চট্টগ্রামবাসীর ভোট চাইলেন প্রধানমন্ত্রী

পলোগ্রাউন্ডের জনসভায় জনসমুদ্র ।। বিএনপির দুই গুন, ভোট চুরি আর মানুষ খুন খুনিরা যেন আর ক্ষমতায় আসতে না পারে চট্টগ্রামেও মেট্রোরেল করতে যাচ্ছি, সমীক্ষা শুরু করছি ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ককে ছয় লেনে উন্নীত করব চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক করছি, সঙ্গে রেললাইনও বে টার্মিনাল ও কালুরঘাটে রেল-কাম রড়ক সেতু করছি

আজাদী প্রতিবেদন | সোমবার , ৫ ডিসেম্বর, ২০২২ at ৬:২১ পূর্বাহ্ণ

এক দশক পর গতকাল পলোগ্রাউন্ডের জনসভার জনসমুদ্রে চট্টগ্রামবাসীর আছে আবারও নৌকায় ভোট চাইলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আপনাদের কাছ থেকে শুধু একটা ওয়াদা চাই, নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে আপনারা জনগণের জন্য কাজ করার সুযোগ দিয়েছেন। আগামী নির্বাচনে আমি আপনাদের কাছে ওয়াদা চাই, আগামী নির্বাচনেও আপনারা নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে আওয়ামী লীগকে সেবা করার সুযোগ দেবেন কিনা। আপনারা হাত তুলে ওয়াদা করেন। এ সময় উপস্থিত নেতাকর্মীরা হাত তুলে উচ্চস্বরে সমর্থন জানিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে নৌকায় ভোট দেওয়ার ওয়াদা করেন।

বিএনপির আন্দোলনের সমালোচনা করে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপির দুই গুণ, ভোট চুরি আর মানুষ খুন। ২০১৪ সালে বিএনপি নির্বাচনে যাবে না। ২০১৩ থেকে শুরু করল অগ্নিসন্ত্রাস। লঞ্চ-ট্রেন-রাস্তায় আগুন। গাছ কেটে ফেলছে। চারিদিকে শুধু অগ্নিসন্ত্রাস। যাদের মধ্যে মনুষত্ব আছে তারা কী এভাবে মানুষ পুড়িয়ে হত্যা করতে পারে? তাদের আন্দোলন হচ্ছে মানুষ খুন করা। ভোট পাবে না বলে বিএনপি নির্বাচনে না গিয়ে সরকার উৎখাত করে ক্ষমতা দখল করতে চায়।

তিনি বলেন, এ বাংলার মাটিতে আবার যেন ওই যুদ্ধাপরাধী, খুনির দল ক্ষমতায় এসে মানুষের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলতে না পারে তার জন্য সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। এ বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য নিয়ে আর ছিনিমিনি খেলতে আমরা দিব না। কারণ, ওই জামায়াত-বিএনপি খুনির দল, যুদ্ধাপরাধীর দল। জাতির পিতার হত্যাকারীদের মদত দানকারীর দল। আমাকেও বারবার হত্যা করার চেষ্টা করেছে। এরা যেন বাংলাদেশের মানুষের রক্ত চুষে খেতে না পারে, আর যেন তারা এ দেশে আসতে না পারে।

গতকাল বিকাল ৩টা ৪৫ মিনিটে পলোগ্রাউন্ড মাঠে চট্টগ্রাম মহানগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বিকাল ৪টা ৩৫ মিনিট পর্যন্ত বক্তব্য রাখেন। প্রধানমন্ত্রীর ৫০ মিনিটের বক্তব্যে ছিল দেশের উন্নয়ন-অগ্রগতি, চট্টগ্রামের মেগা প্রকল্প, কর্ণফুলীর তলদেশে নির্মিত বঙ্গবন্ধু টানেল, কঙবাজার রেললাইন, চট্টগ্রাম-কঙবাজার মহাসড়ককে ৪ লাইনের উন্নীতকরণ, চট্টগ্রাম-ঢাকার ৪ লাইনকে ৬ লাইনে উন্নীতকরণ, চট্টগ্রাম মহানগরীতে মেট্রোরেলের সমীক্ষা, কালুরঘাটে রেল-কাম সড়ক সেতু নির্মাণ এবং বিএনপি-জামায়াতের জ্বালাও-পোড়াওয়ের কথা।

