চীনা বিনিয়োগের নিরাপদ স্থান বাংলাদেশ

| রবিবার , ১০ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ at ৮:৫০ পূর্বাহ্ণ

চীনা বিনিয়োগের জন্য বাংলাদেশ একটি আদর্শ ও নিরাপদ জায়গা বলে মন্তব্য করেছেন বিশেষজ্ঞরা। তারা বলেন, বাংলাদেশ সরকার অবকাঠামো, আইসিটি, সড়ক যোগাযোগ এবং বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে বিনিয়োগ আকর্ষণে পরিবেশ তৈরি করে দিচ্ছে। বাংলাদেশের এই উদ্যোগ চীনা বিনিয়োগকারীদের আস্থা বাড়াবে বলেও মনে করেন তারা।

গতকাল শনিবার রাজধানীর পূর্বাচলের বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশচীন মৈত্রী প্রদর্শনী কেন্দ্রে বাংলাদেশচায়না চেম্বার অব কমার্স ইন্ডাস্ট্রিজের (বিসিসিসিআই) আয়োজনে ‘চায়নাবাংলাদেশ এন্টারপ্রাইজেস হাই কোয়ালিটি ডেভেলপমেন্ট ফোরাম : অ্যাচিভমেন্টস এবং ওয়ে ফরওয়ার্ড’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন। খবর বাসসের।

দ্য বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভএর ১০ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে চীনবাংলাদেশ অর্থনৈতিক ও বাণিজ্য সহযোগিতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে বাংলাদেশ চায়না চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (বিসিসিআই) এবং চায়না এন্টারপ্রাইজেস অ্যাসোসিয়েশন ইন বাংলাদেশের (সিইএবি) সহযোগিতায় বাংলাদেশে চীনের দূতাবাস এই প্রদর্শনীর আয়োজন করেছে। প্রদর্শনীতে চীনের ১৫টি প্রতিষ্ঠান অংশ নিয়েছে। এছাড়াও বাংলাদেশের বাজারে কাজ করছে এমন প্রায় ২০টি অন্যান্য বড় চীনা কোম্পানি এবং বেশ কয়েকটি বাংলাদেশি বড় কোম্পানি ও ব্যাংকও এতে অংশ নেয়। প্রদর্শনীতে এসব প্রতিষ্ঠানের ৬০টির বেশি স্টল রয়েছে।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে অর্থনৈতিক সম্পর্ক উন্নয়ন (ইআরডি) বিভাগের অতিরিক্ত সচিব এএইচএম জাহাঙ্গীর বলেন, চীন ও বাংলাদেশের এই সহযোগিতার সম্পর্ক অনেক দিন শুরু হয়েছে। ২০০৯ সালে শেখ হাসিনা চাইনিজ প্রেসিডেন্টের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে গিয়েছিলেন। তখন আমারও সেখানে থাকার সুযোগ হয়েছিলো। সেই সময়ের বেশ কিছু নতুন চুক্তি হয়েছিলো। দুই দেশের সম্পর্ক এগিয়ে নিতে গত কয়েক বছরে বেশ কিছু কাজ করা হয়েছে। এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে এবং টানেল নির্মাণে চায়নার বহু কোম্পানি জড়িত। একইভাবে পদ্মা সেতু নির্মাণেও তারা জড়িত ছিলো। আমি অনেক চায়না প্রকল্পে ভিজিট করেছি। তারা সবক্ষেত্রেই সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়ে থাকে। তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশে চীনের বিনিয়োগ যথেষ্ট দৃশ্যমান। চীনের কোম্পানিগুলোর জন্য বাংলাদেশে বিনিয়োগ কম ঝুঁকিপূর্ণ। তাই আগামী দিনে বাংলাদেশে আরও বেশি চীনা বিনিয়োগ আশা করছি।

চাইনিজ এন্টারপ্রাইজেস অ্যাসোসিয়েশন ইন বাংলাদেশ (সিইএবি) এর সভাপতি এবং সিসিইসিসি বাংলাদেশ লিমিটেডের চেয়ারম্যান কে চ্যাংলিয়াং তার স্বাগত বক্তব্যে বলেন, বিশ্বের অবকাঠামো নির্মাণের নায়ক চীন। এমনকি বাংলাদেশেও চীনা কোম্পানিগুলো বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মেগা প্রকল্পে বেশ সক্রিয়। চীনা কোম্পানিগুলো বাংলাদেশে ৫৫০ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের মোট ১২টি সড়ক, ২১টি সেতু এবং ৫৪১.৯ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের মোট সাতটি রেললাইন তৈরি করেছে। এছাড়াও, চীনা কোম্পানিগুলো কয়লা, সৌর এবং বায়ু বিদ্যুৎ কেন্দ্রের মতো জ্বালানি খাতে বিনিয়োগ করেছে, যা বাংলাদেশের জ্বালানি খাতকে বৈচিত্র্যময় করে তুলেছে।

বাংলাদেশ চায়না চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (বিসিসিআই) সাধারণ সম্পাদক আল মামুন মৃধা বলেন, বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভের অধীনে বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে উচ্চমানের উন্নয়ন, উদ্ভাবন এবং সহযোগিতার একটি অসাধারণ যাত্রা রয়েছে। চীনা কোম্পানিগুলো আমাদের দেশের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশে নিযুক্ত চীন দূতাবাসের অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক কাউন্সেলর সোং ইয়াং, বিজিএমইএর প্রথম সহসভাপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম, বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের প্রধান প্রকৌশলী কাজী মুহাম্মদ ফেরদৌস, বিকেএমইএর নির্বাহী সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম, সরকারি বেসরকারি অংশীদারিত্ব কর্তৃপক্ষের (পিপিপি) বিশেষজ্ঞ ড. এএম আলআমিন প্রমুখ।

পূর্ববর্তী নিবন্ধআখতারুজ্জামান বাবুর কবরে দক্ষিণ জেলা ও কর্ণফুলী উপজেলা আ.লীগ নেতৃবৃন্দের শ্রদ্ধাঞ্জলি
পরবর্তী নিবন্ধদেশে ২৪ ঘণ্টায় ১০ ডেঙ্গু রোগীর মৃত্যু