চেঙ্গী নদীতে নির্বিচারে বালু উত্তোলন

ভাঙনের শঙ্কায় তীরবর্তী হাজারো মানুষ

খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি | বুধবার , ৫ মে, ২০২১ at ৬:৪০ পূর্বাহ্ণ

সরকার অবৈধভাবে বালু উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি ঘোষণা করার পরও খাগড়াছড়ির পানছড়িতে প্রকাশ্যে চলছে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন। পরিবেশগত প্রভাব নিরূপণ ছাড়াই বালু উত্তোলন করায় নদীর পাড় ভাঙনের শঙ্কায় রয়েছে স্থানীয়রা। স্থানীয়দের অভিযোগ, চেঙ্গী নদীর রাবার ড্যাম এলাকা থেকে গত ৮ মাস ধরে স্থানীয় ঠিকাদার উত্তম কুমার দেব ও এলজিইডি উপজেলা প্রকৌশলী অরুণ কান্তি দাসের যোগসাজশে এ বালু উত্তোলন চলছে।
জানা যায়, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) ২০২০-২১ অর্থবছরে টেকসই ক্ষুদ্রাকার পানি সম্পদ সেক্টর উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় চেঙ্গী নদীর উপর ৮০ মি. ড্যাম প্রকল্পে মেরামতকরণ কাজ চলছে। প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য মেসার্স রীপ এন্টারপ্রাইজ মনোনীত হলেও উপ-ঠিকাদার হিসেবে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে স্থানীয় ঠিকাদার উত্তম কুমার দেব। প্রকল্পের কার্যাদেশে চেঙ্গী নদী থেকে পলি উত্তোলনের কথা বললেও তা না করে রাবার ড্যাম সংলগ্ন এলাকা থেকে মেশিন বসিয়ে বালু উত্তোলন শুরু করেছে। সেসব বালু আবার বিক্রি করা হচ্ছে নানা জায়গায়। এলজিইডি’র প্রকল্পের দোহাই দিয়ে বালু উত্তোলনের পিছনে উপজেলা প্রকৌশলী অরুণ কুমার দাসের যোগসাজশ রয়েছে বলে স্থানীয়দের অভিযোগ। তারা জানায়, ঠিকাদার উত্তম কুমার দেব পানছড়ি উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রস্তাবিত কমিটির যুগ্ম সম্পাদক। তার ভাই বিজয় কুমার দেব উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। প্রভাবশালী হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে কেউ মুখ খুলছে না।
অভিযোগের ব্যাপারে জানতে চাইলে ঠিকাদার উত্তম কুমার দেব জানান, কেবল আমি না এখানে অনেকেই অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে। এখানে অনেকগুলো প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজ চলমান রয়েছে। সেসব কাজের জন্য অনেক বালু প্রয়োজন হয়। উপজেলায় কোনো বালু মহাল না থাকায় এখানে বালু তুলতে বাধ্য হচ্ছি। কারণ জেলা সদর থেকে বালু পরিবহন করে কাজ করা সম্ভব নয়।
বিভিন্ন জায়গা বালু বিক্রির বিষয়ে জানতে চাইলে এলজিইডি উপজেলা প্রকৌশলী অরুন কান্তি দাস কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি। তিনি বলেন, পানছড়িতে উত্তম বাবুসহ বেশ কয়েকজন ঠিকাদারের কাজের প্রতি আগ্রহ রয়েছে। তারা বিভিন্ন প্রকল্পের কাজ বাস্তবায়ন করছে। অন্য ঠিকাদাররা তাদের কাজে ঈর্ষান্বিত হয়ে অপপ্রচার করছে।
খাগড়াছড়ির জেলা প্রশাসক প্রতাপচন্দ্র বিশ্বাস জানান, পানছড়িতে আমাদের কোনো বালু মহাল নেই। কেউ যদি চেঙ্গী নদীর পানছড়ি অংশ থেকে বালু উত্তোলন করে তাহলে তা সম্পূর্ণ অবৈধ। এ ব্যাপারে খোঁজ নিয়ে আমরা আইনগত ব্যবস্থা নেব। অবৈধ বালু উত্তোলনকারী যতই প্রভাবশালী হোক তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধরাউজানে প্রবাসীর স্ত্রীকে জবাই করে হত্যার চেষ্টা
পরবর্তী নিবন্ধবাড়ছে বৃষ্টি কমছে তাপমাত্রা