এর আগে বিকেল ৩টা ৭ মিনিটে লাখো নেতাকর্মীর অপেক্ষার প্রহর শেষে পলোগ্রাউন্ড এসে উপস্থিত হন প্রধানমন্ত্রী। এর আগে ভাটিয়ারীতে বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমিতে রাষ্ট্রপতি কুচকাওয়াজে অংশ নেন। পরে হেলিকপ্টারে করে এম এ আজিজ স্টেডিয়ামে নামেন। সেখান থেকে লালখান বাজার মোড় ও টাইগারপাস হয়ে পলোগ্রাউন্ড মাঠে আসেন। তাঁর পলোগ্রাউন্ড মাঠে আসার সাথে সাথে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক মো. মমিনুর রহমানের সঞ্চালনায় মাঠে ২৯টি প্রকল্প উদ্বোধন করেন এবং ৬টি প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তার স্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী।

আপনাদের জন্য উপহার নিয়ে এসেছি : প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজকে এই বিজয়ের মাসে আমি আপনাদের জন্য উপহার নিয়ে এসেছি। কিছুক্ষণ আগে ২৯টি প্রকল্প উদ্বোধন করেছি। ছয় প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছি। এটা বিজয়ের মাসে চট্টলাবাসীর জন্য আমার উপহার।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসলে দেশের উন্নয়ন হয়। এই চট্টগ্রামের উন্নয়ন হয়। যখন থেকে আমরা ক্ষমতায় এসেছি, এই চট্টগ্রামে প্রথম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর আমরা করেছি। ঢাকা-চট্টগ্রাম চার লেন মহাসড়ক করেছি। এই মহাসড়ককে আমরা ছয় লেনে উন্নীত করব। চট্টগ্রাম থেকে কঙবাজার আমরা রাস্তা নির্মাণ করে দিচ্ছি। সঙ্গে সঙ্গে রেললাইন করছি। এই চট্টগ্রামেও মেট্রোরেল করতে যাচ্ছি। এজন্য সমীক্ষা শুরু করেছি। চট্টগ্রাম বন্দর সম্প্রসারণের জন্য বে টার্মিনাল করছি। কালুরঘাটে রেল-কাম সড়ক সেতু করছি। কঙবাজারেও আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর করছি। এই চট্টগ্রামে মেডিকেল কলেজ, চারটি বিশ্ববিদ্যালয়, মেরিটাইম ইউনিভার্সিটি, মেরিন অ্যাকাডেমি-এমন কোনো প্রতিষ্ঠান নাই আমরা করে দেই নাই। প্রত্যেকটা জেলা-উপজেলায় আমরা সরকারি কলেজ করে দিয়েছি।

যাতে আমাদের ছেলেমেয়েরা লেখাপড়া করতে পারে। তারা বিএনপি-জামায়াতের মতো খুনি, দুর্নীতিবাজ ও লুটেরা হবে না। তারা সত্যিকারের দেশপ্রেমিক হবে।
খালেদা জিয়াকে উদ্দেশ্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই লালদীঘির ময়দানে ১৯৮৮ সালের ২৪ জানুয়ারি জনসভা করতে গিয়েছিলাম। সেই সভায় নির্বিচারে গুলি চালিয়েছিল তখনকার এরশাদ সরকার। কিন্তু আমি অবাক হয়ে যাই, সেই জনসভায় গুলি চালানোর দায়িত্ব যে নিয়েছিল রকিবুল হুদা, সেই রকিবুল হুদাকে প্রমোশন দিয়েছিল খালেদা জিয়া। খালেদা জিয়াও নিশ্চয় সেই হামলায় জড়িত ছিল। না হলে তাকে পুলিশ প্রধান করত না। সেই ২৪ জানুয়ারি গুলি করে আমাদের ৩০ জন নেতাকর্মীকে হত্যা করে। সেদিন আমিও গুলির আঘাতে মারা যেতে পারতাম। কিন্তু নেতাকর্মীরা মানবঢাল রচনা করে আমাকে রক্ষা করে। সেই সময় আমাদের নেতাকর্মীদের ওপর অকথ্য নির্যাতন করা হয়।

