শেষ পর্ব
৬.
মনে পড়ে, ছেলেবেলায় ঝড় উঠলেই আমাকে কেউ বাড়িতে আটকে রাখতে পারত না। ঝড়ো হাওয়া উত্তাল হয়ে আমাদের মাটির বাড়ির কাঠের জানালাগুলোকে চড় কষাত। শোঁ শোঁ শব্দে সেই হাওয়া সেসব জানালার ফাঁক গ’লে ঘরে ঢুকে রাগ ঝাড়তে থাকত। আমার বোনদুটো ঝড়ের ধুলো আর আসন্ন বৃষ্টিতে ঘর ভিজে যাবার ভয়ে উতলা হয়ে সেসব জানালা লাগাতে ব্যস্ত হয়ে পড়ত। আকাশ তখন আমার মায়ের রান্না শেষের পোড়া কাঠের কয়লার মত কালো। তাতে তেলকুপির সরু আগুনের শিখার মত ঝকঝকে আঁকিবুকি, হুঙ্কার। সেই আকাশজোড়া কালো জমিনে কোথা থেকে ঘরে ফিরতে চাওয়া ধবধবে দুটো সাদা বক বাতাসের ধাক্কা খেয়ে খেয়ে দূরে মিলিয়ে যেত। আমি আর একমুহূর্ত থাকতাম না ঘরে। দৌড়ে বাড়ির পাশের ঐ আমবাগানে ছুটে যেতাম। বড়বোন পেছন থেকে দরজা পর্যন্ত আমাকে ঝড়ে বাইরে যেতে নিষেধ ক’রে, এরপর বাবার মারের ভয় দেখিয়ে ব্যর্থ হয়ে ফিরে যেত। আমার দৌড়ের সাথে পাল্লা দিয়ে ধরতে পারত না সে আমায়।
বাড়ির পাশের ঐ আম বাগানটা আসলে একটা কবরস্থান। বাগানের চারপাশটা ফাঁকা ছিল, তাই ভেতরে যেতে কোনো বাধা ছিলনা। সেখানে বড় বড় আম গাছ। আমি ছাড়াও পাড়ার অনেকে ততক্ষণে সেখানে জুটে গেছে। প্রথমেই একটা ভাল আমভর্তি গাছ বেছে নিয়ে তার নিচে দাঁড়াতে পারলে ঐসব আম কুড়ানো প্রতিদ্বন্দ্বীদের থেকে বেশ অনেকটা এগিয়ে থাকা যায়। কিন্তু বাড়ির নিষেধের বেড়াজাল ভেঙ্গে দৌড়ে এখানে আসতে আসতে বেশিরভাগ ঝড়েই আমার তেমন কোনো মোক্ষম গাছের নিচে দাঁড়ানো হত না। তবু ঝড়ের তোড়ে ঝুপঝাপ পড়া আম থেকে কম কিছু পেতাম না আমি। কতবার গাছ থেকে বড় একটা আম পড়েছে নিচের কবরের গর্তে। সেই আম নিতে গিয়ে ঝড়ের আবছা আঁধারেও দেখেছি– একটা কঙ্কালের পাঁজরের ভাঙা হাড়ের ঠিক যেখানটায় একদিন হৃদপিন্ড ধুকধুক করত, তার নিচের মাটিতে গাঢ সবুজ আমটা চুপচাপ থির হয়ে আছে। কবরে উপুড় হয়ে ঐ পাজরের হাড়ের মধ্য দিয়ে হাত ঢুকিয়ে আমটা বের করে আনতে আমার একটুও বাঁধত না। শুধু আমি কেন, আম কুড়ানোর দলের প্রায় সবাই তেমন করেই আম কুড়াত। কবরস্থানটা একইসাথে এত কাছের একটা আমবাগান হবার জন্য, আর এর চারপাশে কোন পাঁচিল না থাকার জন্য মৃত্যু, কবর, ক’মাস গেলে লাশের মাংস গ’লে ভাঙা কবরের ফাঁক দিয়ে উকি দেয়া নতুন কঙ্কাল আমার মতই আমাদের পাড়ার ছেলে–মেয়েদের কাছে প্রতিদিনের মায়ের চেনা রান্নার স্বাদের মতই সহজ, স্বাভাবিক ছিল। অন্তত দিনের বেলা তো বটেই। স্কুলের বন্ধুরা কবরস্থানের পাশে বাড়ি শুনলে যেখানে ভীত চোখে তাকাত, সেখানে আমার তেমন কিছু মনেই হতনা।
