শ্রী মেহার কালী বাড়ি বাংলাদেশের চাঁদপুর জেলার শাহরাস্তি উপজেলা শহরের মেহার এলাকায় অবস্থিত একটি কালী মন্দির। এটি একটি শক্তিপীঠ। শ্রী শ্রী মেহার কালীবাড়ি হলো বিশ্বের একমাত্র দশমহাবিদ্যা সিদ্ধ পীঠস্থান। এই পীঠস্থানে মহাসাধক সর্বানন্দ দেবের সাধনায় তুষ্ট হয়ে দেবী পার্বতী তাঁর দশ মহা রূপ নিয়ে আবির্ভূত হয়েছিলেন। চট্টগ্রাম বিভাগের চাঁদপুর জেলার শাহরাস্তি বা মেহারে এই কালীমন্দির অবস্থিত। মহাতীর্থ এই মেহের কালীবাড়িকে ঘিরে রয়েছে অনেক ইতিহাস। পুরাকালে মেহের কালীবাড়ি ছিল মাতঙ্গ মুনির আশ্রম, যেখানে মাতঙ্গ মুনি স্থাপন করেছিলেন ‘মতঙ্গেশ শিব লিঙ্গ’যা বর্তমানকালে পাতালগামী। মহাসাধক সর্বানন্দ মায়ের ইচ্ছায় অষ্টম বাড়ের মত জন্ম নেন এই মেহের কালীবাড়িতে। কিন্তু এই মহাসাধক ছেলে বেলা থেকেই ছিলেন সহজ–সরল, উদাসীন এবং নিরক্ষর। মহাত্মা সর্ব্বানন্দ ঠাকুর এখানে সিদ্ধিলাভ করেছিলেন এবং সে সময় থেকে এটি সিদ্ধ পীঠ বলে অভিহিত হয়ে আসছে। গভীর অরণ্যমধ্যে যে জীনবৃক্ষমূলে সর্ব্বানন্দ সিদ্ধি লাভ করেছিলেন, অন্যান্য বৃহৎ বৃহৎ বটবৃক্ষসহ সেই প্রাচীন বৃক্ষটি আজও জীবিত আছে (বর্তমানে এই অঞ্চলটি ঘনবসতি পূর্ণ এলাকায় পরিণত হয়েছে)। বৃক্ষমূলেই পূজা, বলি, হোম ইত্যাদি হয়ে থাকে। বৃক্ষের উপরে কাক, বাদুড়, প্রভৃতি অসংখ্য পাখি বসে থাকে, কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় এই যে, তারা মলমূত্র আদি পরিত্যাগ করে পূজার দ্রব্যাদি অপবিত্র করে না। পূর্বে এখানে দেবদেবীর কোন মূর্তি ছিল না বর্তমানে কষ্টিপাথরের দশমহাবিদ্যা দেবীর মূর্ত্তি বিদ্যমান; (বর্তমানে একটি শিব মন্দির, রাধামাধব মন্দির ও হরিসভা বিদ্যমান) প্রতি নিয়ত এখানে যাত্রী সমাগম থাকে। যাত্রীদের সাময়িক অবস্থানের জন্য বিভিন্ন ভক্তের অনুদানে যাত্রী ছাউনি দালান গড়ে উঠেছে।
মেহার কালীবাড়িতে মাকে পরমা প্রকৃতি রূপে ঐ বৃক্ষতে পূজা করা হয়। আজও কোনো মানুষ হিন্দু বা মুসলিম কেউ জুতা পায়ে মন্দিরের আঙ্গিনায় প্রবেশ করেন না। কালী পূজার দিন মেহার কালীবাড়িতে অসংখ্য ভক্তের সমাগম ঘটে। আপনিও আসুন এবং দর্শন করুন মেহের কালীমায়ের বিখ্যাত মন্দির।