তিনি বলেন, জিয়াউর রহমান আওয়ামী লীগের কত নেতাকে হত্যা করেছে। বিমান বাহিনী, সেনাবাহিনীর হাজার হাজার অফিসার ও সৈনিককে হত্যা করেছে। আওয়ামী লীগের মৌলভী সৈয়দকে তুলে নিয়ে দিনের পর দিন নির্যাতন করে হত্যা করে। একইভাবে আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকে হত্যা করেছে খালেদা জিয়াও। খুব বেশিদিন আগের কথা না, ২০০১-এর নির্বাচনের পর চট্টগ্রামের অনেকেই বিএনপির তাণ্ডব থেকে রক্ষা পায়নি। বিএনপি-জামায়াত জোট সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ দিতে পারে, এর বেশি কিছু দিতে পারে না। পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট জাতির পিতাকে হত্যা করে কারা ক্ষমতায় এসেছে? সেই স্বাধীনতাবিরোধী, রাজাকারের দোসর, জাতির পিতার খুনিরা। যে কারণে বাংলাদেশ আর সামনে এগোতে পারেনি। জাতির পিতার নেতৃত্বে এই মানুষ যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছিল। আমরা বিজয়ী জাতি। মুক্তিযুদ্ধের সেই চেতনা, আদর্শ আমরা ধারণ করি। তবে জাতির পিতাকে হত্যার মধ্য দিয়ে সেই আদর্শকে বিসর্জন দেওয়া হয়েছিল। বঙ্গবন্ধুর নাম মুছে ফেলা হয়েছিল। এমনকি যে জয় বাংলা স্লোগান দিয়ে লাখো শহীদ বুকের রক্ত দিয়েছে, সেই স্লোগানও নিষিদ্ধ করেছিল ওই খালেদা জিয়া গংরা জামায়াতের সঙ্গে হাত মিলিয়ে। আজকে জয় বাংলা স্লোগান ফিরে এসেছে। জাতির পিতার ৭ই মার্চের ভাষণ আন্তর্জাতিক মর্যাদা পেয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি বিজয়ের মাসে সামনে আপনাদের সামনে এসেছি। ১৯৭১ সালে ২৫ মার্চ পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী গণহত্যা শুরু করেছিল। সঙ্গে সঙ্গে জাতির পিতা যখন স্বাধীনতার ঘোষণা দেন তাকে গ্রেপ্তার করে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যায়। কিন্তু ৭ই মার্চের ভাষণে যে নির্দেশ জাতির পিতা দিয়েছিলেন, বাংলাদেশের মানুষ তা অক্ষরে অক্ষরে মান্য করেছিল এবং সেভাবেই যুদ্ধ করে বিজয় লাভ করি। ঠিক পরাজয়ের আগে ওই পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী বুদ্ধিজীবী হত্যা শুরু করে। ১০ ডিসেম্বর ইত্তেফাকের সাংবাদিক সিরাজ উদ্দিনকে তারা তুলে নিয়ে যায়। এমন বহুজনকে তুলে নিয়ে ১০ ডিসেম্বর থেকে তারা বুদ্ধিজীবী হত্যা শুরু করে। পরাজয় নিশ্চিত জেনে এই দেশ যেন সামনে চলতে না পারে সেই কথা মাথায় রেখেই এই ঘটনা তারা ঘটায়। অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে বলতে হয়, সেই ১০ ডিসেম্বর বিএনপির খুব পছন্দের একটা তারিখ। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর দোসর ছিল বলেই তারা নাকি ১০ ডিসেম্বর ঢাকার সড়ক দখল করবে আর আওয়ামী লীগ সরকারকে উৎখাত করবে। আমি তাদের একটা কথা বলে দিতে চাই, খালেদা জিয়া ১৯৯৬ সালে জনগণের ভোট চুরি করে ক্ষমতায় এসেছিল। আর ভোট চুরি করে ক্ষমতায় এসেছিল বলেই তাকে বাংলাদেশের মানুষ মেনে নেয় নাই। সারা বাংলাদেশ ফুঁসে উঠেছিল। জনতার মঞ্চ করেছিলাম আমরা। খালেদা জিয়া বাধ্য হয়েছিল পদত্যাগ করতে। ৩০ মার্চ অর্থাৎ দেড় মাসও টিকতে পারেনি। সে কথা বিএনপির মনে রাখা উচিত। জনগণের ভোট যদি কেউ চুরি করে বাংলাদেশের মানুষ তা মেনে নেয় না। তারা ভোটে যেতে চায় না। তারা ভাবে, জিয়াউর রহমান যেভাবে জাতির পিতাকে হত্যা করে সংবিধান ও সেনা আইন লঙ্ঘন করে ক্ষমতা দখল করেছিল তারাও সেভাবে ক্ষমতায় যাবে। গণতান্ত্রিক ধারা বিএনপি পছন্দ করে না। আজকে গণতান্ত্রিক ধারা আছে বলেই বাংলাদেশের উন্নয়ন হয়েছে। দীর্ঘদিন গণতন্ত্র আছে বলেই এই দেশ এগিয়ে যাচ্ছে।

