আবারও চট্টগ্রাম কাস্টমসের সার্ভার সিস্টেমের ধীরগতির কারণে ভোগান্তির মুখে পড়েছেন সেবাগ্রহীতারা। গতকাল সকাল থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত ৬ ঘণ্টা সার্ভারের কারণে শুল্কায়ন কার্যক্রম হয়েছে থেমে থেমে। তবে বিকেল ৩টার পর থেকে সার্ভারের গতি স্বাভাবিক হলে সেবাগ্রহীতারা স্বস্তির নিশ্বাস ফেলেন।
চট্টগ্রাম কাস্টমসের সেবাগ্রহীতাদের অভিযোগ, কাস্টমসের সার্ভার নিয়ে সমস্যা চলছে দীর্ঘ সময় ধরে। কিন্তু জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সেদিকে নজর নাই। বারবার শুধু সমাধানের আশ্বাস ছাড়া কিছুই মিলছে না। সার্ভারের গতি একদিন স্বাভাবিক থাকে তো, আরেকদিন থাকে না।
সংশ্লিষ্টরা জানান, আমদানি–রপ্তানি বাণিজ্যকে গতিশীল করার লক্ষ্যে ১৯৯৫ সালে চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউসে অটোমেশনের যাত্রা শুরু হয়। এক সময় অ্যাসাইকুডা প্লাস প্লাস ভার্সন থাকলেও ২০১৩ সাল থেকে কাস্টমসে অ্যাসাইকুডা ওয়ার্ল্ড পদ্ধতি চালু হয়। এই পদ্ধতিতে আমদানি রপ্তানি কার্যক্রমের প্রায় সবকিছুই অনলাইনের মাধ্যমে সম্পন্ন করা হচ্ছে। কিন্তু মাঝে মাঝেই সার্ভারের গতি কমে যাওয়া কিংবা বিকল হয়ে যাওয়ার ফলে আমদানিকারকদের দুর্ভোগ পোহাতে হয়। দেখা গেছে, যে কাজ এক মিনিটে হওয়ার কথা সেটি করতে পাঁচ মিনিট লাগছে। কাস্টমসে আমদানি–রপ্তানি মিলে প্রতিদিন গড়ে প্রতিদিন সাড়ে তিন হাজার থেকে চার হাজার পর্যন্ত বিল অব এন্ট্রি দাখিল হয়। আমদানি–রপ্তানি সংশ্লিষ্টদের দাবি, গতকাল সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত বিল অব এন্ট্রি ও বিল অব এঙপোর্ট দাখিল করতে সমস্যা হয়েছে। ফলে পণ্যের শুল্কায়ন ও খালাস কার্যক্রম ব্যাহত হয়েছে।
চট্টগ্রাম কাস্টমস এজেন্টস এসোসিয়েশনের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী রিগ্যান আজাদীকে বলেন, চট্টগ্রামে সার্ভারের সমস্যার কারণে দীর্ঘদিন ধরে আমাদের ভুগতে হচ্ছে। বিষয়টি জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) জানানোর পরেও কোনো কাজ হচ্ছে না। কিছুদিন পর পর সার্ভারের ত্রুটির কারণে বিল অব এন্ট্রি দাখিল করতে বেগ পেতে হচ্ছে। আজ (গতকাল) সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত সার্ভার ত্রুটির কারণে শুল্কায়ন হয়েছে থেমে থেমে। গত দুই তিনদিন ধরে সার্ভারের সমস্যা চরম আকার ধারণ করছে।
এখন আমদানিকারকরা সঠিক সময়ে পণ্য খালাস করতে না পারলে বন্দরের ডেমারেজ গুনতে হবে। একটা বিল অব এন্ট্রি দাখিলসহ শুল্ক কর পরিশোধ করতে যেখানে ৫ মিনিট লাগার কথা, সেখানে আধা ঘণ্টা–একঘণ্টায়ও কাজ হচ্ছে না।
চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউসের আইসিটি শাখার একজন কর্মকর্তা জানান, ইন্টারনেট কানেকশনের সমস্যার কারণে শুল্কায়ন কার্যক্রম কিছুটা ব্যাহত হয়েছে। বিকেলের পর থেকে সমস্যাটি সমাধান হয়ে গেছে। সার্ভারের সমস্যার বিষয়ে এনবিআর অবগত আছে। কিছুদিন আগে এনবিআরের প্রতিনিধি দল এসে চট্টগ্রাম কাস্টমসের রাজস্ব কর্মকর্তা এবং ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলেছেন। মাঝখানে কিছুদিন সার্ভারের সমস্যা কেটে গেলেও এখন আবার সমস্যা শুরু হয়েছে।












