চট্টগ্রামে এ পর্যন্ত ৬৫ ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত

৮৬ ভাগই আক্রান্ত জুন-জুলাই মাসে

আজাদী প্রতিবেদন | মঙ্গলবার , ১৯ জুলাই, ২০২২ at ৫:৫৪ পূর্বাহ্ণ

চলতি বছরের ১৭ জুলাই পর্যন্ত সবমিলিয়ে ৬৫ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছে মহানগরসহ চট্টগ্রাম জেলায়। তবে এর ৮৬ ভাগই আক্রান্ত হয়েছেন জুন ও চলতি জুলাই মাসে। মোট ৬৫ জনের ৫৬ জনই এই দেড় মাসে আক্রান্ত। অবশ্য জুন মাসের তুলনায় চলতি জুলাইতে আক্রান্তের সংখ্যা তুলনামূলক বেশি। গত জুন মাসে ২৩ জনের ডেঙ্গুতে আক্রান্তের তথ্য পাওয়া যায়। আর জুলাইয়ের ১৭ দিনে আক্রান্তের সংখ্যা ৩৩ জন। হিসেবে গত এক মাসের তুলনায় চলতি মাসের ১৭ দিনে রোগী শনাক্তের সংখ্যা বেশি। চট্টগ্রাম সিভিল সার্জন কার্যালয় ও চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতাল সূত্রে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।

ডেঙ্গুর ক্ষেত্রে চমেক হাসপাতাল বাদ দিয়ে মহানগর ও জেলার সরকারি-বেসরকারি অন্যান্য হাসপাতালের তথ্য সংগ্রহ ও সংরক্ষণ করে থাকে সিভিল সার্জন কার্যালয়। আর চমেক হাসপাতালের তথ্য সরাসরি পাঠানো হয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে। সিভিল সার্জন কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে ১৭ জুলাই পর্যন্ত ৪৫ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছে। এর মাঝে গত জুন মাসে ১৭ জন এবং চলতি জুলাই মাসের ১৭ দিনে শনাক্ত হয়েছে ২২ জন। অর্থাৎ মোট শনাক্ত ৪৫ জনের মধ্যে শেষ দেড় মাসেই আক্রান্ত হয়েছে ৩৯ জন। আর বাকি ৬ জন শনাক্ত হয় এর আগে (জানুয়ারি থেকে মে মাসে)।

সিভিল সার্জন কার্যালয়ের জেলা কীটতত্ত্ববিদ এন্তেজার ফেরদৌস আজাদীকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন। শনাক্ত প্রায় সব রোগীই সুস্থ হয়ে বাসায় ফিরে গেছেন জানিয়ে এন্তেজার ফেরদৌস বলেন, আক্রান্তদের মাঝে কেবল একজন রোগী বেসরকারি ইমপেরিয়াল হাসপাতালে ভর্তি আছেন। আর চলতি মৌসুমে ডেঙ্গু আক্রান্ত কোনো মৃত্যুর তথ্য পাওয়া যায়নি।

এদিকে, ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে এ পর্যন্ত ২০ জন চিকিৎসা নিয়েছে চমেক হাসপাতালে। অবশ্য আক্রান্তদের মাঝে এ পর্যন্ত কারো মৃত্যু হয়নি বলে জানিয়েছেন চমেক হাসপাতাল পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. শামীম আহসান। ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে বর্তমানে ৪ জন রোগী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন জানিয়ে হাসপাতাল পরিচালক বলেন, বর্ষা মৌসুমে ডেঙ্গুর প্রকোপের শঙ্কা থাকেই। আর আক্রান্তদের চিকিৎসায় আমাদেরও সার্বিকভাবে প্রস্তুতি রয়েছে। মেডিসিনের তিনটি ওয়ার্ডে আলাদা ডেঙ্গু কর্ণার স্থাপন করা আছে। সেখানেই আক্রান্তদের চিকিৎসা দেয়া হয়ে থাকে। এই সময়ে এসে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা পর্যায়ক্রমে বাড়ছে।

ডেঙ্গুর প্রকোপ থেমে নেই উল্লেখ করে সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ইলিয়াছ চৌধুরী বলেন, বিশেষ করে বর্ষা মৌসুমে ডেঙ্গুর প্রকোপ বেড়ে যায়। এবারও মানুষ জ্বরে আক্রান্ত হয়েছে ঠিকই, তবে বেশির ভাগই ডেঙ্গু পরীক্ষা করেনি বা করাচ্ছে না। অনেকে আবার কোনো পরীক্ষা না করে বাসায় বসেই চিকিৎসা নিচ্ছে। করোনার পাশাপাশি ডেঙ্গু নিয়েও সতর্ক হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন সিভিল সার্জন।

সিভিল সার্জন কার্যালয়ের তথ্য বলছে, ২০১৯ সালে মহানগরসহ চট্টগ্রাম জেলায় (চমেক হাসপাতালের তথ্যসহ) ২ হাজার ৫৪৮ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়। মৃত্যু হয় অন্তত ৭ জনের। চমেক হাসপাতালের তথ্য ছাড়া ২০২০ সালে ১৭ জন ডেঙ্গু আক্রান্তের তথ্য জানায় সিভিল সার্জন কার্যালয়। সঠিক ভাবে রিপোর্টিং না হওয়ায় ওইবছর ডেঙ্গু আক্রান্তের প্রকৃত চিত্র আসেনি বলে জানান সংশ্ল্লিষ্টরা।

পরের বছরের (২০২১ সালের) তথ্যেও এর প্রমাণ পাওয়া যায়। গত বছর (২০২১ সালে) সবমিলিয়ে ৫৫০ জনেরও বেশি রোগী শনাক্তের তথ্য পাওয়া যায় চট্টগ্রামে। আর আক্রান্তদের মাঝে অন্তত ৮ জনের মৃত্যুর তথ্য জানায় সিভিল সার্জন কার্যালয়।

পূর্ববর্তী নিবন্ধজিইসিতে নারীকে গণধর্ষণের অভিযোগ, আটক ৩
পরবর্তী নিবন্ধঅফিস চলাকালে এসির ব্যবহার কমানোর পরামর্শ