তিনি বলেন, আমরা উন্নয়ন করি, মানুষের কল্যাণে। আর বিএনপি মানুষ খুন করে মিথ্যা কথা বলে আর বিভ্রান্ত করে। এটাই তাদের কাজ। তারা গ্রেনেড ও বোমা মারতে পারে। এই চট্টগ্রামেও তারা বারবার গুলি চালিয়েছে, গ্রেনেড মেরেছে। বাংলাদেশ জুড়ে ৬৩টা জেলায় ৫০০ জায়গায় বোমা হামলা করেছে। জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস, এগুলো তারা সৃষ্টি করেছে। বাংলাদেশের মানুষকে তারা শান্তিতে থাকতে দেয়নি। তারা মানুষের শান্তি চায় না। ক্ষমতায় থেকে কী করেছে, দুই হাতে লুটপাট। অর্থপাচার করেছে, নিজেরা অর্থসম্পদের মালিক হয়েছে। জিয়াউর রহমান যখন মারা যায় তখন বলা হয়েছিল কিছুই রেখে যায়নি। একটা ভাঙা সুটকেস ও ছেঁড়া গেঞ্জি ছাড়া কিছু ছিল না। আমার প্রশ্ন, খালেদা জিয়া ক্ষমতায় আসতে না আসতে হাওয়া ভবন খুলে তার ছেলে যে চাঁদাবাজি ও অর্থপাচার করেছে, রাতারাতি আঙুল ফুলে কলাগাছ হয়েছে, হাজার হাজার কোটি টাকার মালিক হয়েছে, এগুলো কোথা থেকে এলো। ভাঙা সুটকেসটা তো আর জাদুর বাঙ হয়ে যায়নি।

শেখ হাসিনা বলেন, খালেদা জিয়ারা পারে মানুষ হত্যা করতে। তারা পাকিস্তানের দোসরদের সঙ্গে এক হয়ে সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে। আর আওয়ামী লীগ শান্তিতে বিশ্বাস করে। আমরা এলে মানুষ শান্তিতে থাকে। ২০১৪-তে বিএনপি নির্বাচনে যাবে না। ২০১৩ থেকে শুরু করল অগ্নিসন্ত্রাস। লঞ্চে, ট্রেনে, বাসে, রাস্তায় আগুন। তিন হাজার মানুষ অগ্নিসন্ত্রাসে আহত হয়েছে। ৫০০ মারা গেছে। সাড়ে তিন হাজার গাড়ি তারা পুড়িয়েছে। তার সঙ্গে লঞ্চ-ট্রেন আছে। যাদের মধ্যে মনুষ্যত্ব আছে তারা এভাবে মানুষ মারতে পারে না। তাদের আন্দোলন হচ্ছে মানুষ খুন করা। তাদের গুণ দুটি, ভোট চুরি আর মানুষ খুন। তারা জানে, নির্বাচন হলে জনগণ তাদের ভোট দেবে না। তাই তারা নির্বাচন চায় না। তারা চায় সরকার উৎখাত করে এমন কিছু আসুক যা তাদের নাগরদোলায় করে ক্ষমতায় বসিয়ে দেবে। তারা জনগণের তোয়াক্কা করে না। আমরা জনগণের জন্য কাজ করি।

তারেক লন্ডনে বসে দেশের ভেতরে বোমাবাজি করে : প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজকে খালেদা জিয়া কারাগারে কেন? বিদেশ থেকে টাকা এসেছে এতিমের জন্য। সেই টাকা আর এতিমের হাতে যায়নি। সব নিজেরা পকেটে ঢুকিয়েছে। ২০০৭ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকার মামলা করেছে। সেই মামলায় ১০ বছরের সাজা হয়েছে। তার ছেলে একটা তো (আরাফাত রহমান কোকো) মারা গেছে। তার পাচার করা টাকা আমরা সিঙ্গাপুর থেকে কিছুটা এনেছি। আরেকজন কুলাঙ্গার (তারেক রহমান) বানিয়ে রেখেছে জিয়াউর রহমান। সে এখন লন্ডনে বসে আছে। সে গেল কেন লন্ডনে? ২০০৭ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কাছে মুচলেকা দিয়ে আর কোনোদিন রাজনীতি করবে না বলে দেশ থেকে পালিয়েছিল। সেখানে রাজার হালে থাকে। আর দেশের ভেতরে যত বোমাবাজি, খুনখারাপি, নাশকতা সবগুলো সেখানে বসে পরিচালনা করে।

