চলাচলের রাস্তা কেটে ড্রেন নির্মাণের চেষ্টা

বেকায়দায় ৩৫ পরিবার

চকরিয়া প্রতিনিধি | শনিবার , ৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ at ৪:৫৮ পূর্বাহ্ণ

কক্সবাজারের চকরিয়ার উপকূলীয় ঢেমুশিয়া ইউনিয়নে ৩৫টি পরিবারের একমাত্র চলাচলের রাস্তা বন্ধ করে দিয়ে একটি প্রভাবশালী মহল সেখানে ড্রেন নির্মাণের পাঁয়তারা চালাচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। দীর্ঘবছরের ভোগদখলীয় ও উন্মুক্ত সেই চলাচলের রাস্তাটি ইতোমধ্যে কেটে ফেলার চেষ্টা চালালে ভুক্তভোগী পরিবারের লোকজন বাধা দেয়।

ভুক্তভোগীরা জানান, সেই যাত্রায় রাস্তাটি কেটে ফেলার তৎপরতা বন্ধ হলেও প্রভাবশালী মহলটি এখন ভিন্ন কৌশলে এগুচ্ছে এবং মিথ্যা তথ্য উপস্থাপন করে প্রশাসনকে ব্যবহার করে দীর্ঘ বছরের রাস্তাটি ড্রেনে রূপান্তরের প্রক্রিয়া শুরু করেছে। এতে বেশ দুশ্চিন্তায় পড়ে গেছে ইউনিয়নের মিয়াজি পাড়ার পরিবারগুলো। প্রভাবশালী মহলের এই অপতৎপরতার বিরুদ্ধে ভুক্তভোগী ৩৫টি পরিবারের পক্ষে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) দপ্তরে লিখিত অভিযোগ করেছেন মিয়াজিপাড়ার আতঙ্কিত বাসিন্দা খলিলুর রহমানের পুত্র মো. বেলাল উদ্দিন। অভিযোগে তিনি উল্লেখ করেন, ঢেমুশিয়া মৌজার বিএস ১২৩৭ ও ১৫০৯ নম্বর খতিয়ানের বিএস ৪৮০৬ দাগের জমি তাদের খরিদকৃত ও দখলীয় জমি রয়েছে। সেই জমির পাশেই রয়েছে খাস জায়গাও। সেই জায়গার ওপর দিয়ে নির্মিত রাস্তা দিয়ে দীর্ঘ বেশ কয়েকবছর ধরে চলাচল করে আসছে মিয়াজি পাড়ায় বসবাস করা পরিবারগুলো। কিন্তু স্থানীয়ভাবে একদল প্রভাবশালী সেই চলাচল রাস্তা কেটে সেখানে সেচ ড্রেন নির্মাণের পায়তারা করছে।

ভুক্তভোগী বেলাল উদ্দিন বলেন, আমাদের পাড়ার ৩৫টি পরিবারের একমাত্র চলাচলের রাস্তা হচ্ছে এটি। সেই রাস্তা কেটে এখন সেখানে সেচ ড্রেন নির্মাণের তৎপরতা অব্যাহত রাখায় পুরো পাড়ার শিশু, নারীপুরুষসহ সবার মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।

পাড়াটির ভুক্তভোগী একাধিক বাসিন্দা জানিয়েছেন, তাদের পাড়ার একেবারে পাশ দিয়ে একটি সেচ ড্রেন বিদ্যমান রয়েছে। সেই ড্রেন ব্যবহার করে পানি নিয়ে গেলে চাষাবাদে কোনো সমস্যা হবে না। আবার রাস্তার পাশের ফসলি জমির অংশেও নতুন করে ড্রেন নির্মাণ করা যায়। কিন্তু বিকল্প এসব চিন্তা না করে এতসংখ্যক পরিবারের চলাচলের রাস্তা কেটে ড্রেন নির্মাণের হুমকি দিয়ে যাচ্ছে প্রভাবশালী মহলটি। এই অপতৎপরতার পেছনে একমাত্র উদ্দেশ্য হচ্ছেতাদেরকে বাড়িঘরে থাকতে না দেওয়া এবং পানি সরবরাহের নামে কৃষকদের কাছ থেকে অবৈধভাবে সুবিধা ভোগ করা। তাই এই বিষয়ে তারা উপজেলা প্রশাসনের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

এই বিষয়ে ঢেমুশিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. মাঈনউদ্দিন চৌধুরী বলেন, সম্প্রতি বিষয়টির সমাধান করতে উভয় পক্ষকে নিয়ে একাধিকবার পরিষদে বৈঠক করা হয়েছে। কিন্তু এক পক্ষ না মানায় সেটি ঝুলে আছে। এর পরেও ৩৫টি পরিবারের চলাচলে যাতে কোনো প্রতিবন্ধকতা না হয় এবং একইসাথে ফসলি জমির সেচ সুবিধাও যাতে নিশ্চিত হয় সেজন্য পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

এ ব্যাপারে চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জেপি দেওয়ান দৈনিক আজাদীকে বলেন, এই বিষয়ে উভয়পক্ষের লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তা তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সরেজমিন বিষয়টি দেখে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধদুর্গম পাহাড়ে সৌর বিদ্যুতের আলো
পরবর্তী নিবন্ধস্ট্রোক শনাক্তের অ্যাপ