বৃহস্পতিবার ১ হাজার ৫৮৭ জনের নমুনা পরীক্ষায় চট্টগ্রামে নতুন করে ৯ জনের শরীরে করোনা সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। পরীক্ষাকৃত নমুনায় শনাক্তের হার দাঁড়িয়েছে ০.৫৬ শতাংশে। শনাক্তের এই হার সামপ্রতিক এক মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন। এর আগে গত ২৭ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রামে করোনা শনাক্তের হার ছিল ০. ৮৯ শতাংশ। ওই দিন ১ হাজার ৫৫৯ জনের নমুনা পরীক্ষায় ১৪ জনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়। অবশ্য এরপর থেকে শনাক্তের হার কিছুটা বাড়লেও তা ৩ শতাংশ ছাড়ায়নি। সর্বশেষ বৃহস্পতিবার শনাক্তের হার পুনরায় ১ শতাংশের নিচে নামল। শেষ ২৪ ঘন্টায় কোন মৃত্যু হয়নি বলে জানিয়েছে সিভিল সার্জন কার্যালয়। তবে আক্রান্তদের মাঝে এ পর্যন্ত ১ হাজার ৩৬২ জনের মৃত্যু হয়েছে চট্টগ্রামে। আর বৃহস্পতিবার পর্যন্ত সবমিলিয়ে চট্টগ্রামে করোনা সংক্রমিত শনাক্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ২৬ হাজার ৫১৯ জনে।
সিভিল সার্জন কার্যালয়ের তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়- নতুন বছরের শুরু থেকেই করোনা সংক্রমণ যেন লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়েছে চট্টগ্রামে। বছরের প্রথম দিন শনাক্তের হার ছিল ১ শতাংশের ঘরে। ২৪ জানুয়ারি শনাক্তের এ হার ৪০ শতাংশে ঠেকে। ফেব্রুয়ারিতে এ হার পর্যায়ক্রমে কমতে থাকে। শেষ ২৪ ঘন্টায় এই হার ১ শতাংশের নিচে নেমেছে। উল্লেখ্য, গত বছরের ২২ নভেম্বর করোনা শনাক্তের হার শূন্যের কোটায় নেমেছিল চট্টগ্রামে। ওই দিন ৭৯২ জনের নমুনা পরীক্ষায় কারও শরীরে ভাইরাসের অস্তিত্ব মেলেনি।
স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, টানা দুই সপ্তাহ সংক্রমণের হার ৫ শতাংশের নিচে থাকলে সংক্রমণ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে বলে ধরে নেয়া হয়। তবে চট্টগ্রামে প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে শনাক্তের হার ৫ শতাংশের ঘরে থাকলেও মাঝখানে একদিন ৫ শতাংশের বেশি ছিল বলে সিভিল সার্জন কার্যালয় জানিয়েছে। সে হিসেবে করোনা পরিস্থিতি এখনই নিয়ন্ত্রণে এসেছে বলার সুযোগ নেই বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. মো. ইলিয়াছ চৌধুরী। অবশ্য শনাক্তের হার এখন যে পর্যায়ে আছে, তা আরো বেশ কিছুদিন স্থায়ী হলে করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসতে পারে বলে আশা প্রকাশ করেছেন তিনি।
ভাইরাস এখনো নির্মূল হয়নি জানিয়ে সিভিল সার্জন বলেন, এখনো সবাইকে সতর্ক ও সচেতন হতে হবে। অবশ্যই মাস্ক পরতে হবে। আর যারা ভ্যাকসিন নেননি, তাদের অবশ্যই ভ্যাকসিন নিতে হবে।
গতি বাড়বে ২য় ও বুস্টার ডোজ প্রয়োগে : চট্টগ্রামের মোট জনসংখ্যার প্রায় ৭০ শতাংশ মানুষ এরইমধ্যে করোনার টিকার প্রথম ডোজের আওতায় এসেছেন বলে সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্র জানিয়েছে। অধিকাংশ মানুষ প্রথম ডোজের আওতায় আসায় এখন ২য় ডোজ ও বুস্টার ডোজ প্রয়োগে গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে জানিয়ে সিভিল সার্জন ডা. মো. ইলিয়াছ চৌধুরী বলেছেন, আমরা চট্টগ্রামের অধিকাংশ মানুষকে টিকার প্রথম ডোজের আওতায় আনতে পেরেছি। এখন যত দ্রুত সম্ভব ২য় ডোজ ও বুস্টার ডোজের আওতায় আনাই লক্ষ্য। এজন্য ২য় ডোজ ও বুস্টার ডোজ প্রয়োগে গতি বাড়ানো হচ্ছে। এরইমধ্যে সব উপজেলায় নির্দেশনা পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে। সিটি কর্পোরেশন এলাকায় সিটি কর্পোরেশনের স্বাস্থ্য বিভাগ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে। আমাদের হাতে যথেষ্ট ভ্যাকসিন রয়েছে। তাই ২য় ডোজ ও বুস্টার ডোজ প্রয়োগে কোন সমস্যা নেই। সবাইকে অবশ্যই ভ্যাকসিন গ্রহনের আহবান জানান সিভিল সার্জন।