চট্টগ্রাম ওয়াসার সিস্টেম লস ২০ শতাংশে নামিয়ে আনার প্রস্তাব

আজাদী প্রতিবেদন | বুধবার , ২৬ জানুয়ারি, ২০২২ at ৭:২৯ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রাম ওয়াসার বার্ষিক কর্মপরিকল্পনায় সিস্টেম লস ২৮ শতাংশ থেকে ২৩ শতাংশে নামিয়ে আনার প্রস্তাব করা হয়েছে। বর্তমানে ওয়াসার উৎপাদিত পানির সিস্টেম লস ২৮ শতাংশ। কিন্তু ওয়াসার বোর্ড সদস্যরা সিস্টেম লস ২০ শতাংশের মধ্যে নামিয়ে আনার প্রস্তাব করেছেন। বছরের পর বছর ওয়াসার সিস্টেম লস ৩২ থেকে ২৮ শতাংশের নিচে না নামায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তারা। ওয়াসার রাজস্ব বিভাগ থেকে জানা গেছে, গত নভেম্বর মাসে ওয়াসার সিস্টেম লস ছিল ২৮ শতাংশ আর অক্টোবরে ছিল ২৯ শতাংশ।

চট্টগ্রাম ওয়াসার বেশ কয়েকজন বোর্ড সদস্য গতকাল আজাদীকে জানান, ওয়াসার প্রতিটি বোর্ড সভায় সিস্টেম লস নিয়ে সদস্যদের অসন্তোষ থাকে। গত ২৪ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত বোর্ড সভায়ও উৎপাদিত পানির সিস্টেম লস কমানোর প্রস্তাব দেওয়া হয়। ওয়াসায় সিস্টেম লসের নামে পানি চুরি বন্ধ হচ্ছে না। এতে প্রতি মাসে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব হারাচ্ছে ওয়াসা। পানি চুরি বন্ধে কর্তৃপক্ষ নানামুখী পদক্ষেপের দাবি করলেও তা কমছে না।

ওয়াসার এক কর্মকর্তা জানান, দীর্ঘদিন যাবত প্রায় সাড়ে ১০ হাজার গ্রাহকের মিটারবিহীন গড় বিল আদায় হতো। সমপ্রতি এসব গ্রাহককে মিটার প্রদান করায় সিস্টেম লস কিছুটা কম হচ্ছে। কিন্তু সরবরাহ লাইনে লিকেজ ও অবৈধ সংযোগের মাধ্যমে পানি চুরির কারণে সিস্টেম লস কমছে না। অবৈধ সংযোগ প্রক্রিয়ায় ওয়াসার রাজস্ব বিভাগের কতিপয় কর্মকর্তাকর্মচারীর যোগসাজশের বিষয়টি আলোচনায় গুরুত্ব পাচ্ছে। তবে লিকেজ ও অবৈধ সংযোগের কারণে সিস্টেম লস হচ্ছে। সিস্টেম লস প্রতি মাসে ওঠানামা করছে। নতুন পাইপলাইন হয়ে গেলে সিস্টেম লস নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে বলে জানান তিনি।

ওয়াসার বোর্ড সদস্য সাংবাদিক মহসিন কাজী আজাদীকে বলেন, চট্টগ্রাম ওয়াসার সিস্টেম লসের বিষয়ে প্রতিটি বোর্ড সভায় সদস্যদের অসন্তোষ আছে। ২৪ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত ৬৫তম বোর্ড সভায় সিস্টেম লস দেখানো হয়েছে ২৮ পার্সেন্ট। এই নিয়ে বোর্ডের সকল সদস্য ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। চট্টগ্রাম ওয়াসা বার্ষিক যে কর্মপরিকল্পনা নিয়েছে তাতে সিস্টেম লস ২৩ শতাংশে কমিয়ে আনার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। ওয়াসার বোর্ড সদস্যরা সিস্টেম লস ২০ শতাংশের মধ্যে নামিয়ে আনার জন্য বলেছেন। কিন্তু ওয়াসার সিস্টেম লস ৩২ থেকে ২৮ শতাংশের নিচে আর নামে না। সিস্টেম লস হলো ‘ওয়াসার দুষ্টুখাত’। অভিযোগ আছে, সিস্টেম লসে বহুমুখী অনিয়ম আছে। সিস্টেম লস কমানোর ব্যাপারে জোরালো কোনো পদক্ষেপ নেই। ওয়াসার সিস্টেম লস কমানো না গেলে পানি উৎপাদন যতই বাড়াক ‘পানির লাভ পানিতেই যাবে’।

চট্টগ্রাম ওয়াসার রাজস্ব কর্মকর্তা এরফানুল করিম সাজ্জাদ আজাদীকে বলেন, নভেম্বর মাসে আমাদের সিস্টেম লস ছিল ২৮ শতাংশ, অক্টোবরে ছিল ২৯ শতাংশ। ডিসেম্বর মাসেরটা এখনো পাইনি। আসলে নতুন পাইপলাইন না হওয়া পর্যন্ত সিস্টেম লস কমবে না। নতুন পাইপলাইন হয়ে গেলে সিস্টেম লস কমে যাবে। হালিশহর এলাকায় নতুন পাইপ লাইন বসানোর ফলে এখন ওই এলাকার মানুষ ভালোভাবে পানি পাচ্ছে। সিস্টেম লসও কমে গেছে। এছাড়া পুরাতন মিটারে সঠিকভাবে রিডিং হয় না। এই কারণেও সিস্টেম লস হচ্ছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধচট্টগ্রামে শতভাগ শিক্ষার্থী পেয়েছে টিকার প্রথম ডোজ
পরবর্তী নিবন্ধকোনো কর বাড়ানো হবে না, শুধু আওতা বাড়বে : মেয়র