কবরস্থানের একদিকে একটা বেশ বড় জায়গা উঁচু পাঁচিল দিয়ে ঘেরা ছিল। পুরো জায়গাটা যাদের দান করা তাদের পারিবারিক কবরস্থান ওটা। ওর ভেতর কেউ বসে থাকলে পাঁচিলের ভাঙ্গা দরজা দিয়ে ভেতরে না এলে কারও পক্ষে বোঝা সম্ভব নয় সেটা। গ্রীষ্মের কত স্তব্ধ দুপুরে আমি ঐ পাঁচিলের মধ্যে ঢুকে আশপাশের কবরের এককোনে সমতল একটা জায়গা খুঁজে বসে পাঁচিলে হেলান দিয়ে গোয়েন্দা গল্প পড়েছি। সেসব গল্পের নায়ক পৃথিবীর কত শহরে, নগরে ঘুরে বেড়ায়– কায়রো, ইস্তাম্বুল, ব্রাসেলস, বুয়েন্স আয়ের্স– আরও কতসব শহরকে সেসব বই থেকেই চিনেছিলাম প্রথম। ঐ শুনশান দুপুরগুলোয় সেই পাঁচিলঘেরা কবরস্থানের নির্জনতায় বসে গল্পের নায়কের সাথে আমিও ঘুরে বেড়াতাম ওসব শহরে, বন্দরে। আমার জাহাজ ফারাও খুফুর পিরামিডকে দূরে ফেলে গোধূলির গোলাপি আলোয় সুয়েজ খাল অতিক্রম করত। কখনও আবার অতিমানবিক নির্লিপ্ততায় কঠিন দায়িত্বপালন শেষে লাস্যময়ী ‘সোহানা’কে পাশে নিয়ে গল্পের নায়কের সাথে আমিও ব্রাসেলসের কোলাহলমুখর রাস্তায়, বিকেলের অবসরে, কোনো ভিখিরি বেহালাবাদকের বেহালার করুণ আর্তি শুনতাম।
সেদিনের সেইসব শহরে আমার কোনোদিন যাওয়া হয়নি। পরিব্রাজকের মত বন্ধনহীনভাবে পৃথিবীকে দেখা হয়নি। কতসব দেশ, জাতি, শহর, গ্রাম, পথ দেখা হলনা! একসময় বোকার মত স্বপ্ন দেখেছিলাম– খুব কাছের একজনকে পাশে বসিয়ে কোন এক নিরিবিলি বিকেলে ইনকাদের মেঘে ঢাকা ‘মাচ্চু–পিচ্চু’র সবুজ পাহাড়ি বাঁকে, প্যানফ্লুটের অতীতচারী সুরে জীবনকে সত্যি ক‘রে ভালবাসব। প্রেরণা খুঁজব বেঁচে থাকার। …আমার ‘মাচ্চু–পিচ্চু’ যাওয়া হয়নি আর…, হবেওনা…।
এইসব না–পাওয়া, না–দেখা শহর দেখার অতীত আকাঙ্ক্ষা আজ আমি পূরণ করি অফিসের কম্পিউটারের ওয়ালপেপারে অচেনা শহর, অরণ্য, পাহাড়, পুরোনো সভ্যতার ছবি ঝুলিয়ে রেখে। সপ্তাহে সপ্তাহে সেসব ছবি পাল্টাতে থাকে। কম্পিউটারের পর্দায় নতুন শহর, সভ্যতা, প্রকৃতি আসে আর যায়। কখনও একদিন পরপর ছবি পাল্টায়। হাওয়াই মিঠাইয়ের মত ফোলা ফোলা পেলব সবুজ ডালপালায় ছাওয়া পাইন অরণ্যের একটা ছবি আছে এখন আমার অফিসের কম্পিউটারের পর্দায়। কম্পিউটার খুললেই ঐ অরণ্য কিভাবে যেন আমার কাছে চলে আসে– অথবা আমিই চলে যাই! পাইনের ঋজু কাণ্ড জড়িয়ে আমি একলা দাঁড়িয়ে থাকি সেই নিবিড় অরণ্যে, কাজের ফাঁকে ফাঁকে, একা! এভাবে দেরি হয়ে যায় কাজে। আমি জানি, আগের বছরগুলোর মতো এবছরও ভাল করব না অফিসে। এবছরও অপমানের সুরে শমী’র কাছে শুনতে হবে যে, ‘আমি ঠিক ক্যারিয়ারিস্ট না!’ বাচ্চার সামনেই ও হয়ত আমায় বলবে– ‘আমাকে দিয়ে কিছুই হবে না!’