ডিজিটাল বাংলাদেশ করেছি : শেখ হাসিনা বলেন, আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশ করেছি। আপনারা জানেন, জাতির পিতা রাঙামাটিতে ভূ-উপগ্রহ কেন্দ্র করে গেছেন। আমরা স্যাটেলাইট বঙ্গবন্ধু-১ উৎক্ষেপণ করে বাংলাদেশকে স্যাটেলাইট জগতে নিয়ে গেছি। আজকে সমগ্র বাংলাদেশে আমরা ব্রডব্যান্ড ও ইন্টারনেট চালু করেছি। পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে শুরু করে সমগ্র বাংলাদেশে আমরা ডিজিটাল ফোন দিয়েছি। আপনাদের হাতে ফোন আছে না? কে দিয়েছে এই ফোন, আওয়ামী লীগ সরকার। আমরা দিয়েছি, বিএনপির আমলে না। বিএনপির সময়ে একজন মন্ত্রী ছিল, পররাষ্ট্রমন্ত্রী। আপনাদের চট্টগ্রামেরই লোক। সে একটা মোবাইল ফোনের কোম্পানি খুলেছিল। একটা মোবাইল ফোন কিনতে এক লাখ ৩০ হাজার টাকা লাগত। আর এক মিনিট ফোন করতে ১০ টাকা লাগত। ঢাকা-চট্টগ্রাম ছাড়া আর কোথাও পাওয়া যেত না। আওয়ামী লীগ সরকার এসে এই মোবাইল ফোন উন্মুক্ত করে দিয়েছে। বাংলাদেশে ডিজিটাল সেন্টার করে দিয়েছি। যাদের কাছে ল্যাপটপ নাই, মা-বোনেরা প্রবাসে থাকা স্বজনদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সের সঙ্গে কথা বলতে পারেন। বছরের পর বছর তারা বিদেশে থাকে, আগে দেখতে পারত না, এখন পারে।

কে করেছে এটা? আওয়ামী লীগ সরকার। আমরা প্রযুক্তি ও শিক্ষা দেওয়ার জন্য প্রতিটা স্কুলে ডিজিটাল ল্যাবরোটরি খুলে দিচ্ছি। বিএনপি কী করেছে? ওই বোমাবাজি, ২১ আগস্ট, ২০০৪ সাল। সিলেটে ব্রিটিশ হাইকমিশনারের ওপর গ্রেনেড মেরেছিল। আমাদের ছাত্রলীগ নেতা তুষারকে হত্যা করা হয়েছিল। আমরা র‌্যালি করতে গিয়েছিলাম, সেখানে আমাদের ওপর গ্রেনেড হামলা করল। সেই হামলায় আমাদের আইভি রহমান মারা গেছে। মোট ২২ জন নেতা মারা গিয়েছিল সেদিন। আমাকে মানবঢাল তৈরি করে আমার নেতাকর্মীরা বাঁচিয়েছিল। সেদিন সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় ১৩টা গ্রেনেড মারা হয়েছিল। আমি হয়তো বেঁচে নাও থাকতে পারতাম।

বিএনপির দুই গুণ, ভোট চুরি আর মানুষ খুন : বিএনপির সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপি-জামায়াত, যুদ্ধাপরাধী, স্বাধীনতাবিরোধীরা যাতে আর ক্ষমতায় আসতে না পারে সেজন্য সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। তাদের আন্দোলন হচ্ছে মানুষ খুন করা। বিএনপির দুইটা গুণ আছে, ভোট চুরি আর মানুষ খুন; ওইটা পারে।

তিনি বলেন, ওরা (বিএনপি) জানে ইলেকশন হলে জনগণ তাদের ভোট দেবে না। তাই তারা ইলেকশন চায় না। তারা সরকার উৎখাত করে, এমন কিছু আসুক যারা একেবারে নাগরদোলায় করে ক্ষমতায় বসিয়ে দেবে-এটাই তারা আশা করে, এটাই তাদের বাস্তবতা। তারা জনগণের তোয়াক্কা করে না।

