স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তার কক্ষ থেকে ‘গুরুত্বপূর্ণ সরকারি নথি সরানো ও মোবাইল ফোনে নথির ছবি তোলার’ অভিযোগে প্রথম আলোর জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক রোজিনা ইসলামকে গ্রেপ্তার করা হয় গত সোমবার (১৭ মে)।
স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিবের একান্ত সচিব মো. সাইফুল ইসলাম ভূঞার কক্ষে প্রায় সাড়ে ৫ ঘণ্টা আটক রাখার পর সোমবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে তাকে শাহবাগ থানায় নিয়ে যায় পুলিশ।
রোজিনার আটক থাকাকালীন একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে। ভিডিওটিতে দেখা যায় তাকে একটি কক্ষের কোনার একটি চেয়ারে বসিয়ে গলা চেপে ধরা হয়। তিনি স্বাস্থ্য সচিবের সাথে কথা বলতে চাইলে তাকে ঘিরে রাখা সচিবালয় কর্মকর্তা ও পুলিশ রোজিনাকে সেই সুযোগ দেননি।
প্রথম আলোর জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক রোজিনা ইসলামের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলার তদন্তভার এখন হস্তান্তর করা হয়েছে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) কাছে।
আজ বুধবার (১৯ মে) মামলাটি শাহবাগ থানা পুলিশের কাছ থেকে ডিবি রমনা বিভাগের কাছে হস্তান্তর করা হয়। ডিবি রমনা বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) এইচ এম আজিমুল হক বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
ডিবি পুলিশ জানায়, সাংবাদিক রোজিনা ইসলামের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলাটি তদন্তের জন্য ঊর্ধ্বতনদের নির্দেশে ডিবি পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। ইতোমধ্যে মামলার সব কাগজপত্র ডিবির কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এর ফলে মামলাটি এখন থেকে তদন্ত করবে ডিবি রমনা বিভাগ।-বাংলানিউজ
এর আগে সোমবার (১৭ মে) রাতে রোজিনা ইসলামের বিরুদ্ধে শাহবাগ থানায় একটি মামলা করা হয়েছে। মামলার নম্বর ১৬। দণ্ডবিধি ৩৯৭ এবং ৪১১ অফিসিয়াল সিক্রেসি অ্যাক্ট ১৯২৩ এর ৩/৫ এর ধারায় এ মামলা করেন স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের উপ-সচিব শিব্বির আহমেদ ওসমানী। এ মামলার একমাত্র আসামি করা হয়েছে রোজিনা ইসলামকে।
মঙ্গলবার (১৮ মে) সকাল ৮টার দিকে তাকে আদালতে নেওয়া হয়। সিএমএম আদালতের হাজতখানায় তাকে রাখা হয়। শুনানির জন্য তাকে সকাল ১১টার দিকে এজলাসে তোলা হয়।
এর আগে রোজিনা ইসলামকে জিজ্ঞাসবাদের জন্য ৫ দিনের রিমান্ড আবেদন করে পুলিশ। তার বিরুদ্ধে সরকারি নথি চুরির অভিযোগে হওয়া মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আরিফুর রহমান সরদার রিমান্ডের এ আবেদন করেন। আদালত তার রিমান্ড আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠিয়েছেন। একইসঙ্গে জামিন আবেদনের বিষয়ে শুনানির জন্য আগামী বৃহস্পতিবার (২০ মে) দিন ধার্য করা হয়।
তার বিরুদ্ধে শাহবাগ থানায় একটি মামলা করা হয় যেখানে ১৮৬০ সালের দণ্ডবিধির ৩৭৯ ও ৪১১ ধারায় চুরি এবং ১৯২৩ সালের ‘অফিসিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্টের’ ৩ ও ৫ ধারায় গুপ্তচরবৃত্তি ও রাষ্ট্রীয় গোপন নথি নিজের দখলে রাখার অভিযোগ এনেছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
এজাহারে বলা হয়েছে, রোজিনা যেসব নথির ‘ছবি তুলেছেন’ সেগুলোর মধ্যে ‘টিকা আমদানি’ সংক্রান্ত কাগজপত্রও আছে।
ভিডিওটি দেখতে ক্লিক করুন: https://www.facebook.com/DainikAzadi/videos/799947873976667