…কিন্তু কি এসে যায় তাতে!
আমার কেবলি মনে হয়– ভাল চাকরি, প্রমোশন, সঞ্চয়, বাড়ি, গাড়ি, সন্তান, প্রজন্মের ধারাবাহিকতায় নিজেকে বাহিত করা– এসব কি সত্যিই অর্থহীন নয় যখন আপনি, আমি এমনকি এই পৃথিবীটাই একদিন থাকবে না! মানুষের, জীবনের, পৃথিবীর এই অনিত্যতা তো আমরা সবাই জানি আজ। তাহলে জীবনে, বর্তমানে কি আর সম্ভাবনা আছে বলতে পারেন? জীবনের এই সম্ভাবনাহীনতার বিপরীতে একমাত্র মৃত্যুই কি সম্ভাবনাময় নয়? জীবন তো উন্মোচিত আমাদের কাছে, বিপরীতে মৃত্যু অজানা– সেকারণে নিবিড় সম্ভাবনাময়ও নয় কি তা? হাসছেন আপনারা? কিন্তু, এইসব প্রশ্ন্ন যে আমার মতো ছা– পোষা এক চাকরিজীবীর মনে আসে সেটা কি আমার দোষ?
অফিসে আমার আশপাশে বসা কলিগেরা প্রায়ই হতাশার সুরে বলেন-‘কিছুই নিয়ে যাওয়া যাবে না ভাই! এসেছি শূন্য হাতে, শূন্য হাতেই যেতে হবে!’ …এসব বলার সময় ওদের কন্ঠে যে কি বৈরাগ্য ঝরে! আমি শুনি আর মনে মনে হাসি। আমার চেয়েও হ্রস্ব চাকরিজীবনে আজ ওদের প্রায় সবার নিজের নতুন বাড়ি, মোটা ব্যাংক ব্যালেন্স।
সেদিন বাইরে অফিসের একটা কাজ শেষে অফিস ফেরার পথে একটা কবরস্থানের পাশে রাস্তায় জ্যাম লাগল। একটু আগেই গাড়িতে আমার পাশে বসা যে কলিগ এবারের প্রমোশন নিয়ে, ব্যাংক রেটে বাড়ি করা নিয়ে তুমুল উদ্বিগ্ন ছিলেন, কবরস্থানের দিকে চোখ পড়তেই হঠাৎ চোখে অসীম বৈরাগ্য নিয়ে দ্বীর্ঘশ্বাস ফেলতে ফেলতে বললেন-‘আসলে কি হবে এত ধানাই–পানাই ক’রে ভাই, একদিন তো এখানেই আসতে হবে, এটাই তো আসল ঠিকানা…।’ জ্যামটা ছুটতেই অবশ্য তার প্রোমোশন নিয়ে পূর্বের উদ্বিগ্নতা ফিরে আসতে সময় লাগল না।
মনে মনে যতই হাসি ওদের কথা আর আচরণের বৈপরিত্য নিয়ে, কিন্তু মনের গভীরে তো ঠিকই জানি যে জীবন এভাবেই ভুলিয়ে রাখে! জীবনে যুক্ত থাকতে হলে এভাবেই জড়িয়ে পড়তে হয়– সচেতনভাবে বা অবচেতনে– তা সে একটা বাড়ি করা নিয়েই হোক, কিংবা সন্তানের লেখাপড়া নিয়ে, বা নিজ ক্যরিয়ার নিয়ে, অথবা প্রেম নিয়ে। মোদ্দা কথা, ‘নতুন আকাঙ্ক্ষা’ নিয়ে ভুলে থাকবেন আপনি এবং ভুলে থাকবেন বলেই জীবনের সাথে যুক্ত