চারুকলার ভবনগুলো ঝুঁকিমুক্ত ও মেরামতযোগ্য : যাচাই কমিটি

পর্যাপ্ত টয়লেট স্থাপনের সুপারিশ

চবি প্রতিনিধি | বৃহস্পতিবার , ২ মার্চ, ২০২৩ at ৫:৪০ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) চারুকলা ইনস্টিটিউটের অভ্যন্তরে অবস্থিত ভবনসমূহ ঝুঁকিপূর্ণ নয় বলে জানিয়েছে ভবনসমূহের ঝুঁকিপূর্ণতা ও ব্যবহারের উপযোগিতা যাচাই এবং প্রতিকারের নিমিত্তে গঠিত কমিটি। এছাড়া চবির প্রকৌশল দপ্তরের তত্ত্বাবধানে ভবনগুলোর মেরামত কাজ সম্পন্ন করা হলে ঝুঁকিমুক্তভাবে ব্যবহার করা যাবে এবং কিছু কিছু স্থানে পলেস্তারা ও বীমে যে ফাটল পরিলক্ষিত হয়েছে তা মেরামতযোগ্য বলেও জানিয়েছে কমিটি। কমিটির পক্ষ থেকে আরও জানানো হয়, চারুকলার একাডেমিক ভবনে পর্যাপ্ত টয়লেট নেই, যা সুবিধাজনক স্থানে স্থাপন করা যেতে পারে।

গতকাল বুধবার কমিটির সদস্য ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান প্রকৌশলী সৈয়দ জাহাঙ্গীর ফজল বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, চারুকলার ভবনগুলো ঝুকিপূর্ণ নয়। পুরাতন হওয়ার কারণে শ্যাওলা জমেছে আর ছাদে অধিক পরিমাণে গাছের পাতা পড়ার কারণে স্যাঁতসেঁতে হয়েছে। আর দুএক জায়গায় হালকা ফাটল ধরেছে। এগুলো মেরামতের কাজ চলছে।

জানা গেছে, চারুকলা ইনস্টিটিউটের অভ্যন্তরে অবস্থিত ভবনের ঝুঁকিপূর্ণতা ও ব্যবহারের উপযোগিতা যাচাইয়ের জন্য গঠিত কমিটি গত ৪ ফেব্রুয়ারি ইনস্টিটিউটের অভ্যন্তরে ভবনসমূহ সরেজমিনে পরিদর্শন করেন। ইনস্টিটিউট সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গ এ সময় উপস্থিতি ছিলেন। পর্যবেক্ষণ শেষে ৮ ফেব্রুয়ারি উপাচার্যের দপ্তর বরাবর প্রতিবেদন জমা দেয় কমিটি।

প্রতিবেদনে বলা হয়, একাডেমিক ভবনের ফাউন্ডেশনে এবং প্রথম ও দ্বিতীয় তলায় কোনো ত্রুটি পরিলক্ষিত হয়নি। তবে নীচতলার কিছু কক্ষে ফাটল দেখা দিয়েছে, তৃতীয় তলার কাঠামোগত কোনো ত্রুটি পরিলক্ষিত হয়নি তবে পশ্চিম পাশের উত্তর দিকের দেয়ালে ড্যাম্প দেখা দিয়েছে। একইভাবে চতুর্থ তলায়ও কাঠামোগত কোনো ত্রুটি পরিলক্ষিত হয়নি। তবে বর্ষাকালে ছাদে পানি জমে থাকার ফলে বিশেষ করে করোনাকালীন বন্ধের সময়ে ঝরা পাতায় পরিপূর্ণ থাকার কারণে কিছু কক্ষে ছাদ ও বীমের পলেস্তারা খসে পড়েছে এবং কিছুকিছু জায়গায় পলেস্তারা খসে পড়ে ফাটল উন্মুক্ত হয়েছে। তাছাড়া কিছু কক্ষে জানালার পাশ দিয়ে দেয়াল চুয়ে পানি পড়ে, ফলে কিছুকিছু ওয়াল ড্যাম্প হয়ে গেছে।

এ বিষয়ে চারুকলা ইন্সটিটিউটকে মূল ক্যাম্পাসে স্থানান্তরের বিষয়ে গঠিত কমিটির সদস্য সচিব ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর মোহাম্মদ ইয়াকুব বলেন, পর্যবেক্ষণ শেষে চারুকলার ভবনগুলা ঝুঁকিপূর্ণ নয় বলে গঠিত কমিটি জানিয়েছে। ছোট ছোট যে কয়েকটি সমস্যা রয়েছে তা মেরামতের কাজ চলছে। কাজগুলো হয়ে গেলেই শিক্ষার্থীরা ক্লাস করতে পারবে।

চারুকলাকে মূল ক্যাম্পাসে স্থানান্তরের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটি অনেক দীর্ঘ প্রক্রিয়া। চারুকলার মতো একটি জায়গাকে অন্যত্রে নিয়ে যাওয়ার মতো সরকারের এই মুহুর্তে ফান্ড নাই। এই মুহুর্তে সেটা সম্ভব না।

সরকার যদি চারুকলাকে স্থানান্তরের বিষয়ে কাজ শুরু করতে বলে এবং সার্বিক দিক বিবেচনা করে পরিবেশ পরিস্থিতি অনূকূলে থাকে তাহলে সে বিষয়ে আগানো হবে।

প্রসঙ্গত, গত বছরের ২ নভেম্বর চারুকলা ইন্সটিটিউট সংস্কারের ২২ দফা দাবিতে ক্লাস বর্জন করে আন্দোলনে নামেন শিক্ষার্থীরা। পরে তা ইনস্টিটিউটকে মূল ক্যাম্পাসে স্থানান্তরের এক দফা দাবিতে পরিণত হয়। এর মধ্যে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে মেরামতের কথা বলে গত ২ ফেব্রুয়ারি একমাসের জন্য চারুকলা ইন্সটিটিউট বন্ধ ঘোষণা করে বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী পর্ষদ সিন্ডিকেট। এরপর গত ২৭ ফেব্রুয়ারি বন্ধের সময়সীমা আরো এক মাস বর্ধিত করা হয়।

পূর্ববর্তী নিবন্ধনগরে ‘ইনসিরেশন’ পদ্ধতিতে বিদ্যুৎ উৎপাদনের বাধা কাটছে
পরবর্তী নিবন্ধভারতের আদালতে বেকসুর খালাস পেলেন সালাহ উদ্দিন