যত প্রতিযোগিতামূলক হবে, তত দেশে–বিদেশে গ্রহণযোগ্য হবে। আমরা আমাদের সেই ইচ্ছেটা বলেছি যে, আমরা একটা প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক নির্বাচন করতে চাই। যেটা দেশে–বিদেশে প্রশংসিত হবে। এটা আমাদের দলের পক্ষ থেকে বলেছি।
তবে বিএনপির নির্বাচনে আনার দায়িত্ব সরকারের নয় মন্তব্য করে কাদের বলেন, অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের জন্য আমরা জোরাজুরি করতে পারি না। নির্বাচনে অংশ নেওয়া রাজনৈতিক দল হিসেবে তাদের (বিএনপি) অধিকার। এটা কোনো দলের জন্য সুযোগ নয়। এটা কারও দয়ার দান নয়। তারা বাংলাদেশের বড় দল হিসাবে এটা তাদের নৈতিক অধিকার। সেটা তারা প্রয়োগ করবে। এটা আমরা আশা করি।
আওয়ামী লীগের একটি প্রতিনিধি দল নিয়ে বিকাল সাড়ে ৪টায় গুলশানে গোয়েন লুইসের আবাসিক বাসভবনে যান কাদের। প্রতিনিধি দলে ছিলেন দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মুহাম্মদ ফারুক খান, আন্তর্জাতিক সম্পাদক শাম্মী আহমেদ, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক সেলিম মাহমুদ এবং কার্যনির্বাহী সদস্য মোহাম্মদ আলী আরাফাত।