ছিল না তিল ধারণের ঠাঁই

গণশুনানি

আজাদী প্রতিবেদন | বৃহস্পতিবার , ৪ আগস্ট, ২০২২ at ৬:২৮ পূর্বাহ্ণ

সরকারি দপ্তরের অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ শুনতে গণশুনানির আয়োজন করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গতকাল বুধবার চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের শাহ বীর উত্তম মিলনায়তনে এ শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। শুনানি উপলক্ষে মহানগরের ৮০টির বেশি সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তা-প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন মিলনায়তনে। এছাড়া অভিযোগকারীর পাশাপাশি উৎসুক মানুষও ছিলেন। গণমাধ্যম কর্মীরা তো ছিলেনই। সবমিলিয়ে দেড় হাজারের বেশি লোকসমাগম হয় শুনানিস্থলে। যদিও মিলনায়তনটির ধারণক্ষমতা ছিল এক হাজার। লোকসমাগম বেশি হওয়ায় তিল ধারণের ঠাঁই ছিলনা কোথাও। উল্লেখযোগ্যসংখ্যক মানুষ বসার সুযোগ পাননি।

দাঁড়ানোর জায়গাও পাননি অনেকে। পরে আসা অনেকে মিলনায়তনেই প্রবেশ করতে পারেন নি। মিলনায়তনের অভ্যন্তরে সরকারি দপ্তরগুলোর উচ্চপদস্থ অনেক কর্মকর্তাও বসার জায়গা খুঁজে পাননি। গণমাধ্যম কর্মীদের জন্যও বসার কোনো ব্যবস্থা ছিলনা। এতে করে বসার সুযোগ পাওয়া লোকজনকেও পড়তে হয়েছে বিড়ম্বনায়। বিশেষ করে টিভি ক্যামেরা নিয়ে দর্শক সারির সামনেই অবস্থান নেন ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ার অনেক সংবাদকর্মী। এজন্য দর্শকসারির অনেকেই মঞ্চের মুখ দেখেন নি। ধারণ ক্ষমতার বেশি মানুষ হওয়ায় গরমেও কাহিল অবস্থায় পড়তে হয়েছে লোকজনকে। দশটা থেকে শুরু হয়ে টানা ৫ ঘন্টারও বেশি সময় এ শুনানি চলে। এর বেশির ভাগ সময়জুড়ে ঠাঁই দাঁড়িয়েই দায়িত্ব পালন করতে হয়েছে গণমাধ্যম কর্মীদের। সবমিলিয়ে গণশুনানির আয়োজনে অব্যবস্থাপনার চিহ্নই ছিল মিলনায়তনজুড়ে। এ নিয়ে সরকারি দপ্তরের ঊর্ধ্বতন অনেক কর্মকর্তা ও গণমাধ্যম কর্মীরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। ভবিষ্যতে এ ধরনের আয়োজনে দুদককে আরো বেশি ‘দায়িত্ববান’ হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তারা।

সরকারি দপ্তরগুলোর মধ্যে অভিযোগ আসা অন্যতম প্রতিষ্ঠান চট্টগ্রাম সিটিকর্পোরেশন (চসিক)। শুনানিকালীন সংশ্লিষ্ট দপ্তরের দায়িত্ববান কর্মকর্তাদের ডায়াসে উঠে অভিযোগের জবাব দেয়ার নিয়ম ছিল। প্রথম কয়েকটি অভিযোগের বিষয়ে চসিকের হিসাব শাখা, রাজস্ব শাখার সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা ডায়াসে এসে অভিযোগের জবাব দেন। তবে পরবর্তীতে অভিযোগের জবাব দিতে সংশ্লিষ্ট শাখার কর্মকর্তাদের মিলনায়তনে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। এদিকে বিলম্ব করারও সুযোগ ছিলনা। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাকে ডায়াসে আসতে বারবার তাগিদ দিচ্ছিলেন শুনানি পরিচালনাকারী দুদকের মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) এ কে এম সোহেল। তিনি প্রতিষ্ঠান প্রধান হিসেবে চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. শহীদুল আলমের দৃষ্টি আর্কষণ করে যাচ্ছিলেন।

সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাকে না দেখে চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাকেই ডায়াসে এসে জবাব দিতে বলেন দুদক মহাপরিচালক। একাধিকবার মহাপরিচালক একথা বলেন। পরে বাধ্য হয়ে চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাকে ডায়াসে উঠতে হয়। তবে অভিযোগের জবাব দিতে গিয়ে শুরুতে নিজেকে সরকারের একজন অতিরিক্ত সচিব হিসেবে পরিচয় দেন তিনি। সংশ্লিষ্ট শাখা প্রধান বা প্রতিনিধি উপস্থিত না থাকায় একাধিক অভিযোগের জবাব দিতে হয় চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাকে। ওই সময় অতিথি মঞ্চে বসা ছিলেন উপসচিব পদমর্যাদার জেলা প্রশাসক এবং অতিরিক্ত সচিব পদ মর্যাদার বিভাগীয় কমিশনার। জেলা প্রশাসক শুনানিতে সভাপতিত্ব করছিলেন।

প্রসঙ্গত, শুনানিতে চট্টগ্রাম মহানগরের ৮৩টি সরকারি দপ্তর অংশগ্রহণ করে। এসব দপ্তরের বিপরীতে প্রায় দুইশ অভিযোগ আসে দুদকের কাছে। তবে প্রাপ্ত অভিযোগগুলোর মধ্য থেকে যাচাই-বাছাই করে ৪৭টি অভিযোগ শুনানির জন্য নির্বাচিত করা হয়।

পূর্ববর্তী নিবন্ধঅবশেষে নতুন প্রি-পেইড মিটার পাচ্ছে ১ লাখ গ্রাহক
পরবর্তী নিবন্ধবঙ্গবন্ধুর বাগ্মিতা