তিনি বলেন, ওরা ভোটে যেতে চায় না। জিয়াউর রহমান যেমন জাতির পিতাকে হত্যা করে, সংবিধান লঙ্ঘন করে, সেনা আইন লঙ্ঘন করে ক্ষমতা দখল করেছিল। ওদের ধারণা ওইভাবেই তারা ক্ষমতায় যাবে। গণতান্ত্রিক ধারা তারা পছন্দ করে না।

২০১৩, ১৪, ১৫ সালে বিএনপির আন্দোলনের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, অগ্নি সন্ত্রাস করে মানুষ হত্যা, মানুষকে অগ্নিদগ্ধ করার জবাব একদিন খালেদা জিয়া-তারেক জিয়াকে দিতে হবে, এর হিসাব একদিন জনগণ নেবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই পার্বত্য চট্টগ্রামে জিয়াউর রহমান কী অবস্থা সৃষ্টি করে রেখেছিল, সেখানে প্রতিনিয়ত সংঘাত হতো। ৯৬ সালে ক্ষমতায় এসে আমরা সেখানে শান্তিচুক্তি করি। মাত্র কয়েক দিন আগে পার্বত্য চট্টগ্রামে ৪৫টি রাস্তা আর সারা বাংলাদেশে একসঙ্গে ১০০টি সেতু আমরা উদ্বোধন করেছি। পার্বত্য চট্টগ্রামের মানুষের জন্য কল্যাণ আওয়ামী লীগ সরকারই করেছে।

রিজার্ভ এখন ৩৪ বিলিয়ন ডলার : রিজার্ভ এবং ব্যাংকে টাকা নেই বলে গুজব ছড়ানো হচ্ছে অভিযোগ করে শেখ হাসিনা বলেন, একটা গুজব ছড়ানো হচ্ছে, ডিজিটাল বাংলাদেশ করেছি আমি, আর সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করে অপপ্রচার করছে। অথচ এই কয়েক দিনে যারা টাকা তুলতে গেছে তারা সবাই তো টাকা তুলতে পেরেছে। কেউ ব্যাংক থেকে টাকা না পেয়ে ফেরত এসেছে কিনা জানতে চান প্রধানমন্ত্রী।

মানুষকে বিভ্রান্ত না হওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, এখানে আমার একটা কথা আছে। আপনি ব্যাংকে টাকা রাখবেন না আপনি খাটের নিচে, বালিশের নিচে না আলমারিতে রাখবেন; চোরেও তো নিয়ে যেতে পারে। গুজবে মানুষ বিভ্রান্ত হয়। টাকা তুলে ঘরে আনে। আবার টাকা নিয়ে ব্যাংকে জমা রাখে।

বিএনপি-জামায়াতের সঙ্গে চোরের সখ্যতা আছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, এই যে মানুষের সর্বনাশ করা এটাই কী বিএনপি-জামায়াত শিবিরের কাজ? আমরা যখন ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় আসি, রিজার্ভ কত ছিল? ২.৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। আমরা কষ্ট করে রিজার্ভ বাড়ালাম। আমরা যখন দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় আসি মাত্র ৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার রিজার্ভ ছিল। সেটাকে ৪৮ বিলিয়নে নিয়েছিলাম। আমাদের এখনো ৩৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার রিজার্ভ আছে।

রির্জাভের টাকা যে খাতে খরচ হয়েছে তা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা রির্জাভের টাকা খরচ করেছি মানুষের জন্য খাদ্য কিনতে। বিনা পয়সায় খাদ্য দিয়েছি। বিশেষ প্রণোদনা দিয়েছি ব্যবসায়ীদের। তাদের ব্যবসা-বাণিজ্য যাতে চলতে পারে। শ্রমিকদের বেতন তাদের হাতে পৌঁছে দিয়েছি। কৃষকদেরকে আমরা টাকা দিয়েছি, যাতে তারা চাষবাস করতে পারে। আমরা ওষুধ কিনেছি। ভ্যাকসিন কিনেছি। সিরিঞ্জ আনতে হয়েছে। সেখানে কিনতে পারিনি স্পেশাল প্লেন পাঠিয়ে দিয়ে আমরা নিয়ে এসেছি। কেন? আমার দেশের মানুষকে বাঁচাতে হবে। এখনো আমরা করোনার টেস্টিং, ভ্যাকসিন বিনে পয়সায় করি। কই? আমেরিকা, ইংল্যান্ড, ইউরোপ থেকে শুরু করে কেউ দেয় নাই। একমাত্র বাংলাদেশ; বিনে পয়সায় আমরা দিচ্ছি। কাদের জন্য? জনগণের জন্য। কারণ আমরা জনগণের জন্য কাজ করি।
বাজেট দিয়েছি ৬ লক্ষ ৭৮ হাজার ৬৪ কোটি টাকার : বাজেটের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, খালেদা জিয়ার বাজেট ছিল মাত্র ৬৪ হাজার কোটি টাকা। আমরা সেখানে বাজেট দিয়েছি ৬ লক্ষ ৭৮ হাজার ৬৪ কোটি টাকার। আমি জিজ্ঞাসা করি, বিএনপি ক্ষমতায় থাকলে এত বাজেট দিতে পারত? পারত না। আমরা সকল সরকারি কর্মচারী অফিসার সকলের বেতন-ভাতা বাড়িয়েছি। স্কুল-কলেজ জাতীয়করণ করেছি। আমাদের প্রত্যেকটা কাজ ছিল গণমুখী। তারা তো করেই নাই, উল্টো আরও এদেশের মানুষের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলেছে।

