চমেকে মারামারির ঘটনায় দুইজন গ্রেপ্তার

ছাত্রলীগের একপক্ষের মামলা

আজাদী প্রতিবেদন | সোমবার , ১ নভেম্বর, ২০২১ at ৫:৪২ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে (চমেক) ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের মারামারির ঘটনায় এক পক্ষের দায়ের করা মামলায় দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। রক্তিম দে (২১) ও এনামুল হোসেন ওরফে সীমান্ত (২১) নামের দুজনকে শনিবার রাতে চমেক ক্যাম্পাস থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। দুজনই চমেক এমবিবিএস দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী এবং সাবেক সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনের অনুসারী হিসেবে পরিচিত। দায়ের করা মামলায় রক্তিম দে ১১ নম্বর ও এনামুল হোসেন ১৫ নম্বর এজাহারভুক্ত আসামি। পাঁচলাইশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহিদুল কবির এই দুজনকে গ্রেপ্তারের তথ্য নিশ্চিত করেছেন। রোববার তাদের আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
শনিবার সকালে চমেক মূল গেট সংলগ্ন এলাকায় মাহাদি আকিব নামের এক শিক্ষার্থীকে মারধরের ঘটনায় এ মামলা হয়। আকিব চমেক এমবিবিএস ২য় বর্ষের শিক্ষার্থী ও শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের অনুসারী হিসিবে পরিচিত। হামলায় গুরুতর আহত আকিব বর্তমানে চমেক হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন। এ ঘটনায় নওফেলের অনুসারী হিসেবে পরিচিত তৌফিকুর রহমান নামে অপর এক শিক্ষার্থী শনিবার রাতে পাঁচলাইশ থানায় মামলা করেন। এর আগে শুক্রবার রাতে প্রধান ছাত্রাবাসে আ জ ম নাছির উদ্দীন ও মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের অনুসারীদের মাঝে কথা কাটাকাটির জের ধরে মারামারির ঘটনা ঘটে। এসময় আ জ ম নাছির উদ্দীনের অনুসারী দুজন কর্মীকে শিক্ষা উপমন্ত্রী নওফেলের অনুসারীরা মারধর করে বলে অভিযোগ ওঠে। এর জের ধরে শনিবার সকালে মাহাদি আকিবের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে।
মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ : মাহাদি আকিবের ওপর হামলার ঘটনায় মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের অনুসারী চমেক ছাত্রলীগের একাংশ।
গতকাল দুপুরে চমেকের প্রধান ফটকে চমেক শিক্ষার্থীদের ব্যানারে আয়োজিত মানববন্ধন ও সমাবেশে আকিবের ওপর হামলাকারীদের বিচার দাবি করা হয়।
মানববন্ধনে সংহতি জানিয়ে বক্তব্য রাখেন মহানগর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক জাকারিয়া দস্তগীর, সহ-সভাপতি একরামুল হক রাসেল, মাইনুল হাসান চৌধুরী শিমুল, আবুল মনসুর টিটু, সাব্বির সাকিব। উপস্থিত ছিলেন ডা. ইমন সিকদার, ডা. কেএম তানভীর, ডা. খোরশেদুল ইসলাম, ডা. শ্বাশত মজুমদার, ডা. মো সাকি, ডা. রেজাউল করিম শ্রাবণ, তৌফিকুর রহমান, অভিজিৎ দাশ, কনক দেবনাথ, পিয়াল, জামশেদ, ফয়েজ, জামিল, আরিফ প্রমুখ।
সমাবেশে মহানগর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক জাকারিয়া দস্তগীর বলেন, ‘আকিবের ওপর কলেজ ক্যাম্পাসে প্রকাশ্যে যে হামলা হয়েছে সেটা নিছক হামলা ছিল না, এটা ছিল হত্যার উদ্দেশে হামলা। আমাদের কাছে এটা স্পষ্টভাবে প্রতীয়মান হয়েছে। ছাত্র নামধারী কিছু তরুণ বহিরাগতদের সঙ্গে নিয়ে হত্যার মিশনে শামিল হয়েছিলেন। আকিব এখন মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে। তাকে হত্যার প্রচেষ্টার সঙ্গে যারা জড়িত ছিল তাদের মধ্যে দু’জনকে ইতোমধ্যে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আমাদের দাবি, কিলিং মিশনে যারা ছিল তাদের সবাইকে অনতিবিলম্বে গ্রেপ্তার করা হোক। মহানগর ছাত্রলীগ হামলাকারীদের, হত্যা প্রচেষ্টাকারীদের গ্রেপ্তারের দাবিতে চমেক ছাত্রলীগের পাশে থাকবে।’
চমেক ছাত্রলীগের একাংশের নেতারা বলেন, একজন সহপাঠীকে খুনের উদ্দেশে যারা এই জঘন্য হামলা চালিয়েছে, তারা কেউ শিক্ষার্থী হতে পারে না, তারা সন্ত্রাসী। তাদের ছাত্রত্ব বাতিল করতে হবে। হামলার সঙ্গে জড়িত সবাইকে গ্রেপ্তার করতে হবে। এ ঘটনায় চমেক অধ্যক্ষের প্রশাসনিক ব্যর্থতা রয়েছে দাবি করে অধ্যক্ষের পদত্যাগ দাবি করেও বক্তব্য দেয় কেউ কেউ।

পূর্ববর্তী নিবন্ধছাত্ররা এভাবে রাজনীতিতে জড়াবে কোনো মা-বাবাই সেটা চান না
পরবর্তী নিবন্ধকক্সবাজারে বিক্ষোভ, অবরোধ