ছোলা, খেজুর ও কিসমিস খালাসে জটিলতা

বাধ্যতামূলক করা হয় বিসিএসআইআর থেকে পণ্যের মান পরীক্ষা অর্থ ও সময়ক্ষেপণের অভিযোগ ব্যবসায়ীদের

জাহেদুল কবির | মঙ্গলবার , ৪ এপ্রিল, ২০২৩ at ৪:৪৬ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রাম বন্দর থেকে রমজানের অত্যাবশকীয় পণ্য ছোলা, খেঁজুর ও কিসমিস পণ্য খালাসে জটিলতা দেখা দিয়েছে। কাস্টমস কর্মকর্তারা বলছেন, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের আমদানি নীতি আদেশ (২০২১২০২৪) অনুযায়ী যেসব পণ্য বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস এন্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশন (বিএসটিআই) থেকে মান পরীক্ষা হয় না, সেগুলো বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা পরিষদে (বিসিএসআইআর) বাধ্যতামূলক পরীক্ষা করতে হবে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আমদানি নীতি আদেশ গত ২০২১ সালে নতুন করে জারি করা হলেও বিগত দুই বছর ধরে সেই আদেশ মানা হয়নি। এমনকি আমদানিকারকরাও বিষয়টি জানতেন না। ফলে বিসিএসআইআর থেকে পরীক্ষণ নিয়ে একটা ধোঁয়াশার সৃষ্টি হয়। চলতি বছর থেকে আদেশটি প্রতিপালন করা হচ্ছে। তবে ছোলার ক্ষেত্রে ল্যাব পরীক্ষায় পাঠানোর আগে অঙ্গীকারনামা নিয়ে পণ্য আমদানিকারকের জিম্মায় খালাস দেয়া হচ্ছে। পরীক্ষার চূড়ান্ত রিপোর্ট আসার পর আমদানিকারক কাস্টমসে অনুমতি নিয়ে পণ্য বাজারজাত করতে পারছেন। অপরদিকে খেঁজুরের ক্ষেত্রে হঠাৎ শুল্কায়নের ভ্যালু বৃদ্ধির কারণে আমদানিকারকরা বিল অব এন্ট্রি দাখিল বন্ধ রেখেছেন।

এদিকে খেঁজুর ছাড়াও কিসমিসের ক্ষেত্রেও বন্ধ রয়েছে শুল্কায়ন কার্যক্রম। আমদানিরপ্তানি সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ছোলা অঙ্গীকারনামা নিয়ে খালাস করতে পারলেও খেঁজুর ও কিসমিসের ক্ষেত্রে সেটি প্রযোজ্য হচ্ছে না। ল্যাবের পরীক্ষণ কার্যক্রম সম্পন্ন করতে ১৫ দিনের মতো সময় লাগছে। এছাড়া প্রতিটি রিপোর্টের আমদানিকারকের ২০ হাজার টাকা করে খরচ হচ্ছে। এতে সময় ও অর্থ দুটোরই অপচয় হচ্ছে।

চট্টগ্রাম কাস্টমস এজেন্ট এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক কাজী মাহমুদ ইমাম বিলু দৈনিক আজাদীকে বলেন, কম দামী খেঁজুরের কেজিপ্রতি শুল্কায়ন ভ্যালু ছিল ৫০ সেন্ট এবং বেশি দামের ক্ষেত্রে শুল্কায়ন ভ্যালু ছিল ১ ডলার। চট্টগ্রাম কাস্টমস কর্তৃপক্ষ খেঁজুরের বাজার যাচাই করে যথাক্রমে ১ ডলার ও আড়াই ডলার নির্ধারণ করে। এরপ্রেক্ষিতে আমদানিকারকরা খেঁজুরের বিল অব এন্ট্রি দাখিল বন্ধ রাখেন। এছাড়া বিসিএসআইআরের পরীক্ষার ঝক্কি তো আছেই।

এ বিষয়ে চট্টগ্রাম কাস্টমস এজেন্ট এসোসিয়েশনের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানি রিগ্যান বলেন, ভ্যালু বাড়ানোর বিষয়ে আমরা চট্টগ্রাম কাস্টমসের কমিশনারের মহোদয়ের সাথে কথা বলেছি। তিনি আমাদের জানিয়েছেনজাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) উর্ধ্বতন কর্মকর্তার মৌখিকভাবে নির্দেশনা পেয়ে খেঁজুরের বাজার যাছাই করে ভ্যালু বাড়ানো হয়। সেই মতে, তিনি সংশ্লিষ্ট শুল্কায়ন শাখায় নির্দেশনা দেন। আমাদের কথা হলোএনবিআর থেকে মৌখিক নির্দেশনায় কেন ভ্যালু বাড়ার সিদ্ধান্ত হবে।

জানতে চাইলে চট্টগ্রাম কাস্টমসের উপকমিশনার ব্যারিস্টার বদরুজ্জামান মুন্সী দৈনিক আজাদীকে বলেন, খেঁজুর কিংবা কিসমিসের শুল্কায়ন কার্যক্রম বন্ধ নেই। তবে খেঁজুরের ভ্যালু নিয়ে একটু সমস্যা হয়েছে। তাই আমরা বাজার যাচাই করে নতুন ভ্যালু নির্ধারণ করেছি। কারণ আমদানিকারক কাগজে যে ভ্যালু উল্লেখ করেছেন, সেটি বাজারমূল্যের তুলনায় অনেক কম। আমদানিকারকরা প্রথমদিন আমাদের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় শুল্কায়ন করেননি। এছাড়া খেঁজুর, ছোলা ও কিসমিসের ক্ষেত্রে আমদানি নীতি আদেশ মতে, বিসিএসআইআর থেকে পরীক্ষা করতে হবে। এটি আমদানি নীতি আদেশে আছে। এখানে কাস্টমসের কিছু করার নাই। এটি ঠিকবিগত বছরগুলোতে আদেশটি সেভাবে দেখা হয়নি। আমরা এখন আইনের বাইরে কিছুই করছি না।

পূর্ববর্তী নিবন্ধদেশি বোরকাকে মেইড ইন দুবাই লাগিয়ে বিক্রি
পরবর্তী নিবন্ধসব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় মিলে এক পরীক্ষা