সীতাকুণ্ডের বিএম কন্টেনার ডিপোতে ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনা চট্টগ্রামে সরকারি হাসপাতালে আইসিইউ (ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিট) সংকটকে ফের সামনে আনল। বিস্ফোরণের পরপর গতকাল রাত ১১টার পর থেকে দগ্ধ ও আহত রোগী চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে আসতে থাকে। ঘণ্টা দুয়েকের মাঝেই রোগীতে ভরে যায় হাসপাতালের বার্ন ইউনিট। এর মাঝে সংকটাপন্ন বেশ কয়জন রোগী পাওয়া যায়। যাদের আইসিইউ জরুরি ছিল।
রাত ২টার দিকে হাসপাতালের আইসিইউ বিভাগে খোঁজ নেন বার্ন ইউনিটের প্রধান ডা. রফিক উদ্দিন আহমেদ। কিন্তু আইসিইউ বিভাগ থেকে একটি শয্যাও খালি না থাকার তথ্য জানানো হয়। ওই সময় বার্ন ইউনিটের বিভাগীয় প্রধানের কক্ষে বসা ছিলেন বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. হাসান শাহরিয়ার কবির ও সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ইলিয়াছ চৌধুরী। তৎক্ষণাৎ তারা যোগাযোগ করেন চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে। সেখানেও এক-দুটির বেশি শয্যা খালি না থাকার তথ্য পাওয়া যায়। পরে চমেক হাসপাতাল পরিচালকের মাধ্যমে সংকটাপন্ন তিনজন রোগীকে চট্টগ্রাম সম্মিলিত সামরিক (সিএমএইচ) হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তাদের আইসিইউতে ভর্তি রাখা হয়। আইসিইউ জরুরি হলে রোববার সকালে দুজন রোগীকে চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। বেসরকারি পার্কভিউ হাসপাতালের আইসিইউতে ভর্তি রয়েছেন আরো দুজন। আর চমেক হাসপাতালের আইসিইউ বিভাগে গতকাল কোন রকমে দুটি শয্যা খালি করে সেখানে দগ্ধ দুজন সংকটাপন্ন রোগীকে রাখা হয়েছে। এ ভাবে আইসিইউ প্রয়োজন পড়লেই বাইরের হাসপাতালে খোঁজ নিতে হচ্ছে সংশ্লিষ্টদের।
যদিও ১২টি থেকে আইসিইউ শয্যা বাড়িয়ে বর্তমানে ২০টিতে উন্নীত করা হয়েছে চমেক হাসপাতালে। আইসিইউ শয্যা বেড়েছে চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালেও। বর্তমানে ১৮টি আইসিইউ শয্যায় সেবা চলমান রয়েছে এ হাসপাতালে। এর বাইরে ফৌজদারহাটের বিআইটিআইডি হাসপাতালেও ৫ শয্যার আইসিইউ স্থাপন করা হয়েছে। এরপরও শনিবারের বিস্ফোরণের ঘটনায় আইসিইউ সংকট সামনে এসেছে। অপ্রতুল আইসিইউ শয্যার বিষয়টি স্বীকার করে চমেক হাসপাতাল পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. শামীম আহসান বলেন, একটি টার্শিয়ারি লেভেলের হাসপাতাল হিসেবে প্রতিনিয়ত এখানে সংকটাপন্ন অনেক রোগী থাকে। যাদের আইসিইউ সেবা প্রযোজন। কিন্তু সে তুলনায় আমাদের আইসিইউ শয্যা অপ্রতুল বলতে হবে। যার কারণে সংকটটা থেকেই যাচ্ছে। চমেক হাসপাতালে আইসিইউ শয্যা আরো বাড়ানো প্রয়োজন বলে মনে করেন তিনি।