কিছুতেই কমছে না চিনির দাম। খুচরা পর্যায়ে দামের দিক থেকে সেঞ্চুরি পূর্ণ করেছে চিনির বাজার। পাইকারীতেও শতক ছুঁই ছুঁই।
খাতুনগঞ্জের ব্যবসায়ীরা বলছেন, গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতি মণ চিনির দাম বেড়েছে ২০০ টাকা। এছাড়া একই সময়ের ব্যবধানে খুচরায় প্রতি কেজি চিনির দাম বেড়েছে ১৫ টাকা। চিনির সরবরাহ কম, তাই দাম বেড়েছে দাবি ব্যবসায়ীদের। তবে ভোক্তারা বলছেন, চিনির মিল মালিকরা কারসাজি করে দাম বাড়িয়ে যাচ্ছেন। এক্ষেত্রে সরকারকে চিনির মিলে অভিযান চালিয়ে বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে হবে বলছেন তারা।
খাতুনগঞ্জের পাইকারী বাজারে গতকাল খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পাইকারীতে প্রতি মণ (৩৭ দশমিক ৩২ কেজি) চিনি বিক্রি হচ্ছে ৩ হাজার ৬৫০ টাকা। গত সপ্তাহে বিক্রি হয়েছে ৩ হাজার ৪৫০ টাকায়। জানতে চাইলে খাতুনগঞ্জের একজন চিনি ব্যবসায়ী বলেন, দেশের বাজার নিয়ন্ত্রণ করছে দেশের শীর্ষ তিন শিল্পগ্রুপ। দাম উঠানামাটাও তাদের ওপর নির্ভর করে। চিনির বাজারে সরকারের তেমন একটা নিয়ন্ত্রণ নেই বললেই চলে।
খাতুনগঞ্জের পাইকারী ব্যবসায়ীরা জানান, খাতুনগঞ্জের বাজারে পণ্য বেচাকেনা ও লেনদেনে যুগ যুগ ধরে কিছু প্রথা চালু আছে। নিজেদের সুবিধার অনেক প্রথা আছে যেগুলো আবার আইনগতভাবেও স্বীকৃত নয়। এরমধ্যে অন্যতম হচ্ছে ডেলিভারি অর্ডার (ডিও) স্লিপ। চিনি কিংবা অন্য কোনো পণ্য কেনাবেচায় ডিও বেচাকেনার মাধ্যমে বিভিন্ন আগাম লেনদেন হচ্ছে। দেখা যায়, পণ্য হাতে না পেলেও ওই স্লিপটিই বেচাকেনা হচ্ছে। কোনো কোম্পানি বাজার থেকে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ পণ্যের ডিও কিনে নেয়। যে দরে ডিও কেনা হয়, তার বাজার দর যদি বেড়ে যায়, তখন পণ্যটি ডেলিভারি দিতে তারা গড়িমসি করে। আবার দেখা যায়, কোম্পানির পণ্যই আসেনি কিন্তু ডিও কিনে রেখেছেন অনেক বেশি। এর ফলেও কোম্পানি বাজারে পণ্য ডেলিভারি দিতে পারে না। ফলে এসব পণ্যের দামও নিয়ন্ত্রণে থাকে না। এক্ষেত্রে চিনির ডিও বেচাকেনা বেশি হয়।
অপরদিকে গতকাল কাজীর দেউরির খুচরা বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বর্তমানে প্রতি কেজি চিনি বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকায়। গত ১০ দিন আগেও প্রতি কেজি চিনি বিক্রি হয়েছে ৮৫ টাকায়। খুচরা বিক্রেতা সৈয়দ আহম্মদ বলেন, পাইকারী বাজারে দাম বাড়ার প্রভাবে খুচরাতে এর প্রভাব পড়েছে। পাইকারীতে কমলে আমরা দাম কমিয়ে দেবো।
মো. ফরিদ উদ্দিন নামের একজন ভোক্তা জানান, চিনির বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকারের সৎ উদ্যোগ থাকতে হবে। বেসরকারি চিনির মিলে নজরদারি জোরদার করতে হবে। এছাড়া সরকারি চিনির মিলগুলোকে স্বয়ংসম্পূর্ণ করে গড়ে তোলা প্রয়োজন। কারণ বেসরকারি মিল মালিকরা সিন্ডিকেট করে চিনি নিয়ে ঠিকই ছিনিমিনি খেলছে। এতে ক্রমেই লাগামহীন হয়ে পড়ছে চিনির বাজার।