ছাত্ররা এভাবে রাজনীতিতে জড়াবে কোনো মা-বাবাই সেটা চান না

বললেন আহত আকিবের বাবা

আজাদী প্রতিবেদন | সোমবার , ১ নভেম্বর, ২০২১ at ৫:৪২ পূর্বাহ্ণ

‘ছাত্ররা পড়ালেখা করবে। পাশাপাশি রাজনীতি সচেতন হবে। কিন্তু এভাবে রাজনীতির সাথে জড়াবে, সেটা কোনো মা-বাবাই চান না।’ ভারাক্রান্ত মনে এসব কথা বলছিলেন স্কুল শিক্ষক গোলাম ফারুক। কুমিল্লা জিলা স্কুলের এই শিক্ষক চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের (চমেক) এমবিবিএস ২য় বর্ষের শিক্ষার্থী মাহাদি আকিবের বাবা। প্রতিপক্ষের হামলায় সংকটাপন্ন আকিব চমেক হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন। শনিবার সকালে চমেক-এর মূল গেট সংলগ্ন এলাকায় সাবেক সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনের অনুসারীদের হাতে মারধরের শিকার হয় শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের অনুসারী হিসেবে পরিচিত মাহাদি আকিব। হামলায় গুরুতর আহত আকিবের মাথায় অস্ত্রোপচার করতে হয়েছে। অস্ত্রোপচারের ২৪ ঘণ্টা পরবর্তী শারীরিক অবস্থার কিছুটা উন্নতি হলেও আকিব এখনো শঙ্কামুক্ত নয় বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন। ঘটনার পর খবর পেয়েই কুমিল্লা থেকে ছেলের কাছে ছুটে আসেন বাবা গোলাম ফারুক। তাদের গ্রামের বাড়ি কুমিল্লার কোতোয়ালী থানাধীন বাদুরতলা এলাকায়। এরপর থেকে হাসপাতালে শয্যাশায়ী ছেলের পাশেই আছেন তিনি। গতকাল বিকেলে আকিবের বাবা গোলাম ফারুকের সাথে কথা হয় এই প্রতিবেদকের। তাঁর সাথে কথা বলে জানা যায়, আকিবরা দুই ভাই। বড় ভাই সাদমান সাকিব কুমিল্লার একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিবিএ শেষ করেছেন। আর মাহাদি আকিব ছোট। কুমিল্লা জিলা স্কুলেরই ছাত্র ছিলেন আকিব। পরে ঢাকার নটরডেম কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক সম্পন্ন করেন। উচ্চ মাধ্যমিক শেষে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে এমবিবিএস কোর্সে ভর্তির সুযোগ হয় আকিবের। বর্তমানে এমবিবিএস ২য় বর্ষে অধ্যয়নরত আকিব যে রাজনীতির সাথে জড়িয়েছেন, সেটি জানতেন না স্কুল শিক্ষক বাবা গোলাম ফারুক। তিনি বলেন, আমার ছেলে নটরডেম কলেজে পড়ালেখা করেছে। সেখানে রাজনীতি ছিল না। স্কুল জীবনে তো রাজনীতিও বুঝার কথা নয়। কিন্তু এখানে (চমেক) এসে যে রাজনীতির সাথে জড়িয়ে পড়েছে, সেটা আমরা জানতাম না। প্রতিদিন ফোন করে তার খবরা-খবর নিই। আমাকে সবকিছু শেয়ার করতো। কখনো এসব বলেনি। সরাসরি রাজনীতি করতো বলেও মনে হয় না। হোস্টেলে বড় ভাইরা ছিল। তাদের সাথে মিশে বা তাদের মাধ্যমে কোনো না কোনোভাবে জড়িয়ে পড়েছে হয়তো।
রাজনীতির শিকার হয়ে ছেলের এমন করুণ অবস্থা প্রসঙ্গে স্কুল শিক্ষক গোলাম ফারুক আজাদীকে বলেন, ছেলে পড়ালেখা করবে। ডাক্তার হয়ে দেশের ও দেশের মানুষের সেবা করবে। অন্য অনেক অভিভাবকের মতো আমারও এমন আশা। সেই স্বপ্ন নিয়েই
ছেলেকে মেডিকেল কলেজে পড়তে দিয়েছি। কিন্তু এমন ঘটনা কখনো প্রত্যাশা করিনি। কারো কাম্যও নয়। তবে ভবিষ্যতে যাতে এ ধরণের কোনো ঘটনা না ঘটে এবং চমেকের ছাত্র-ছাত্রীরা যাতে নির্বিঘ্নে তাদের পড়ালেখা শেষ করতে পারে, সেটাই আমার চাওয়া।
পাশাপাশি ছেলের সুস্থতায় সকলের কাছে দোয়া চেয়েছেন এই স্কুল শিক্ষক বাবা।

পূর্ববর্তী নিবন্ধইনকনট্রেড লিমিটেডের সাড়ে তিন কোটি টাকার ভ্যাট ফাঁকি
পরবর্তী নিবন্ধচমেকে মারামারির ঘটনায় দুইজন গ্রেপ্তার