৩৫ লক্ষ মানুষকে ঘর করে দিয়েছি : বাংলাদেশের মানুষ ভূমিহীন থাকবে না বলে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা দেশের কল্যাণ চাই। দেশের মানুষের জন্য কাজ করি। এ বাংলাদেশে একটি মানুষও ভূমিহীন থাকবে না, ঘরবিহীন থাকবে না। ৩৫ লক্ষ মানুষকে আমরা ঘর করে দিয়েছি বিনে পয়সায়।

তিনি বলেন, বঙ্গোপসাগরে বাংলাদেশের অধিকার আছে, এই আইন জাতির পিতা করে গেছেন। আমার প্রশ্ন বিএনপির কাছে, কিন্তু বিএনপি এই আইন ও অধিকার বাস্তবায়নের পদক্ষেপ কেন নেয়নি। এই যে সমুদ্রে আমাদের অধিকার এটা তারা জানেই না। বাংলাদেশকে চেনে না। জিয়ার জন্ম কলকাতায় আর পড়াশোনা করেছে করাচিতে। করাচি থেকে কমিশনে সেনাবাহিনীতে ঢুকে পোস্টিংয়ে বাংলাদেশে আসে। এরা তো জানার কথা না, ওই জ্ঞানও তাদের নেই। একটা তো মেট্রিক ফেল, আরেকটা এইট পাস, আরেকটা কোনোমতে ইন্টার পাস। সমুদ্রসীমা আইন কী তারা জানবে কী করে। আমরা ক্ষমতায় আসার পর সেই সমুদ্রসীমা জয় করেছি। আজ সেগুলো আমাদের কাজে লাগবে। আমাদের অধিকার আমরা নিশ্চিত করেছি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাবা-মা, ভাই সব হারিয়ে ফিরে এসেছি বাংলার মানুষের কাছে এই জন্য যে, এই দেশের মানুষ দুবেলা পেট ভরে ভাত খাবে, তাদের বাসস্থান হবে, চিকিৎসা হবে, শিক্ষা হবে, উন্নত জীবন পাবে। বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধে বিজয় অর্জনকারী দেশ, সেই বিজয়ী জাতি হিসেবে বিশ্ব দরবারে মাথা উঁচু করে চলবে। আমরা যেন সেভাবে বাংলাদেশকে গড়তে পারি। আমরা আপনাদের দোয়া, সহযোগিতা ও ভোট চাই। কারণ, যাতে যুদ্ধাপরাধী ও খুনিরা আবার ক্ষমতায় এসে বাংলাদেশের জনগণের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলতে না পারে।

শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সারাটা জীবন এ দেশের মানুষের জন্য সংগ্রাম করেছেন। ছয় দফা দিয়ে চট্টগ্রামেই তিনি জনসভা করেছিলেন। আজকে সেই স্বাধীনতা আমরা পেয়েছি।

আবেগাপ্লুত প্রধানমন্ত্রী : বক্তব্যের এক পর্যায়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, স্বজন হারানোর কষ্ট, এটা আমরা যারা ১৫ আগস্ট আপনজন হারিয়েছি আমরা জানি। ১৫ আগস্ট শুধু আমার বাবা বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবকেই হত্যা করেনি, একইসঙ্গে আমার মাকে হত্যা করেছে। এ সময় আবেগাপ্লুত প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমার পরিবারের ১৮ জন সদস্যকে নির্মমভাবে হত্যা করেছে। আমি আর আমার ছোট বোন শেখ রেহানা বিদেশে ছিলাম। মাত্র ১৫ দিন আগে বিদেশে গিয়েছিলাম। কিন্তু ভাবতেও পারিনি; হঠাৎ একদিন আমরা এতিম হয়ে যাব। এরপর ছয়টা বছর দেশে আসতে পারিনি। জিয়াউর রহমান সংবিধান লঙ্ঘন করে অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করেছিল, আমাকে দেশে আসতে দেয়নি। রেহানার পাসপোর্টটা রিনিউ করে দেয়নি। বরং খুনিদেরকে বিভিন্ন দূতাবাসে চাকরি দিয়ে পুরস্কৃত করেছিল।

