নগরীর শেরশাহ এলাকায় অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে পরিচালিত চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের ভ্রাম্যমাণ আদালতে বাধা দেয়ার চেষ্টা করেছে দখলদাররা। পরে মো. নাজিম (৫০) নামে একজনকে আটক করে র্যাবের হেফাজত তুলে দেয়া হয়। এরপর দখলদাররা পিছু হটে। গতকাল দুপুরে এ ঘটনা ঘটে। অবশ্য শেষ পর্যন্ত ওই এলাকা থেকে প্রায় দুই শতাধিক অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়। অভিযান শেষে আটক নাজিমকেও ছেড়ে দেয়া হয়।
চসিক সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরেই জালালাবাদ ওয়ার্ডস্থ শেরশাহ আবাসিক এলাকার সড়ক, আর্মড ব্যাটেলিয়ন সড়ক, বিআরটিসি ডিপো সড়ক থেকে অন্ধ কলোনি, বাংলাবাজার সড়ক, বায়েজিদ থানা সড়ক, তারাগেইট এলাকা, শেরশাহ গোল চত্বর মিনারসহ আশেপাশের এলাকায় অবৈধ দখলে নিয়ে স্থাপনা নির্মাণ করছে স্থানীয় প্রভাবশালীরা। দোকানপাটসহ বস্তিও গড়ে তোলা হয়েছে। ২০১৬ সালে প্রথম এসব অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদে উদ্যোগ নেয়া হয়। ওই সময় অবৈধ দখলদারদের সরে যেতে নোটিশও দেয়া হয়েছিল। সর্বশেষ গত ১৩ অক্টোবর বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে তিনদিনের মধ্যে অবৈধ দখলদারদের সরে যেতে নির্দেশনা দেয়া হয়। এরপরও সরে না যাওয়ায় গত রোববার থেকে উচ্ছেদে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা শুরু করে চসিক। প্রথমদিন দুই শতাধিক স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়। সর্বশেষ গতকাল বায়েজিদ রোড এবং তারাগেইট থেকে আর্মড ব্যাটেলিয়ন সড়ক পর্যন্ত চসিকের স্পেশাল ম্যাজিস্ট্রেট (যুগ্ম জেলা জজ) জাহানারা ফেরদৌসের নেতৃত্বে অভিযান পরিচালিত হয়। সকাল ১০টা থেকে শুরু হওয়া অভিযানে চসিকের বিভিন্ন বিভাগের প্রায় ৮০ শ্রমিক অংশ নেন। উপস্থিত ছিলেন পুলিশ, র্যাব ও আনসার সদস্যরা।
অভিযান শুরুর পর তারাগেইট এলাকায় মো. নাজিমের নেতৃত্বে অবৈধ দখলদাররা সেখানে জড়ো হন। তারা ম্যাজিস্ট্রেটের গাড়ির চারপাশে অবস্থান নিয়ে হৈ চৈ শুরু করে। তারা সেখানকার বৈধ বাসিন্দা বলেও দাবি করেন। পরে মো. নাজিমকে আটক করে র্যাবের হেফাজতে দেয়া হয়।
শেরশাহ শিল্প এলাকায় ফকিরপাড়া রেনেসাঁ সংঘ নামে একটি ক্লাব ঘর নির্মাণ করা হয় সড়কের জায়গা দখল করে। উচ্ছেদ করতে চাইলে ক্লবের কয়েকজন সদস্য এসে দাবি করে, তারা বৈধ মালিক। এ বিষয়ে তারা প্রশাসককে অবহিত করেছেন বলেও দাবি করে। পরে ভ্রাম্যমাণ আদালত প্রয়োজনীয় কাগজপত্র উপস্থাপনে ৪৮ ঘন্টা সময় দেন। একই এলাকার আরেকজন ব্যক্তিকেও ৪৮ ঘন্টা সময় দেয়া হয়।
অভিযানে নেতৃত্ব দেয়া স্পেশাল ম্যাজিস্ট্রেট জাহানারা ফেরদৌস দৈনিক আজাদীকে বলেন, দীর্ঘদিন ধরে এসব জায়গা অবৈধ দখলে ছিল। ২০১৬ সাল থেকে সরে যেতে নোটিশ দেয়া হয়। পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তিও দেয়া হয়। তারা সরে না যাওয়ায় অভিযান পরিচালনা করা হয়। বাধা দেয়া প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, অভিযানগুলোতে স্বাভাবিকভাবে বাধা দেয়ার চেষ্টা হয়। এখানেও চেষ্টা হয়েছিল। আমরা আইনগতভাবে মোকাবিলা করেছি। নাজিম নামে একজনকে কাজের সুবির্ধাথে র্যাবের হেফাজতে রাখা হয়। এছাড়া একটি ক্লাব এবং এক ব্যক্তিকে ৪৮ ঘন্টা সময় দিয়েছি।