থাকবেন। মুখে আপনি যতই বলুন-‘একদিন তো মরতেই হবে ভাই, কি লাভ এত লাফিয়ে’, কিংবা ‘এই জীবন তো আসল জীবন না, …ওটাই আসল জীবন’– তবু, আপনি আপনার নতুন বাড়ির দেয়ালের রং নিয়ে, কিংবা কোনো কোনো পোশাক কিনে ঘুরতে যাবেন এবারের ছুটিতে– তা নিয়ে, অথবা কোন রঙের টিপ কিনে আজ সন্ধ্যায় উপহার দিবেন আপনার প্রিয় মানুষটিকে– সে নিয়ে, কিংবা জীবনঘনিষ্ঠ অন্য কিছু নিয়ে জড়িয়ে পড়বেন। আর এসবের মধ্য দিয়েই যুক্ত থাকবেন জীবনের সাথে। একটু পরেই আপনি ভুলে যাবেন দু’মিনিট আগেই বলা মৃত্যুর কথা। এভাবেই এইসব আকাঙ্ক্ষার মধ্য দিয়ে বয়ে চলা জীবন আমাদের ভুলিয়ে রাখে ঐ পরম ক্ষণটার কথা। আর দু’মিনিট পরেই ভুলিয়ে দেয় বলেই যুক্ত থাকা যায় জীবনের সাথে। ‘মৃত্যুরে কে মনে রাখে?’ তাই, মুখে ওদের কথা আর আচরণের বৈপরিত্য নিয়ে যতই মুচকি হাসি, জানিতো জীবন এমনই!
তবু, ওরা যখন মৃত্যুর কথা বলে আমি মন দিয়ে শুনি। যখন ঐ ছোট্ট জায়গাটায় শুয়ে থাকার কথা বলে, তখন মনে হয়, ওরা যেন ওদের এই এখনকার সত্তাটাকেই ঐখানে কল্পনা করছে। এ পর্যন্ত যেসব আকাঙ্ক্ষা আর স্বপ্নসমেত ওদের আজকের এই অস্তিস্ত্ব– তাকেই যেন প্রতিস্থাপন করছে ঐ ছোট্ট জায়গাটায়। আর তাই বর্তমানের ‘আমি’কে ওখানে দেখে ভয় পাচ্ছে।
–এসবের কি কোনো মানে হয়? কিভাবে বুঝল ওরা যে ওখানে ওদের আজকের এই অস্ত্বিত্বসমেত জীবনই শুরু হবে? অগাধ নৈঃশব্দ আর অসীম ঘুম হবে না সেটা? কিংবা কল্পনাতীত নতুন কোনো সূচনা? –আমি ভাবি।
কিন্তু, আমিও কি তেমনি ভাবি না, ওদের মতই? আমিও কি আমার আজকের এই অস্তিত্ব্বকেই ওখানে প্রতিস্থাপন করি না? এই যে আজকের এই আমি– আমার সকল প্রাপ্তি কিংবা অপ্রাপ্তিসমেত যে আমি– তাকে? হ্যাঁ, আমি ভুলে যাই না ওদের মতো দু’মিনিট পরেই ঐ মোক্ষম সময়টার কথা ঠিকই, আমার চোখে কোনো ভয় বা বৈরাগ্য থাকে না ঠিকই, কিন্তু আমিও যে আজকের এই আমাকেই ওখানে কল্পনা করি। বারবার। নানা সময়। এই কল্পনা আমাকে বেঁচে থাকতে সাহায্য করে…, সহ্য করতে সাহায্য করে…, একটা তপ্ত দিনের পর শীতল বৃষ্টির কোমল প্রশান্তি কথা মনে ক’রিয়ে দেয়…!
