চোর ধরে ফেঁসে গেলেন চসিক প্রকৌশলী

ছেড়ে দেয়ার অভিযোগে শো’কজ

আজাদী প্রতিবেদন | মঙ্গলবার , ৯ নভেম্বর, ২০২১ at ৬:২১ পূর্বাহ্ণ

জ্বালানি তেল চুরির সময় দুইজনকে হাতেনাতে আটকের পর ছেড়ে দেয়ার অভিযোগে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) যান্ত্রিক শাখার এক উপ-সহকারী প্রকৌশলীকে শোকজ করা হয়েছে। তবে অভিযুক্ত প্রকৌশলীর দাবি, দুইজনকে আটকের পর একই বিভাগের ঊর্ধ্বতন প্রকৌশলীর কাছে হস্তান্তর করা হয়। ঊর্ধ্বতনের উপস্থিতিতেই ধৃতরা পালিয়ে যায়। এ অবস্থায় চোর ধরে উল্টো ফেঁসে যাওয়ার দাবি করেন তিনি।
অভিযুক্ত উপ-সহকারী প্রকৌশলী হচ্ছেন অপূর্ব দেবনাথ। তিনি নির্বাহী প্রকেশৈলী মির্জা ফজলুল কাদেরের কাছে ধৃতদের একজনকে হস্তান্তর করেন বলে দাবি করেন। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, গত ২৫ সেপ্টেম্বর দিবাগত রাতে চসিকের সাগরিকা পেট্রোল পাম্প থেকে ৭২ লিটার ডিজেল চুরির সময় ধরা পড়ে মো. হোসেন নামে চসিকের এক চালক। মোবারক হোসেন নামে চসিকের পাম্প অপারেটর তাকে স্লিপ ছাড়া তেল ইস্যু করে। যা সেখানে কর্মরত অর্পূব দেবনাথ ধরে ফেলে। ধরা পরার পর দেয়া মুচলেকায় মো. হোসেন স্বীকার করে, ঘটনার দিন তাকে ৭২ লিটার এবং আগের দিন ২৪ সেপ্টেম্বর ১০০ লিটার ইস্যু স্লিপ ছাড়া ডিজেল ইস্যু করে পাম্প অপারেটর মোবারক। প্রতি লিটার ৪ টাকা কমিশনের বিনিময়ে সে জ্বালানি তেলগুলো একটি দোকানে পৌঁছে দেয়। একইভাবে মোবারক মুচলেকায় স্বীকার করে, জ্বালানি তেল হোসেনের মাধ্যমে কলগা সিএনজি স্টেশনের পাশে জনৈক সুজনের তেলের দোকানে সরবরাহ করে। এভাবে দৈনিক ২০০ থেকে ৩০০ লিটার সরবরাহ করা হয় দোকানটিতে। প্রতি লিটার তেল বিক্রি করা হয় ৫০ টাকায়।
এদিকে গত রোববার অপূর্ব দেবনাথকে কারণ দর্শানো নোটিশ দেয়া হয়। এতে স্বাক্ষর করেন চসিক সচিব খালেদ মাহমুদ। নোটিশে বলা হয়, ‘প্রকৌশল বিভাগের প্রধান প্রকৌশলীর অভিযোগ দৃষ্টে দেখা যায়, ইস্যু স্লিপ ব্যতীত জ্বালানি তেল দেয়ার অপরাধে অস্থায়ী ট্রাক সহকারীর মোহাম্মদ হোসেন এবং তেল ইস্যুকারী অস্থায়ী পাম্প অপারেটর মো. হোসেনকে অফিস হেফাজত থেকে বাইরে পাঠিয়ে দেন। একজন অপরাধীকে আশ্রয় দেয়া অপরাধের শামিল। যা অফিস শৃঙ্খলা পরিপন্থী এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ।’ এ অপরাধের দায়ে কেন আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না তা তিন কার্যদিবসের মধ্যে লিখিতভাবে জানাতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে’।
এ বিষয়ে অপূর্ব দেবনাথ দৈনিক আজাদীকে বলেন, চালক ও পাম্প অপারেটরকে হাতেনাতে আটক ধরি। চালক ছিলেন আমার হেফাজতে এবং পাম্প অপারেটর ছিলেন পাম্প ম্যানেজারের হেফাজতে। বিষয়টি সাথে সাথে ঊর্ধ্বতনকে জানিয়েছি। প্রধান প্রকৌশলী স্যারও জাতেন। রাত ১১ টা ৩৮ মিনিটে নির্বাহী প্রকৌশলী মির্জা ফজলুল কাদের স্যার আসেন। তার কাছে আমি চালককে হস্তান্তর করি। তিনি চালকের সাথে কথাও বলেছেন। পরে শুনেছি ওই চালক পালিয়ে গেছেন। মির্জা ফজলুল কাদের স্যারের উপস্থিতিতে পাম্প অপারেটর হেঁটে চলে গেছে। এখন আমাকে শোকজ করা হয়েছে। আমি কি চোর ধরের অপরাধ করেছি। সিসিটিভি দেখলে সব স্পষ্ট হবে বলেও জানান তিনি।
এ বিষয়ে মির্জা ফজলুল কাদের দৈনিক আজাদীকে বলেন, আমার কাছে হস্তান্তর করেনি। প্রধান প্রকৌশলী আমাকে কল করে জানানোর পর আমি ঘটনাস্থলে যাই। কিন্তু সেখানে কাউকে পাইনি। ঘটনার সময় অপূর্ব দেবনাথ সেখানে ছিল বলে শুনেছি।
জানতে চাইলে চসিক সচিব খালেদ মাহমুদ দৈনিক আজাদীকে বলেন, প্রধান প্রকৌশলীর দপ্তর থেকে ফাইল এসেছে। আমি কেবল অফিস আদেশ করেছি। বিস্তারিত প্রধান প্রকৌশলী বলতে পারবেন। এ বিষয়ে জানার জন্য প্রধান প্রকৌশলী রফিকুল ইসলামকে একাধিকবার কল দিলেও রিসিভি করেন নি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধকথা বল, কথা বলি
পরবর্তী নিবন্ধমামলা করার হুঁশিয়ারি ক্যাবের