চোখ বেঁচে থাক চোখের আলোয়

আবারো সফল দুই কর্ণিয়া সংগ্রহ সন্ধানী চমেকের

| মঙ্গলবার , ৩ নভেম্বর, ২০২০ at ১০:২৪ পূর্বাহ্ণ

‘চোখের আলোয় দেখেছিলেম চোখের বাহিরে/ অন্তরে আজ দেখব, যখন আলোক নাহিরে’ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বিখ্যাত গানের পংক্তি এটি। মনের চোখ দিয়ে আমরা কল্পনা হয়তো বা করে নিই, তবে যদি কারোর চোখের জ্যোতি নিভে যায়, সেই দুর্ভাগ্যটার অনুভূতি আমাদের যাদের চোখ রয়েছে, তারা কখনোই বুঝতে পারবে না। দেশে দৃষ্টিহীন ব্যক্তিদের মধ্যে একটা বিরাট অংশের দৃষ্টি আবার ফিরিয়েআনা সম্ভব, শুধু কর্নিয়া নামক চোখের সামনে অবস্থিত স্বচ্ছ পর্দাটি প্রতিস্থাপনের মাধ্যমে।
গতকাল সোমবার সকালে সন্ধানী চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ ইউনিটের উদ্যোগে চন্দনাইশের সাতবাড়িয়া থেকে ২টি মরণোত্তর কর্ণিয়া সংগ্রহ করা হয়। কর্ণিয়া ২টি দান করেন চন্দনাইশ সাতবাড়িয়া গ্রামের ৯৩ বছর বয়সী পরলোকগত বৃদ্ধা বিদ্যুৎ কণা চৌধুরী। বিদ্যুৎ কণা চৌধুরী রবিবার রাত ১০টা বেজে ৫৫ মিনিটে বার্ধক্যজনিত কারণে পরলোকগমন করেন।
স্বেচ্ছায় মরণোত্তর চক্ষুদানে উদ্বুদ্ধ থাকায় তার মৃত্যুর পর তার পরিবার থেকে সন্ধানী চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ ইউনিটের সাথে যোগাযোগ করা হয়।রাতেই সন্ধানী চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ ইউনিটের একটি টিম চন্দনাইশ যাত্রা করে।বৃদ্ধার নাতি অমর চৌধুরীর অনুমতি সাপেক্ষে ভোর ৩ টা বেজে ৩০ মিনিটে কর্ণিয়া সংগ্রহের প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়।সফলভাবে কর্ণিয়া সংগ্রহে নেতৃত্ব দেন ডা. মোহাম্মদ ওমর ফয়সাল। টিমের অন্যান্য সদস্যরা হলেন ৫৮ তম প্রজন্মের তানজিমুল হাই রাফি, শিহাব উদ্দিন এবং ৫৯ তম প্রজন্মের মোহাম্মদ আরাফাত হোসাইন।এরপর কর্ণিয়া ২টি ভোরেই ঢাকাসহ সন্ধানী জাতীয় চক্ষুদান সমিতিতে প্রেরণ করা হয়।
অমর চৌধুরী সন্ধানী চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ ইউনিটের পুরো টিমকে ধন্যবাদ জানান এবং এ ধরনের কাজকে স্বাগত জানান। ইউনিটের সাধারণ সম্পাদক তানজিমুল হাই রাফি বলেন, ‘মরণোত্তর চক্ষুদানে আমরা নিয়মিতভাবে উদ্ধুদ্ধ করছি ঠিকই কিন্তু যথাযথ সচেতনতার অভাব, আইনি জটিলতার জন্য কার্যকর কোন ফল বহু বছর পাওয়া যায়নি। রক্তদানের মতো মরণোত্তর চক্ষুদানও একটি সামাজিক আন্দোলনে রূপ নেবে এবং লাখো অন্ধ মানুষ চোখের আলো ফিরে পাবে এ প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন।
উল্লেখ্য দেশ থেকে কর্ণিয়াজনিত অন্ধত্ব দূর করার লক্ষ্য নিয়ে ১৯৮৪ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় স্বেচ্ছাসেবি প্রতিষ্ঠান সন্ধানী জাতীয় চক্ষুদান সমিতি।চিকিৎসা পেশায় নিয়োজিত সিনিয়র চিকিৎসক ও সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত ব্যক্তিদের সমন্বয়ে গঠিত সমিতির দীর্ঘ ৩০ বছরের এ আন্দোলনে এ পর্যন্ত ৩৬২১১ জন মরণোত্তর চক্ষুদানে অঙ্গীকার করেছেন। প্রেস বিজ্ঞপ্তি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধবিনা ফিতে সিএসইতে বাল্ক ও ফরেন ট্রেড
পরবর্তী নিবন্ধনূপুর মার্কেটে ভাতের হোটেলে আগুন