জলাবদ্ধতা নিয়ে সমন্বয়ের তাগিদ

সিডিএ ও চসিকের প্রতিনিধিদের নিয়ে এক টেবিলে তথ্যমন্ত্রী সময়মতো সিন্ধান্ত গ্রহন করে সেটির বাস্তবায়ন করতে হয় তা না হলে জনগনের দুর্ভোগ হয়

আজাদী প্রতিবেদন | শনিবার , ১২ আগস্ট, ২০২৩ at ৬:৩২ পূর্বাহ্ণ

নগরীতে ভয়াবহ জলাবদ্ধতা নিয়ে সিডিএচসিক একে অপরকে দোষারোপের দুদিনের মাথায় সেবা সংস্থা দুটির প্রধান প্রকৌশলী ও প্রধান নির্বাহীকে নিয়ে এক টেবিলে বসলেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। তিনি সংস্থা দুটির প্রতিনিধিদের চট্টগ্রামে জলাবদ্ধতা নিরসনে সমন্বয় করে কাজ করার তাগিদ দেন।

গতকাল শুক্রবার রাত ৮টায় চট্টগ্রামের জলাবদ্ধতা প্রকল্পসহ বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প নিয়ে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন এই সমন্বয় সভার আয়োজন করে। বিভাগীয় কমিশনার তোফায়েল ইসলামের সভাপতিত্বে ও জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামানের সঞ্চালনায় চট্টগ্রাম সার্কিট হাউস সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত এই সমন্বয় সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ এমপি। সমন্বয় সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল। সভায় চট্টগ্রাম জলাবদ্ধতা প্রকল্পের পরিচালক লে. কর্নেল শাহ আলী, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী শেখ তৌহিদুল ইসলাম, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের ভারপ্রাপ্ত প্রধান প্রকৌশলী হাবিবুর রহমান, চট্টগ্রাম ওয়াসার প্রধান প্রকৌশলী মাকসুদ আলম, সড়ক ও জনপথের নির্বাহী প্রকৌশলীসহ পানি উন্নয়ন বোর্ড, এলজিইডি এবং চট্টগ্রাম বন্দরসহ সরকারের বিভিন্ন দপ্তরের প্রধান ও প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

অন্যান্যের মধ্যে চট্টগ্রাম৮ আসনের এমপি নোমান আল মাহমুদ, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এটিএম পেয়ারুল ইসলাম, চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাবেক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন, চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার কৃষ্ণ পদ রায়, চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি নুরে আলম মিনা, পুলিশ সুপার এ কে এম শফিউল্লাহ সমন্বয় সভায় উপস্থিত ছিলেন।

সভায় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ সিডিএ এবং সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী এবং প্রধান প্রকৌশলীদের চট্টগ্রামের জলাবদ্ধতা নিরসনে সমন্বয় করে কাজ করার আহ্বান জানান। এ সময় তিনি অন্য সেবা সংস্থার প্রধানদের উদ্দেশে বলেন, প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা চট্টগ্রামের উন্নয়নের জন্য যেসব প্রকল্প গ্রহণ করেছেন অন্য কেউ তা করেননি। চট্টগ্রামের জলাবদ্ধতা নিরসনসহ সব উন্নয়ন প্রকল্পের সুফল যেন জনগণ পায় সেজন্য সবাইকে সমন্বয় করে কাজ করতে হবে।

তিনি বলেন, আশাতীতভাবে অনেক কিছু বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা চট্টগ্রামের জন্য করেছেন। কিন্তু এটির সুফল জনগণকে পেতে হবে। জনগণ সুফল পেতে হলে যেকোনো কাজ সুচারুভাবে করতে হয় এবং জনগণের বিরক্তির উদ্রেক যাতে না হয় সেভাবে সময়মতো সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে সেটির বাস্তবায়ন করতে হয়। সেটি না হলে অর্থ ও সময়ের অপচয় হয় এবং জনগণের দুর্ভোগ সৃষ্টি হয়। গত সপ্তাহের প্রচণ্ড বৃষ্টিতে চট্টগ্রাম শহরের প্রায় ৪০ শতাংশ এলাকা পানিতে তলিয়ে গিয়েছিল এবং মানুষের ব্যাপক দুর্ভোগের সৃষ্টি হয়েছে। সেটি নিয়ে বিভিন্ন সংস্থার মধ্যে বাদানুবাদও হয়েছে। এটি আসলে আমাদের সবার সম্মিলিত দায়িত্ব। সবাইকে আন্তরিকতার সাথে সমন্বয়ের ভিত্তিতে কাজ করতে হবে। যাতে জনগণ সুফল পায়। জনগণ উপকৃত হয়।

তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী বলেন, জলাবদ্ধতা নিরসনের জন্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ), সিটি করপোরেশন, পানি উন্নয়ন বোর্ডেরও প্রকল্প আছে। এত বড় প্রকল্প, এত মূল্যমানের প্রকল্প, এটির জন্য ভবিষ্যতে তো আবার এই পরিমাণ টাকা বরাদ্দ দেয়া সম্ভবপর হবে না। কেন আমরা সুফল পাচ্ছি না, কোথায় সমস্যা, কোথায় সমন্বয়ের অভাব সেগুলো আলোচনা করার জন্যই আমরা সবাই মিলে এখানে বসেছি।

নগরীতে গত ৩ আগস্ট থেকে ৯ আগস্ট পর্যন্ত সপ্তাহব্যাপী ভারী বর্ষণ এবং জোয়ারে নগরীতে ভয়াবহ জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। এই নিয়ে সিডিএ এবং সিটি করপোরেশন একে অপরকে দোষারোপ করে। এই দুই সংস্থাসহ অন্যান্য সেবা সংস্থাগুলোও যাতে সমন্বয়ের মাধ্যমে এক সাথে কাজ করে সেই ব্যাপারে তিনি সকলের প্রতি আহ্বান জানান।

পূর্ববর্তী নিবন্ধচ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় যিনি ছিলেন দৃঢ়
পরবর্তী নিবন্ধআখাউড়ায় রেলসেতু পার হতে গিয়ে প্রাণ গেল ৪ জনের