দক্ষিণ চট্টগ্রামে পশুর হাটের জন্য সরকার হাটের পরিচিতি বেশ পুরনো। কোরবানের বাকী বেশিদিন নেই। তার আগে গতকাল শুক্রবার ছুটির দিনে গরুর হাট হয়ে উঠে জমজমাট। পশুর যোগান যেমন পর্যাপ্ত ছিল, একইসাথে স্থানীয় ও শহুরে ক্রেতাদের ভিড়ে হাটের বিস্তৃতি ঘটে ৩ কিলোমিটার পর্যন্ত। ক্রেতাদের একটি অংশ দরদাম ও দাম যাচাইয়ে ব্যস্ত থাকলে বেচাকেনাও ছিল বেশ।
ক্রেতা–বিক্রেতাদের চাহিদার কথা বিবেচনা করে সরকার হাটে এখন সপ্তাহের বাজারবার শুক্রবার ও সোমবার ছাড়াও প্রতিদিন ভোর সকাল থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত কোরবানির পশু বেচাকেনা চলছে। গবাদি পশু বেচাকেনার সুবিধার্থে বাজার পরিচালনা কমিটি সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করেছেন বলে জানান, বাজার পরিচালনা কমিটির অন্যতম সদস্য ক্যাপ্টেন নুর মোহাম্মদ। তিনি আরো জানান, বাজার পরিচালনা কমিটির উদ্যোগে ক্রেতা বিক্রেতাদের জন্য বাজারে রয়েছে পেন্ডেল, লাইটিং ও সার্বক্ষণিক বিদ্যুৎ ও গাড়ি পার্কিং সুবিধা। যানজট মুক্ত ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে রয়েছে আনসার, গ্রাম পুলিশ ও স্বেচ্ছাসেবক দল। তাছাড়া বাজারের পাশে ব্যাংকিং সুবিধা থাকায় লেনদেনে বাড়তি ঝুঁকি নেই। এক কথায় কোনো প্রকার হয়রানি ছাড়াই এ হাটে গবাদি পশু বিক্রি হচ্ছে যার ফলে সরকার হাট বৃহত্তর চট্টগ্রামে জনপ্রিয়। সরেজমিনে গতকাল সরকার হাট ঘুরে দেখা যায়, বাজারে হাজার হাজার দেশি গরু, মহিষ ও ছাগলের জমজমাট বাজার। ছোট, মাঝারি ও বড় সাইজ সহ সব ধরনের গরু মহিষের বেচা–কেনার ধুম লক্ষ্য করা গেছে। গতকাল শুক্রবার হওয়ায় চট্টগ্রাম শহর ও অন্যান্য উপজেলা ধেকে সরকারি চাকরিজীবী ও ব্যবসায়ীদের এ হাটে ভিড় লক্ষ্য করা গেছে বেশি।
দুই –আড়াই –তিন মণ ওজনের গরু ৭০ হাজার থেকে এক লক্ষ টাকার মধ্যে বিক্রি হচ্ছে বলে জানায় বাজারের গরু ব্যবসায়ী ফজলুল কাদের। আনোয়ারা উপজেলা ডেইরি ফার্ম এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান জানান বাজারে গো খাদ্য, শ্রমিক ও সব কিছুর দাম তুলনা মূলক বেশি হওয়ায় গবাদি পশুর খামারিরা বিপাকে। বর্তমানে লোকশানের কারনে অনেক খামার বন্ধ হয়ে গেছে। যার কারণে গত বছরের তুলনায় এ বছর ছোট ও বড় গরুর দাম একটু বেশি। বাজারের ইজারাদার জয়নাল আবেদীন হেলাল জানায়,গবাদি পশু বেচাকেনায় গত দেড় দশকের বেশি সময় ধরে সরকার হাট পশু বাজারে পরিচিতি চট্টগ্রাম ছাড়াও দেশের বিভিন্ন জেলায় ব্যাপক পরিচিতি রয়েছে। বর্তমানে সরকার হাট এ অঞ্চলে দেশি গবাদি পশু বেচাকেনা আর সরকারি রাজস্ব আদায়ে রেকর্ড সৃষ্টি করেছে। সরকার হাটকে কেন্দ্র করে পুরো দক্ষিণ চট্টগ্রামে শত শত খামারী তাদের নিজস্ব ফার্মে উন্নত জাতের গবাদি পশু উৎপাদন করছে। সরকার হাটকে ঘিরে হাজার হাজার মানুষের জীবন জীবিকা চলছে। বর্তমানে এ হাটে রাজশাহী,রংপুর, বরিশাল, কুষ্টিয়া, সিরাজগঞ্জ, খুলনা, জামালপুর ভোলা, পাবনাসহ সব জেলা থেকে ব্যবসায়ীরা গবাদি পশু এনে বিক্রি করেন। যার কারণে দূর দুরান্ত থেকে এসে ক্রেতা তাদের পছন্দের গবাদি পশু কিনে থাকেন।