চট্টগ্রামে বেড়েছে প্রাকৃতিক গ্যাসের সরবরাহ, বন্ধ বিদ্যুৎকেন্দ্র চালু

স্বাভাবিক হচ্ছে এলএনজি আমদানি

আজাদী প্রতিবেদন | শনিবার , ৬ মার্চ, ২০২১ at ৫:১০ পূর্বাহ্ণ

চলতি বছরের শুরুতে হঠাৎ করে এলএনজি (লিকুফাইড ন্যাচারাল গ্যাস) আমদানি কমে গেলে সারাদেশে আবাসিক ও বিদ্যুৎ উৎপাদনে ব্যবহৃত গ্যাসের সংকট তৈরি হয়। গ্যাসের অভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয় চট্টগ্রামের সরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর উৎপাদনও। নিট এক হাজার ঘনফুট গ্যাস পাইপলাইনে সরবরাহ দেওয়ার সক্ষমতা থাকলেও জানুয়ারির মাঝামাঝিতে সরবরাহ নেমেছে ২০০ মিলিয়ন ঘনফুটে। তবে এই সংকট ইতোমধ্যে কেটে গেছে। এলএনজি আমদানি স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে। ইতোমধ্যে মহেশখালী এলএনজি টার্মিনাল থেকে দৈনিক ৫০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ শুরু হয়েছে। এতে চট্টগ্রামে গ্যাসের সবররাহ বেড়েছে। উৎপাদন শুরু হয়েছে শিকলবাহা ১৫০ মেগাওয়াট ডুয়েল ফুয়েল পাওয়ার প্লান্টে।
আরপিজিসিএল সূত্রে জানা গেছে, এলএনজি আমদানির পর দুইটি টার্মিনাল (এফএসআরইউ- ফ্লোটিং স্টোরেজ অ্যান্ড রিগ্যাসিফিকেশন ইউনিট) অপারেশনে আসার পর থেকে প্রতিমাসে ৫-৬টি করে আমদানিকৃত এলএনজিবাহী জাহাজ আসতো। বর্তমানে শুধুমাত্র কাতার ও ওমান থেকে জিটুজি পর্যায়ের গ্যাস আমদানি হচ্ছে। এতে গত ডিসেম্বর থেকে মাসে ৪টি জাহাজ আসছে। দাম বেড়ে যাওয়ার কারণে স্পট মার্কেট থেকে আমদানি বন্ধ থাকায় জাহাজ আসাও কমে যায়। এতে এলএনজি সরবরাহ কমে এক পঞ্চমাংশে নেমে যায়।
গ্যাসের সংকট কাটাতে গত ফেব্রুয়ারিতে স্পট মার্কেট থেকে পুনরায় এলএনজি আমদানির সিদ্ধান্ত নেয় মন্ত্রণালয়। সিঙ্গাপুরভিত্তিক একটি প্রতিষ্ঠান থেকে এলএনজি আমদানির প্রস্তাবও অনুমোদন দেয়। পাশাপাশি জিটুজি পর্যায়ে গ্যাস আমদানিও স্বাভাবিক করার পদক্ষেপ নেয় জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ। ফলশ্রুতিতে মার্চ মাসের শুরু থেকে আমদানিকৃত এলএনজি হতে দৈনিক ৫০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ শুরু করেছে আরপিজিসিএল (রূপান্তরিত প্রাকৃতিক গ্যাস কোম্পানি লিমিটেড)।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে আরপিজিসিএলের এক কর্মকর্তা বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বেড়ে যাওয়ার কারণে স্পট মার্কেট থেকে এলএনজি আমদানি কিছুদিন বন্ধ রাখা হয়। এতে সরবরাহও কমে যায়। তবে দাম বাড়লেও সংকট কাটাতে পুনরায় স্পট মার্কেট থেকে এলএনজি আমদানি শুরু হয়েছে। এতে সরবরাহও বেড়েছে। গত ১ মার্চ থেকে দৈনিক ৫০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ দেওয়া শুরু হয়েছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের (কেজিডিসিএল) এক কর্মকর্তা বলেন, গত কয়েকদিন ধরে ধীরে ধীরে গ্যাসের সরবরাহ বেড়েছে। এখন এলএনজি থেকে দৈনিক ৩০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস পাওয়া যাচ্ছে। এরপর থেকে বন্ধ বিদ্যুৎকেন্দ্রে সরবরাহ দেওয়া শুরু হয়েছে।
এদিকে এলএনজি সরবরাহ বেড়ে যাওয়ার ফলে চট্টগ্রামে বন্ধ থাকা শিকলবাহা ১৫০ মেগাওয়াট ডুয়েল ফুয়েল বিদ্যুৎকেন্দ্রের উৎপাদন শুরু হয়েছে। তবে গ্যাস সংকটের কারণে এখনো উৎপাদন বন্ধ রয়েছে শিকলবাহা ২২৫ মেগাওয়াট রিসাইকেল পাওয়ার প্লান্ট, রাউজান তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের সচল এক ইউনিটেও। শিকলবাহা ১৫০ মেগাওয়াট ডুয়েল ফুয়েল বিদ্যুৎকেন্দ্রের ব্যবস্থাপক পিডিবির তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী কামরুদ্দীন আহমদ দৈনিক আজাদীকে বলেন, গ্যাস সরবরাহ বন্ধ থাকায় আমাদের প্লান্টটিতে উৎপাদন বন্ধ ছিল। মার্চ থেকে আমাদের গ্যাস সরবরাহ দেওয়া নিশ্চয়তা পাওয়া গেছে। বৃহস্পতিবার আমাদের প্লান্টে উৎপাদন শুরু হয়েছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধকৌতুক কণিকা
পরবর্তী নিবন্ধনারকেলের কেন এত দাম