চেনা আবহে ইফতারি বাজার

দুই বছর পর অভিজাত রেস্তোরাঁ-গলির দোকান সবখানে বেচাবিক্রির ধুম

আজাদী প্রতিবেদন | সোমবার , ৪ এপ্রিল, ২০২২ at ৫:৫৮ পূর্বাহ্ণ

করোনার ধাক্কা কাটিয়ে প্রায় দুই বছর পর নগরীতে হোটেল রেস্টুরেন্টগুলোতে ইফতারি বিক্রির ধুম পড়েছে। এছাড়া অভিজাত হোটেল রেস্টুরেন্ট ছাড়া পাড়া মহল্লার গলিতে সামিয়ানা টাঙিয়েও অনেক বিক্রেতা রকমারি ইফতারির পসরা সাজিয়ে বসেছে। যার যার সাধ্যমতো ক্রেতারা সেইসব ইফতারি কিনে নিয়ে হাসিমুখে বাড়ির পথ ধরেছেন। সাধারণত প্রথম রমজানে অধিকাংশ মানুষ পরিবারের সঙ্গে ইফতার করতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। তাই প্রথমদিন ইফতারিতে বাড়তি মাত্রা যোগ করতে অনেক রোজাদার নগরীর প্রসিদ্ধ হোটেল রেস্টুরেন্টে পার্সেলের জন্য ছুটে যান।
গতকাল রোববার বিকেলে নগরীর জিইসি মোড়, ২ নম্বর গেট, ওয়াসা মোড়, কাজীর দেউড়ি এবং নিউ মার্কেট এলাকার ইফতারির বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বিক্রেতারা রেশমী জিলাপি, শাহী জিলাপি, বুরিন্দা, চনাবুট, পেঁয়াজু, বেগুনি, ছমুচা, অন্থন, চিকেন স্পিং রোল, চিকেন জালি কাবাব, চিকেন সাসলিক, চিকেন উইংস, চিকেন ড্রামস্টিক, উইংস চপ, স্পাইসি চিকেন ফ্রাই, চিকেন গ্রিল, চিকেন শর্মা, শর্মা বার্গার, বাটার নান, শাহী পরাটা, চিকেন চপ, চিকেন টিক্কা, চিকেন বটি কাবাব, বিফ সিক কাবাব, জাফরানি শরবত, বোরহানি, ফিন্নি, চিকেন শাহী হালিম, বিফ শাহী হালিম এবং মাটন হালিমের পসরা সাজিয়ে বসেছেন। এছাড়া ক্রেতারাও পছন্দমতো এসব ইফতারি কিনছেন। বিশেষ করে নগরীর অভিজাত হোটেল রেডিসন ব্লু, পেনিনসুলা ও হোটেল আগ্রাবাদ ছাড়াও নগরীর বীর চট্টলা, বারকোড ফুড জংশন, পিট স্টপ, বনফুল, রেডচিলি, স্যাফরান, রোদেলা বিকেল, হোটেল জামান, সাদিয়া’স কিচেন, বনানজা, অ্যাম্ব্রোসিয়া, লর্ডস ইন, হাইওয়ে সুইটস, এরিস্ট্রোক্রেটস সহ বিভিন্ন হোটেল রেস্টুরেন্টে ইফতারির জমজমাট বিকিকিনি হচ্ছে বলে জানা গেছে।
নগরীর নিউ মার্কেট মোড়ে কথা হয় ক্রেতা মিশকাত উদ্দিন চৌধুরীর সঙ্গে। তিনি জানালেন, পরিবারের সঙ্গে ইফতার করার মজাই আলাদা। তাই কিছু ইফতারির জন্য এসেছি। কিনতে গিয়ে দেখি গত বছরের চেয়ে কিছু কিছু আইটেমের দাম খুব বেশি বেড়ে গেছে। তারপরও কিনতে তো হচ্ছে।
নগরীর জামাল খান এলাকার দ্য সিগন্যাচার রেস্টুরেন্টের ম্যানেজার আরিফ আদিল বলেন, ইফতারির বেচাবিক্রি খুব ভালো হচ্ছে। গত দুই বছর করোনাকালীন লকডাউনে সরকারের বিধিনিষেধের কেউ ব্যবসা করতে পারেননি। তবে এ বছর যেহেতু করোনা পরিস্থিতি অনেকটা নিয়ন্ত্রণে এসেছে, তাই বলা যায় আমরাও স্বাভাবিক ধারাতে ব্যবসা করতে পারছি। দাম বৃদ্ধির বিষয়ে তিনি বলেন, কয়েকটি আইটেমের দাম বেড়েছে। কারণ দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে এর প্রভাব পড়েছে। তারপরেও খুব বেশি দাম বেড়েছে বলা যাবে না।
নগরীর জহুর হকার্স মার্কেট সংলগ্ন চেয়ারম্যান হোটেলের ম্যানেজার মুহাম্মদ মাসুদ আলম বলেন, এখন পর্যন্ত ইফতারির বিক্রিতে বেশ ইতিবাচক সাড়া পাচ্ছি। সামনের দিনে বেচাবিক্রি কেমন হয় তো বলা যাবে না। ইফতারি কিনতে আসা সৈয়দ আলম নামের একজন বলেন, কিছু প্রয়োজনীয় ইফতারি কিনতে এসেছি। প্রথম রমজানে ইফতারিতে বাড়তি কিছু না থাকলে আসলে ঠিক জমে না। তবে সবধরনের আইটেমের দাম গত বছরের চেয়ে একটু বেশি।
অপরদিকে নগরীর অলিগলির ইফতারির দোকানগুলোতেও দেদারছে বিক্রি হচ্ছে বাহারি ইফতারি। কাজীর দেউড়ি ১ নম্বর গলিতে কথা হয় বিক্রেতা আলাউদ্দিনের সঙ্গে। তিনি জানান, ইফতারি বিক্রি খুবই ভালো হচ্ছে। আমরা সবধরনের ইফতারির আইটেম গত বছরের দামেই বিক্রি করছি। যদিও আটা, ময়দা, চিনি এবং বেশ কিছু সবজির দাম বেড়ে গেছে। তারপরেও আমরা দাম বাড়ায়নি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধমাহে রমজানের সওগাত
পরবর্তী নিবন্ধঊর্ধ্বতনের সিদ্ধান্ত ছাড়াই ভবন মালিকদের নোটিশ