তার দিন ভালো কাটছিল না। একা একা দর্শনার্থীদের আনন্দ দেওয়ার জন্য বিশাল শরীর নিয়ে নানা কসরত করলেও অন্তরে সঙ্গীর জন্য হাহাকার ছিল। কখনো পানিতে ডুব দিয়ে, কখনো হুস হাস করে, আবার কখনো পানির ভিতরে গড়াগড়ি কিংবা গা উলট পালট করে সময় কাটছিল চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানায় প্রথমবার আসা জলহস্তী লালপাহাড়ের।
পশু বিনিময় চুক্তির আওতায় রংপুর চিড়িয়াখানা থেকে চট্টগ্রামে আসার পর প্রায় এক মাস সঙ্গীহীন কাটে লালপাহাড় নামে পুরুষ জলহস্তীটির। অবশেষে বিরহের অবসান ঘটেছে। গতকাল সে সঙ্গী পেয়েছে। ঢাকা জাতীয় চিড়িয়াখানা থেকে ‘জলপরি’ নামে একটি নারী জলহস্তী এনে লালপাহাড়ের সাথে পানির ফোয়ারায় ছাড়া হয়েছে।
প্রাণী বিনিময় চুক্তির আওতায় চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানা থেকে দুই বছর বয়সী দুটি বাঘ রংপুর চিড়িয়াখানায় হস্তান্তরের মাধ্যমে ঢাকা চিড়িয়াখানা থেকে দশ বছর বয়সী দুটি জলহস্তী আনার উদ্যোগ নেয় চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানা। বাঘ দুটি রংপুর চিড়িয়াখানায় পৌঁছে দেওয়ার পর গত ২১ সেপ্টেম্বর ঢাকা চিড়িয়াখানা থেকে লালপাহাড় নামে একটি জলহস্তী আনা হয় চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানায়। চিড়িয়াখানায় আগে যেখানে কুমির থাকত সেই জলাধারে ছাড়া হয় লালপাহাড়কে। গতকাল ভোরে ঢাকা চিড়িয়াখানা থেকে তার সঙ্গী জলপরিকে আনা হয়।
চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানার কিউরেটর ডা. শাহাদাৎ হোসেন শুভ আজাদীকে জানান, ভোরে জলহস্তীটি চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানায় এসে পৌঁছেছে। এখন দুটি জলহস্তীকে একসাথে রাখা হয়েছে। তিনি জানান, জলহস্তী স্তন্যপায়ী তৃণভোজী প্রাণী। একটি প্রাপ্তবয়স্ক জলহস্তীর ওজন গড়ে ১ থেকে দেড় টন। জলহস্তী ঘাস, পাতা ও বিভিন্ন ধরনের ফলমূল খেয়ে জীবনধারণ করে। একটি জলহস্তী ৩০ থেকে ৪০ বছর বেঁচে থাকে।
চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানায় দুটি জলহস্তীসহ বর্তমানে প্রাণীর সংখ্যা ৫২০টি। মোট ৬৯ প্রজাতির পশুপাখি রয়েছে। এর মধ্যে ৩০ প্রজাতির স্তন্যপায়ী, ৩৪ প্রজাতির পাখি ও চার প্রজাতির সরীসৃপ আছে।