আছে শুধু ভালোবাসা দিয়ে গেলাম তাই : শেখ হাসিনা বলেন, অনেকদিন পর আবার দেখা হলো। ২০১৮ সালের নির্বাচনের আগে এসেছিলাম। আপনারা যত দূরেই থাকেন, আপনারা আছেন আমার হৃদয়ে। বাবা-মা, ভাই হারিয়ে আপনাদের কাছেই আমি ফিরে পেতে চাই আমার বাবা-মা, ভাইয়ের ভালোবাসা। আপনারাই আমার পরিবার। আপনাদের কাছেই আমার একমাত্র আশ্রয়। আপনাদের কাছে আসতে পেরে আমি অত্যন্ত আনন্দিত। বিদায়ের আগে বলে যেতে চাই, ‘নিঃস্ব আমি রিক্ত আমি দেবার কিছু নেই, আছে শুধু ভালোবাসা দিয়ে গেলাম তাই।’

এর আগে বেলা ১২টা থেকে মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীন, দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান এবং উত্তর জেলার সাধারণ সম্পাদক শেখ আতাউর রহমানের সঞ্চালনায় এবং মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দীন চৌধুরীর সভাপতিত্বে প্রধানমন্ত্রীর জনসভার আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়।

জনসভায় বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, প্রেসিডিয়াম সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন এমপি, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আবদুর রহমান ও মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বাহাউদ্দিন নাছিম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ এমপি, রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন, দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোছলেম উদ্দিন আহমদ এমপি, উত্তর জেলার সভাপতি এম এ সালাম, ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ, হুইপ সামশুল হক চৌধুরী, শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, সিটি মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী, এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী এমপি, ড. আবু রেজা নদভী এমপি, ওয়াসিকা আয়েশা খান এমপি, প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, উপ প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন, এম এ লতিফ এমপি, দিদারুল আলম এমপি, নজরুল ইসলাম চৌধুরী এমপি, মাহফুজুর রহমান মিতা এমপি, খাদিজাতুল আনোয়ার সনি এমপি, যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ, নগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি নঈম উদ্দিন চৌধুরী, সিডিএ চেয়ারম্যান জহিরুল আলম দোভাষ, দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরী, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এটিএম পেয়ারুল ইসলাম, উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক দেবাশীষ পালিত, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মাঈনুদ্দিন হাসান চৌধুরী, স্বেচ্ছাসেবক লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মেজবাউল হোসেন সাচ্চু প্রমুখ।

শেখ হাসিনার জনসভায় যোগ দিতে ভোর থেকেই উপজেলা এবং নগরীর ওয়ার্ড থেকে হাজার হাজার নেতাকর্মী পলোগ্রাউন্ডমুখী স্রোতে যুক্ত হয়েছেন। ভোরের আলো ফুটতেই চট্টগ্রামের বিভিন্ন উপজেলা থেকে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা রং-বেরংয়ের টি-শার্ট ও বাদ্যযন্ত্র নিয়ে জনসভাস্থলের আশেপাশে এসে অবস্থান নেন। এরপর সিআরবি, পুরনো রেলস্টেশন, টাইগারপাস দিয়ে সমাবেশস্থলে প্রবেশ করেন। বেলা ১২টার আগেই জনসভাস্থল জনসমুদ্রে পরিণত হয়। এ সময় স্লোগানে মুখর হয় জনসভাস্থল ও চট্টগ্রামের রাজপথ।

পূর্ববর্তী নিবন্ধবিদেশি জাহাজগুলোকে চট্টগ্রাম বন্দর ছেড়ে যাওয়ার পরামর্শ
পরবর্তী নিবন্ধ১০ হাজার মানুষ নিয়ে পলোগ্রাউন্ডের জনসভায় সাবেক মেয়র মনজুর পুত্র সাইফুল আলম