বারবার মনে হয়– কি ভাবব সেই চুড়ান্ত ক্ষণটায়? কি মনে পড়বে! সেই সুদূর দুপুরটার কথা মনে পড়বে কি? যৌবনের সেই শুনশান, স্তব্ধ দুপুরটার কথা…‘একজনার’ ভীত, কিন্তু উৎসুক মুখটা, অথবা কামনাকাতর লাজুক কালো চোখদুটো মনে পড়বে কি! …আমার প্রথম কৌমার্যহরণের সেই দুপুর! – যেদিন প্রথম আমি পাপড়ি খুলে খুলে বৃন্তে পৌঁছেছিলাম…, ভয় পাচ্ছিলাম দ’ুজনেই– কেউ যদি দেখে ফেলে…! পারব কি চলে যাবার সেই চুড়ান্ত ক্ষণটায় বুকে ঐ ভয়কে অনুভব করতে! ভেজা খড়ের গন্ধের মতো মধুর ‘প্রথম নারী শরীরের’ সেই গন্ধকে অনুভব করতে পারব সেদিন! অথবা সেই প্রথম ভেঙে পড়ার পর দু’জনের বুকের সেই নোনতা ঘামের গন্ধটা পাব! নাকি যন্ত্রণাদগ্ধ এই শরীর জীবনের সেইসব অমূল্য প্রাপ্তিকে ভুলিয়ে রাখবে–চূড়ান্ত চলে যাওয়াকে আরও সহজ করার জন্য! জীবন থেকে বিযুক্ত করার জন্য!
… … …
ছেলেবেলায় যে বাগানটায় আম কুড়াতাম, যার কথা বললাম আপনাদের একটু আগে, ওখানে এক কোনে একটা বাঁশঝাড় আছে। বাঁশঝাড়ের নিচটা বুনো সবুজ: বরেন্দ্রীর আকন্দ, ভাঁটফুল, বিছুটি আর উঁচু ঘাসে আকীর্ণ। একপাশে একটা বড় নিমগাছ। নিমের ঝরে পড়া হলদে পাতা সবসময় বিছিয়ে থাকে বুনো সবুজটার উপর। ছেলেবেলায় ওখানে আমি মুনিয়ার ডিম খুঁজে পেয়েছিলাম একদিন। যখন খুব অসহ্য আর অর্থহীন লাগে সব, আমি চোখ বুজে ঐ বুনো সবুজটা দেখি। শুয়ে থাকি ওখানে। ঘোর বর্ষার একটা দিন ছুঁয়ে যায় মনে। বাঁশপাতা, আকন্দ, বিছুটি, ভাঁটফুল সব ভিজে চুপসে থাকবে সেদিন…, ভিজে ঘাসগুলো আমার বুকের খুব কাছে নুয়ে থাকবে…, ওদের সবার গা থেকে টুপটুপ ক’রে ঝরে পড়বে বৃষ্টির শীতল ফোঁটা– আমি প্রথম গোপন ছোঁয়ার মতো শিউরে উঠব সেই শীতল স্পর্শে– সেই স্পর্শ ক্লান্তিহরা…, শ্রান্তিহরা…, মৃত্তিকার অন্তরালে ওদের শিকড়ের গোপন আলিঙ্গলে গ’লে যাব আমি কৌমার্যহরনের প্রথম দিনটার মত! তারপর একদিন বাঁশপাতার কোমল সবুজ হব!
আমি কোনোদিন মানুষ হ’তে চাইনি…, আমি কোনোদিন মানুষ হ’তে চাই না…!