অবৈধ দখল থেকে ভূমি রক্ষায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের সীমানা নির্ধারণে ৫ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। এছাড়াও হাসপাতালের অভ্যন্তরে দালাল প্রতিরোধে আইনশৃঙ্ক্ষলা রক্ষা বাহিনীকে যুক্ত করে জোরালোভাবে আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণের সিদ্ধান্ত হয়েছে। গতকাল রোববার দুপুরে অনুষ্ঠিত চমেক হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভায় এসব সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। হাসপাতাল ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরীর সভাপতিত্বে প্রথমবারের মতো অনলাইনে (জুম মিটিংয়ে) এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভাপতি পদে পরিবর্তনের পর হাসপাতাল ব্যবস্থাপনা কমিটির এটিই প্রথম সভা। অনলাইনে অনুষ্ঠিত এ সভায় অন্যান্যের মাঝে বিভাগীয় কমিশনার এবিএম আজাদ, চমেক হাসপাতাল পরিচালক ও ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য সচিব ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এস এম হুমায়ুন কবীর, চমেক অধ্যক্ষ প্রফেসর ডা. শামীম হাসান, বিএমএ সভাপতি ডা. মুজিবুল হক খান, চমেক উপাধ্যক্ষ প্রফেসর ডা. নাসির উদ্দিন মাহমুদ, বাংলাদেশ প্রাইভেট মেডিকেল প্র্যাকটিশনার্স এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ডা. সেলিম আকতার চৌধুরী, হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. সুযত পাল, সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বি, পিডব্লিউডির তত্ত্ববধায়ক প্রকৌশলী মোক্তার হোসেন দেওয়ান, সমাজ সেবা অধিদপ্তরের বিভাগীয় পরিচালক নুসরাত সুলতানা, চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্স ইন্ডাস্ট্রিজ-এর সভাপতি মাহবুবুল আলম, চট্টগ্রাম আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. এ এইচ এম জিয়াউদ্দিন, সানসাইন গ্রামার স্কুলের অধ্যক্ষ সাফিয়া গাজী রহমানসহ কমিটির অন্যান্য সদস্যরা অংশ নেন।
সভায় অবৈধ দখল থেকে হাসপাতালের জমি উদ্ধার, দালাল নির্মূল, হাসপাতাল এলাকা থেকে হকার উচ্ছেদ, জরুরি বিভাগের আধুনিকায়ন ও স্থানান্তরসহ অন্যান্য বিষয়ে আলোচনা হয়। আলোচনা পরবর্তী হাসপাতালের ভূমির সীমানা নির্ধারণে চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার এবিএম আজাদকে আহ্বায়ক করে ৫ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়। বিএমএ চট্টগ্রামের সভাপতি ডা. মুজিবুল হক খান, চমেক উপাধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. নাসির উদ্দিন মাহমুদ, চমেক হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. আফতাবুল ইসলাম ও চট্টগ্রাম আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. এ এইচ এম জিয়াউদ্দিনকে কমিটির সদস্য রাখা হয়েছে। চমেক হাসপাতাল পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এস এম হুমায়ুন কবীর সভা অনুষ্ঠিত হওয়ার তথ্য আজাদীকে নিশ্চিত করেছেন।
অনলাইন সভায় অংশ নেয়া একাধিক সদস্যের সাথে কথা বলে জানা গেছে- হাসপাতালের অভ্যন্তরে দালালের দৌরাত্ম্য প্রতিরোধ ও নির্মূলে প্রয়োজনে আইনশৃক্সখলা রক্ষা বাহিনীর সহায়তায় আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। পাশাপাশি হাসপাতাল এলাকা থেকে হকার উচ্ছেদ ও যানজট নিরসনে পদক্ষেপ গ্রহনের বিষয়েও আলোচনা হয়েছে। এছাড়া হাসপাতালের জরুরি বিভাগকে আধুনিকায়ন ও ওয়ান স্টপ সার্ভিস সেন্টার হিসেবে গড়ে তোলার কাজ দ্রুত সময়ের মধ্যে শুরু করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়। জরুরি বিভাগের সংস্কার কাজের সুবিধার্থে বিদ্যমান জরুরি বিভাগের কার্যক্রম হাসপাতালের পেছনে আউটডোর বিল্ডিং (এনসিলিয়ারি বিল্ডিং)-এর নিচ তলায় স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত হয়েছে। এছাড়া ব্যবস্থাপনা কমিটির গতবারের সভার বেশ কয়টি সিদ্ধান্ত নিয়ে আলোচনা হয়েছে এবারের অনলাইন সভায়।
প্রসঙ্গত, গত ২০ আগস্ট শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলকে চমেক হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি পদে মনোনয়ন দেয় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়। সে হিসেবে নতুন সভাপতির সভাপতিত্বে প্রথমবার ব্যবস্থাপনা কমিটির এ সভা অনুষ্ঠিত হল। তবে সভাপতি ছাড়াও সদস্য সচিব হিসেবে হাসপাতাল পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এস এম হুমায়ুন কবীরেরও এটি প্রথম সভা। কমিটির ২৪ সদস্যের অধিকাংশই গতকালের সভায় অংশ নেন বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।