ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় চসিকের কন্ট্রোল রুম, ৯০টি আশ্রয়কেন্দ্র

জেলা প্রশাসনের জরুরি সভায় একগুচ্ছ নির্দেশনা

আজাদী প্রতিবেদন | বৃহস্পতিবার , ১১ মে, ২০২৩ at ৫:১৪ পূর্বাহ্ণ

ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’ আঘাত হানলে সম্ভাব্য দুর্যোগ মোকাবিলায় নানা প্রস্তুতি নিয়েছে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক) ও জেলা প্রশাসন। ইতোমধ্যে চসিক নগরের দামপাড়ায় ‘কন্ট্রোল রুম’ খুলেছে। প্রস্তুত করেছে ৯০টি আশ্রয়কেন্দ্র। সেখানে আশ্রয় নিতে উপকূলীয় এলাকায় মাইকিং করা হবে। এছাড়া শুকনো খাবার, পর্যাপ্ত সুপেয় পানির ব্যবস্থা, চিকিৎসা সেবাদানের জন্য মেডিকেল টিম গঠন ও পর্যাপ্ত ওষুধপত্র মজুদ, প্রয়োজনীয় যানবাহন প্রস্তুত এবং বিদ্যুৎ সরবরাহ ও সড়কবাতি নির্বিঘ্ন রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে চসিক। দুর্যোগ পরবর্তী উদ্ধার কার্যক্রমের জন্য আরবান ভলান্টিয়ার টিম ও উদ্ধারকর্মীদের প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

জানা গেছে, দুর্যোগ মোকাবেলায় গতকাল বুধবার চসিকের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা উপকমিটির জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী। ঘূর্ণিঝড় মোখা আঘাত হানলে সাধারণ মানুষের জানমালের ক্ষয়ক্ষতি সর্বনিম্ন পর্যায়ে রাখা যায় এবং দুর্যোগ পরবর্তী পুনরুদ্ধার কাজ যাতে সর্বোচ্চ গতিতে পরিচালিত হয় সে জন্য কাউন্সিলর ও চসিকের কর্মকর্তাকর্মচারীদের নির্দেশনা দেন।

সভায় কাউন্সিলরদের নেতৃত্বে ওয়ার্ড পর্যায়ে প্রস্তুতি সভা করা ও ঘূর্ণিঝড় মোখার গতিবেগ গভীরভাবে পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে জরুরি যেকোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করা, সচেতনতা তৈরিতে প্রতিটি এলাকায় মাইকিং করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। চসিকের কন্ট্রোল রুমের নম্বর হচ্ছে ০২৩৩৩৩৬৩০৭৩৯। কন্ট্রোল রুম থেকে ঘূর্ণিঝড় সংক্রান্ত সব ধরনের তথ্য ও সেবা পাবেন নগরবাসী। সভায় উপস্থিতি ছিলেন চসিকের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিষয়ক স্থায়ী কমিটির সভাপতি কাউন্সিলর মো. জহুরুল আলম জসিম ও উত্তর হালিশহর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. ইলিয়াছ, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলাম, সচিব খালেদ মাহমুদ, প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম ও প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা মুহাম্মদ আবুল হাশেমসহ সংশ্লিষ্টরা।

জেলা প্রশাসন : সম্ভাব্য দুর্যোগ মোকাবেলায় জরুরি সেবাপ্রদানকারী প্রতিষ্ঠান বিশেষ করে হাসপাতাল, বিদ্যুৎ, গ্যাস, পানি ও সিটি কর্পোরেশনে কন্ট্রোল রুম খোলা, উপজেলা পর্যায়ে দ্রুত দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির জরুরি সভা আয়োজন, বিভিন্ন এনজিও, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন, গণমাধ্যমকে দুর্যোগ মোকাবেলায় অংশগ্রহণ, উপকূলবর্তী ও পাহাড়ি এলাকায় মানুষকে সচেতন করতে মাইকিং কার্যক্রম চলমান রাখা, যে কোনো জরুরি প্রয়োজনে জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তার সাথে ও জেলা প্রশাসনের কন্ট্রোল রুমের নম্বরে যোগাযোগ করার নির্দেশনা দিয়েছেন চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান।

গতকাল অনুষ্ঠিত জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির জরুরি সভায় এ নির্দেশনা দেন তিনি। অনলাইন প্ল্যাটফর্মে অনুষ্ঠিত সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক। তিনি জানান, দুর্যোগ পরিস্থিতি মোকাবেলায় সম্ভাব্য প্রাথমিক চাহিদা মিটানোর লক্ষ্যে ইতোমধ্যে জেলার সকল উপজেলায় ত্রাণ হিসেবে চাল ও নগদ টাকা বরাদ্দ প্রদান করা হয়েছে। বিদ্যমান আশ্রয়কেন্দ্রগুলো প্রস্তুত রাখা ছাড়াও বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চিহ্নিত করে আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহারের লক্ষ্যে প্রস্তুত রাখার জন্য উপজেলা নির্বাহী অফিসারগণ, জেলা মাধ্যমিক ও প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারকে নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে।

সভায় অংশ নেয়া এ সময় উপজেলা নির্বাহী অফিসারগণ জানিয়েছেন, উপজেলা পর্যায়ে ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র, শুকনো খাবার, বিশুদ্ধ পানি ও নগদ অর্থের প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। এছাড়াও বিভিন্ন এনজিও দুর্যোগ মোকাবেলায় তাদের পর্যাপ্ত প্রস্তুতি আছে বলে জানান জেলা প্রশাসককে।

সভায় জেলা পর্যায়ে বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানের দপ্তর প্রধান, উপজেলা চেয়ারম্যান, উপজেলা নির্বাহী অফিসার, সহকারী কমিশনার (ভূমি), উপপরিচালক সিপিপি, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন এনজিও এবং স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের কর্মীরা অংশ নেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধউপকূলীয় এলাকায় ব্যাপক প্রস্তুতি
পরবর্তী নিবন্ধবকশিশ-টিপস দুর্নীতি বলে গণ্য হবে, বিজ্ঞপ্তি হাই কোর্ট বেঞ্চে