চার্জশিটভুক্ত ২০ জনকে অব্যাহতি

চসিকের দোকান বরাদ্দে দুর্নীতি

আজাদী প্রতিবেদন | বুধবার , ২ মার্চ, ২০২২ at ৬:১৭ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক) নির্মিত ২৩টি দোকান প্রভাব খাটিয়ে বরাদ্দ দেয়া ও নেয়ার মামলায় সম্পূরক চার্জশিটভুক্ত ২০ আসামিকে অব্যাহতি দিয়েছেন আদালত। আসামি পক্ষের আবেদনের প্রেক্ষিতে গতকাল মঙ্গলবার চট্টগ্রামের বিভাগীয় বিশেষ জজ মুন্সী আব্দুল মজিদ এ আদেশ দেন। দুদক পিপি কাজী ছানোয়ার আহমেদ লাভলু আজাদীকে বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, আদালতের চাহিদা অনুযায়ী দুদক কর্তৃক দাখিলকৃত সিটি কর্পোরেশনের একটি প্রতিবেদন ও আসামি পক্ষের অব্যাহতি চেয়ে করা আবেদন আমলে নিয়ে বিচারক আসামিদের অব্যাহতি দিয়েছেন। আসামি পক্ষের আইনজীবী শেখ ইফতেখার সাইমুন চৌধুরী বলেন, বিধি মোতাবেক দোকানগুলো বরাদ্দ নিয়েছিলেন আমার মক্কেলরা। এক এগার’র সময় যা গুঁড়িয়ে দেয়া হয়। উচ্ছেদ করা হয়। কোনো রকম ক্ষতিপূরণ বা জামানত ফেরত দেয়া হয়নি। এখানে আমার মক্কেলরাই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। আদালতকে আমরা এসব বিষয় বুঝাতে সক্ষম হয়েছি। যার কারণে আদালত আমার মক্কেলদের অব্যাহতি দিয়েছেন।
আদালত সূত্র জানায়, এ মামলায় অধিকতর তদন্ত শেষে গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসে ২০ জনের বিরুদ্ধে সম্পূরক চার্জশিট জমা দেয় দুদক। মৃত্যুবরণ করায় মামলার এজাহারের প্রধান আসামি সাবেক মেয়র এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীকে আগেই অব্যাহতি দেয় আদালত। উক্ত সম্পূরক চার্জশিটে বাকি তিনজনকে অব্যাহতি দেয়ার সুপারিশ করা হয়। অব্যাহতিপ্রাপ্ত ২০ জন হলেন নগরীর সুগন্ধা আবাসিকের মৃত ফারুক আহমদ চৌধুরীর ছেলে মো. জাহেদুল আলম চৌধুরী, পাঁচলাইশের মৃত আহমদ হোসেন চৌধুরীর ছেলে খোরশেদ আলম চৌধুরী, গরীবউল্লাহ শাহ হাউজিং সোসাইটির মৃত নবাব মিয়া চৌধুরীর ছেলে বখতিয়ার উদ্দিন খান, নাসিরাবাদ হাউজিং সোইটির এম এ মজিদের ছেলে এ এম মাইনুল হক ও তার স্ত্রী নাজনীন সুলতানা, লালখান বাজারের বদিউল আলমের ছেলে মোবারক উল্লাহ, পাঁচলাইশের মো. ছয়দুল হকের ছেলে নেজামুল হক, মুরাদপুরের শাহজাহান খন্দকারের স্ত্রী হোসনে আরা বেগম, হাটহাজারীর মৃত নুর হোসেনের ছেলে মো. ইউনুস, পাঁচলাইশের মোহাম্মদ মিয়ার ছেলে শেখ সরওয়ার্র্দী, দামপাড়ার মাহতাব উদ্দিন চৌধুরীর ছেলে ইশতিয়াক আহমদ চৌধুরী, লোহাগাড়ার মৃত একরামুল হকের ছেলে মো. এরশাদুল হক, খুলশী মৃত আবদুর রহমান ভূঁইয়ার স্ত্রী হাসিনা ভূইয়া, ওআর নিজাম রোডের মৃত দুদু মিয়ার স্ত্রী নুর নাহার বেগম, কোতোয়ালীর আবুল খায়েরের ছেলে হাসান মুরাদ, পাঁচলাইশের নুরুল ইসলামের ছেলে দিদারুল ইসলাম, এনায়েত বাজারের নুরুল ইসলাম চৌধুরীর ছেলে মো. রেজাউল করিম চৌধুরী, পটিয়ার আবুল হাশেমের স্ত্রী গোলমান আরা বেগম, বাকলিয়ার মো. শহিদুল আলমের স্ত্রী আঞ্জুমান আরা বেগম মিনু ও ফেনী সদর থানার মুন্সী মিয়ার ছেলে মাহবুব মিন্টুভ। এদের মধ্যে ইশতিয়াক আহমদ চৌধুরী নগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দিনের ছেলে, বখতিয়ার উদ্দিন খান নগর শ্রমিক লীগের সভাপতি, মোবারক উল্লাহ নগর আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বদিউল আলমের ছেলে এবং আঞ্জুমান আরা বেগম মিনু নগর আওয়ামী লীগ নেতা ও কাউন্সিলর শহীদুল আলমের স্ত্রী।
আদালত সূত্র জানায়, ১৯৯৭ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বরের মধ্যে মুরাদপুরে সিটি কর্পোরেশন নির্মিত ২৩টি দোকান বরাদ্দ দেয়া হয়। পত্রিকায় টেন্ডার ছাড়া, যাচাই বাছাই ছাড়া দোকানগুলো বরাদ্দ দেয়া হয়েছে-এমন অভিযোগে ২০০২ সালের ১৩ অক্টোবর কোতোয়ালী থানায় মামলাটি করে দুদক। মামলায় তৎকালীন মেয়র এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীসহ ২৪ জনকে আসামি করা হয়। ২০০৬ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি আসামিদের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল হয়। এরপর মহিউদ্দিন চৌধুরীর একটি রিট আবেদনের প্রেক্ষিতে উচ্চ আদালত ২০০৬ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি মামলাটির কার্যক্রমের উপর স্থগিতাদেশ দেয়। পরবর্তীতে ২০১২ সালের ৬ ডিসেম্বর রিট পিটিশন সংক্রান্ত রুল খারিজ করে দিয়ে মামলার কার্যক্রমের উপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যহার করে নেয় হাই কোর্ট। এর মাধ্যমে মামলাটির বিচার পক্রিয়া ফের শুরু হয়। পরবর্তীতে ২০১৯ সালের ১৬ জানুয়ারি মামলাটি অধিকতর তদন্তের আদেশ হয়।

পূর্ববর্তী নিবন্ধ১২ ঘণ্টা বন্ধ থাকবে অ্যাসাইকুডা সিস্টেম
পরবর্তী নিবন্ধসাভার থেকে চট্টগ্রামে এসেও রক্ষা হয়নি ছাত্রলীগ নেতার