চাকরি নিয়ে পরিবারের হাল ধরতে চান প্লাবন

চকরিয়ার দুর্ঘটনা

চকরিয়া প্রতিনিধি | শনিবার , ২৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২২ at ৭:২০ পূর্বাহ্ণ

মাত্র কয়েক সেকেন্ডে একে একে ছয় পুত্র সন্তানকে হারিয়ে লণ্ডভণ্ড হয়ে যাওয়া প্রয়াত সুরেশ চন্দ্র শীলের স্ত্রী বৃদ্ধা মৃণালিনী শীলই এখন পরিবারটির কর্তা। স্বামী মারা যাওয়ার দশদিনের মাথায় একসঙ্গে পাঁচ পুত্র, চৌদ্দদিন পর আরো এক সন্তানসহ ছয় পুত্রকে হারানোর ক্ষত তাড়িয়ে বেড়াচ্ছে মৃণালিনীকে। নিজে বিধবা হওয়ার কয়েকদিনের মাথায় ছয় পুত্রবধূকেও যে বিধবার পোশাকে দেখতে হবে তা ছিল কল্পনার বাইরে। তারও বয়স হয়েছে। আর কদিন বেঁচে থাকবেন জানেন না। তার অবর্তমানে এই পরিবারগুলোর কী হবে- সেই চিন্তায় মগ্ন মৃণালিনী। এদিকে বেঁচে থাকা তার একমাত্র পুত্রসন্তান প্লাবন শীল সদ্য এইচএসসি পাস করেছেন। প্লাবন এবং একবছরের বড় বোন মুন্নী শীল সেদিন ভাগ্যক্রমে প্রাণে বেঁচে ফিরেন। তিনি বলেন, একে একে ছয় পুত্র চলে যাওয়া সংসারের হাল ধরার বা উপার্জনের আর কোনো অবলম্বন নেই। এখন যদি আমার কনিষ্ট ছেলে প্লাবনের একটা চাকরি হয়, তাহলে পরিবারের হাল ধরতে পারতো সে। এজন্য আমি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে ছেলের জন্য একটি চাকরি চাই। তিনি বলেন, একসঙ্গে নিহত হওয়া পাঁচ ছেলের স্ত্রীরাও পড়ালেখা জানা। তারাও চাকরি করতে পারবে। যদি তাদেরও চাকরির ব্যবস্থা করা হয় তাহলে নাতিদের নিয়ে পরবর্তী জীবন ভালোভাবে কাটানো যেত।
দৈনিক আজাদীকে প্লাবন বলেন, আমি স্বপ্ন দেখতাম ভবিষ্যতে বড় কিছু হব। ভাইদের আদর-স্নেহ ও সহায়তায় সেই পথে ভালোভাবে এগুচ্ছিলাম। ডুলাহাজারা কলেজ থেকে মানবিক বিভাগ নিয়ে এইচএসসি পাস করেছি এবার। কিন্তু আমাকে একা করে ভাইয়েরা সবাই চলে গেল। এমতাবস্থায় যদি একটা সরকারি চাকরির ব্যবস্থা করা যেত তাহলে ভেঙে পড়া পরিবারটির হাল ধরতে পারতাম।
এই বিষয়ে কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মো. মামুনুর রশীদ আজাদীকে বলেন, বেঁচে থাকা একমাত্র সন্তান প্লাবন শীলকে একটি সরকারি চাকরির ব্যবস্থা কীভাবে করা যায়, সেই বিষয়টি আমরা বিবেচনায় রেখেছি। এছাড়া নিহতদের স্ত্রীরাও যাতে ছোটখাটো চাকরি করে কিছু একটা করতে পারে সেই বিষয়টিও গুরুত্বের সঙ্গে দেখছি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধখাগড়াছড়িতে দুর্বৃত্তের গুলিতে কৃষক নিহত
পরবর্তী নিবন্ধকুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্পের পাশে অগ্নিকাণ্ড