রাজনৈতিক ব্যবস্থা হল কোন কাঠামো যা কোন সমাজের মধ্যকার গ্রহণযোগ্য রাজনৈতিক পদ্ধতিসমূহকে সংজ্ঞায়িত করে। রাজনৈতিক চিন্তার ইতিহাস খুঁজে পাওয়া যায় প্রাথমিক প্রাচীন যুগে, যেখানে প্লেটোর রিপাবলিক, এরিস্টটলের রাজনীতি, চাণক্যর অর্থশাস্ত্র ও চাণক্য নীতি এবং কনফুসিয়াসের লেখার ন্যায় দিগন্ত উম্নোচনকারী কাজগুলো পাওয়া যায়। জাতীয় রাজনীতিতে আসার আগে নেতৃত্বের দক্ষতার জন্য ছাত্র রাজনীতি আবশ্যক। আর ছাত্র রাজনীতিকে বলা হয় নেতৃত্ব তৈরির বাতিঘর। বাংলাদেশের ছাত্র রাজনীতির একটা গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস রয়েছে, রয়েছে অনেক ঐতিহাসিক অর্জন। সেই ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন, ১৯৬২ সালের শিক্ষা আন্দোলন, ১৯৬৬ সালের ৬ দফা, ১৯৬৯ সালের গণ-অভ্যুত্থান, ১৯৭১ সালের মহান স্বাধীনতা সংগ্রাম, ১৯৯০ সালের স্বৈরাচারী এরশাদ বিরোধী আন্দোলন, ২০১৩ সালে যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসির দাবিতে আন্দোলনসহ সব গণতান্ত্রিক আন্দোলনে ছাত্রসমাজ সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন। শুধু আমাদের দেশ নয় যদি বহির্বিশ্বের দিকে তাকিয়ে দেখি, তাহলেও আমরা ছাত্র সমাজের অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা দেখতে পাব। ১৯৪৮ সালে জার্মানি ও অস্ট্রিয়ার বিপ্লবের মূল শক্তি ছিল ছাত্রসমাজ। ১৯৬৪ সালে ভিয়েতনাম ও বলিভিয়ার ক্ষেত্রেও জাতীয় সংকটে ছাত্রসমাজের অবদান ইতিহাসে ছাত্র রাজনীতির উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হিসেবেই বিবেচিত হয়। খুব হতাশা ও দুঃখ নিয়ে বলতে হয় বর্তমানে বেশ কিছু আলোচিত নেতিবাচক ঘটনার প্রেক্ষাপটে ছাত্র রাজনীতি তার গৌরব হারিয়ে ফেলেছে। বর্তমান লেজুড়বৃত্তির কারণে ছাত্র রাজনীতির মান অবনমনে। ছাত্র রাজনীতির গুণগত মান পরিবর্তন আনতে হবে অবশ্যই মেধাবী, বুদ্ধিমান ও চৌকস নেতৃত্ব দিয়ে। ছাত্র রাজনীতি হোক ছাত্র অধিকার কেন্দ্রিক। এজন্য ছাত্র সংগঠন গুলেকে হানাহানি বন্ধ করে পারস্পরিক সহাবস্থানে বিশ্বাসী হতে হবে। ছাত্র রাজনীতির গুনগত মান পরিবর্তনে মূল দলগুলোকে ছাত্র সংগঠনকে লাঠিয়াল হিসেবে ব্যবহার বন্ধ করতে হবে। লেখক: সংগঠক