ছোট ভাইকে পিটিয়ে হত্যা করল বড় ভাই ও তার পরিবার

ঘরে মুরগির বাচ্চা ঢোকা নিয়ে সংঘর্ষ

চকরিয়া প্রতিনিধি | বুধবার , ২৩ আগস্ট, ২০২৩ at ৫:৫৩ পূর্বাহ্ণ

মাঝামাঝি একটি উঠান। তার দুই পাশে দুই ভাইয়ের দুইটি ঘর। তবে তাদের মধ্যে সম্পর্ক ভালো ছিল না। তুচ্ছ বিষয় নিয়ে বৃদ্ধ নাজেম উদ্দিনের দুই পুত্রের পরিবারের মধ্যে ঝগড়াঝাটি লেগেই থাকতো সারাবছর। গতকাল মঙ্গলবার সকালে ছোট ভাই গিয়াস উদ্দিন লেদুর পালিত একটি মুরগীর বাচ্চা বাড়িতে ঢুকে পড়লে সেটিকে ধরে হত্যা করে বড় ভাই শাহাব উদ্দিন প্রকাশ সাইফুদ্দিন। মুরগীর বাচ্চাটিকে কেন হত্যা করা হলো তা সেটি জানতে চাওয়াটাই কাল হয়েছে ছোট ভাইয়ের। তর্কাতর্কির এক পর্যায়ে বড় ভাই তার স্ত্রী ও সন্তানদের নিয়ে সদলবলে এসে বাড়ির উঠানেই লাঠি দিয়ে পিটিয়ে হত্যা করে ছোট ভাই গিয়াস উদ্দিন লেদুকে। গতকাল মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি ঘটেছে চকরিয়া পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের পশ্চিম করাইয়াঘোনা গ্রামে।

পুলিশ জানিয়েছে, মুরগীর বাচ্চা ঘরে ঢোকা, এরপর সেটিকে মেরে ফেলার পর সৃষ্ট সংঘর্ষের সময় হত্যাকাণ্ডে জড়িত তিনজনকে পুলিশ গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়েছে। তারা হলেনশাহাব উদ্দিন প্রকাশ সাইফুদ্দিন (৫০), তার দুই ছেলে সাজ্জাদ হোসেন (২৭) ও সাঈদী হোসেন (২৫)। হত্যাকাণ্ডের পর তারা গণপিটুনির শিকার হয়। চকরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেঙে পুলিশি পাহারায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন তারা।

স্থানীয়রা জানান, একটি মুরগীর বাচ্চা বড় ভাইয়ের বাড়িতে ঢুকে পড়লে সেই মুরগীর বাচ্চাকে ঘিরে সংঘর্ষে রূপ নেয়। তাতে লাঠির আঘাতে প্রাণ হারান ছোট ভাই গিয়াস উদ্দিন লেদু (৪৫)। এ সময় আহত হন গিয়াসের দুই পুত্র মোহাম্মদ নোমান (১৭) ও আবু সাঈদ (১৫)। তারাও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

আহত আবু সাঈদ জানায়, তাদেরই পালিত একটি মুরগীর বাচ্চা বড় চাচা সাইফুদ্দিনের বাড়িতে ঢুকে পড়লে সেটিকে ধরে হত্যা করে। কেন মুরগীর বাচ্চাটিকে হত্যা করা হলো তা জানতে চাওয়া মাত্রই চাচা, চাচি, চাচাতো ভাইয়েরা মিলে আমাদের ওপর হামলে পড়ে। এ সময় উপর্যুপরি লাঠির আঘাতে বাবা প্রাণ হারান।

এ ব্যাপারে চকরিয়া সার্কেলের জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ সুপার মো. রকীব উররাজা দৈনিক আজাদীকে বলেন, তুচ্ছ বিষয় নিয়ে দুই ভাই ও পরিবার সদস্যদের মধ্যে তুমুল ঝগড়া পরবর্তী সংঘর্ষের সময় লাঠির আঘাতে প্রাণ হারান গিয়াস উদ্দিন লেদু। এই ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তারা পুলিশ হেফাজতে রয়েছে এবং চিকিৎসা চলছে।

থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাবেদ মাহমুদ বলেন, ঘটনার খবর পাওয়া মাত্রই পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। নিহত লেদুর মরদেহের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি শেষে ময়নাতদন্তের জন্য কঙবাজার সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। এই ঘটনায় পরিবারের পক্ষ থেকে লিখিত অভিযোগ প্রাপ্তিসাপেক্ষে মামলা রুজুসহ পরবর্তী আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধউচ্ছেদের ১৭ মাস পর সবকিছু আবার আগের মতো
পরবর্তী নিবন্ধ১৫ হাজার কোটি টাকার রেকর্ড আয় বাংলাদেশ ব্যাংকের