চিলির আপামর জনতা নতুন সংবিধান লেখার পক্ষে রায় দিয়েছে। লাতিন আমেরিকার এই দেশটিতে দীর্ঘদিন ধরেই নতুন সংবিধানের দাবিতে বিক্ষোভ চলছিল। তাই ভোটে মানুষের উপস্থিতি ছিল রেকর্ড সংখ্যক। গণমানুষের এমন রায়ে সাবেক স্বৈরশাসক জেনারেল অগাস্টো পিনোকেট আমলের সংবিধান বাতিল হবে।
বিবিসির সোমবারের এক অনলাইন প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, এ পর্যন্ত ৯০ শতাংশ ভোট গণনা শেষে দেখা যাচ্ছে চিলির ৭৮ শতাংশ মানুষের সমর্থন নতুন করে সংবিধান লেখার পক্ষে। অসমতা আর দুর্নীতির বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলেন-বিক্ষোভ চলার পর গণভোটে জনমানুষের সেই আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটলো।
গণভোটের ফলাফল স্বীকার ও শান্তিপূর্ণ ভোটের প্রশংসা করে চিলির প্রেসিডেন্ট সেবাস্তিয়ান পিনেরা বলেছেন, এটা এমন এক পথের যাত্রা শুরু হলো, যে পথে আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে।
এক বছর আগে চিলিতে সরকারবিরোধী বিক্ষোভ শুরু হয়। বিক্ষোভের শুরু থেকেই বিক্ষোভকারীদের মূল দাবির একটি ছিল, সমাজে বিদ্যমান গভীর অসাম্য দূরীকরণে দেশের নতুন একটি সংবিধান প্রয়োজন।
গণভোটের রায় আসার পর মানুষ রাস্তায় নেমে তা উদযাপন করছেন। প্রেসিডেন্ট পিনেরা বলছেন, এ পর্যন্ত সংবিধান আমাদের মধ্যে বিভাজন তৈরি করে রেখেছে। আজ থেকে আমাদের কাজ ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে যেন নতুন সংবিধান হয় একতা, স্থায়ীত্ব আর উজ্জ্বল ভবিষ্যতের একটি মহৎ কাঠামো। গণভোট চিলির মানুষের কাছে দুটি প্রশ্ন ছিল। প্রথমত; তারা নতুন সংবিধান চায় কিনা। দ্বিতীয়ত; এই সংবিধান তৈরির জন্য কেমন সংবিধান প্রণয়ন কমিটি চায় তারা। নির্বাচিত নাগরিকরা নতুন সংবিধানের খসড়া তৈরির কাজটি করবে এমনটাই চায় বেশিরভাগ মানুষ। তারা চায় না এখানে এমপিদের যুক্ত করা হোক। লাতিন আমেরিকার সবচেয়ে ধনী দেশ চিলিতে জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধি নিয়ে অনেক দিন ধরেই অসন্তোষ। বিশেষ করে ৭০ লাখ বাসিন্দার শহর সান্তিয়াগোয় জীবনযাত্রার ব্যয় সমপ্রতি খুব বেড়ে গেছে। এর মধ্যেই গত বছরের অক্টোবরে সরকার মেট্রোরেলের ভাড়া বাড়ানোর ঘোষণা দিলে এই বিক্ষোভের সূত্রপাত ঘটে।