ঘরে আগুন, চকরিয়ায় ঘুমন্ত শিশুর মৃত্যু

চকরিয়া প্রতিনিধি | সোমবার , ২২ মে, ২০২৩ at ৭:৩২ পূর্বাহ্ণ

কক্সবাজারের চকরিয়া পৌরশহরের হালকাকারায় অগ্নিকাণ্ডে তিন ভাইয়ের বসত ঘর পুড়ে ছাই হয়েছে। এতে দুবাই প্রবাসী এক ভাইয়ের ৮ বছরের শিশু ওসমা মণি একটি রুমে আটকা পড়ে ঘুমের মধ্যে পুড়ে অঙ্গার হয়ে যায়।

শনিবার দিবাগত রাত ১টার দিকে এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাটি ঘটেছে পৌরসভার দুই নম্বর ওয়ার্ডের হালকাকারাস্থ মৌলভীর চর গ্রামে। ওসমা মণি দুবাই প্রবাসী মো. ওসমান গণির কন্যা। শিশুটি স্থানীয় এবতেদায়ী মাদরাসার দ্বিতীয় শ্রেণীর শিক্ষার্থী। ওই গ্রামে এ ঘটনার পর শোকের মাতম চলছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শনিবার দিবাগত রাত ১টার দিকে বাহাদুর মিস্ত্রির বসতবাড়ির রান্নাঘরে আগুন জ্বলতে দেখা যায়। সেই আগুন মুহূর্তের মধ্যে একান্নবর্তী পরিবারের তিন ভাইয়ের বসতবাড়িতে ছড়িয়ে পড়ে। আগুনের তাপে ঘুমন্ত অবস্থা থেকে পরিবারের সদস্যরা বের হতে পারলেও ওসমান গণির শিশু কন্যা ওসমা মণি একটি কক্ষের ভেতর আটকা পড়ে। সেখানে সে পুড়ে অঙ্গার হয়ে যায়।

ক্ষতিগ্রস্ত বাহাদুর মিস্ত্রি জানান, তার দুই ভাই মো. ওসমান গণি ও মো. মিজান বর্তমানে দুবাই প্রবাসী। শনিবার রাতে খাওয়া শেষে দুই ভাইয়ের স্ত্রীরাও তাদের সন্তানসহ ঘুমিয়ে পড়েন নিজ নিজ কক্ষে। রাত একটার দিকে রান্নাঘরের চুলা থেকে আগুনের সূত্রপাত হলে সেই আগুন চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ে।

তিনি আরো জানান, মেঝ ভাই ওসমান গণির তিন সন্তান। তন্মধ্যে স্ত্রী শাহিনা আক্তার দুই পুত্র সন্তানকে নিয়ে ঘুমিয়ে পড়েন। অপর কন্যা সন্তান ওসমা মণি ঘুমায় চাচীর (মিজানের স্ত্রী) সঙ্গে।

চকরিয়া পৌরসভার দুই নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর মো. রেজাউল করিম দৈনিক আজাদীকে জানান, একান্নবর্তী পরিবারটির বড় ভাই বাহাদুর আলম পেশায় ইঞ্জিন মিস্ত্রি। তাঁর ছোট দুই ভাই ওসমান গণি ও মো. মিজান বর্তমানে দুবাই প্রবাসী। তাদের বসতবাড়ি তিনটি বাঁশের বেড়া ও টিনের ছাউনির। রাতের ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে সবাই বের হতে পারলেও ওসমান গণির কন্যা ওসমা মণি ঘুমন্ত অবস্থায় আগুনে পুড়ে অঙ্গার হয়ে যায়। আগুনের খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের লোকজন এলেও ততক্ষণে সবকিছু পুড়ে ছাই হয়ে যায়। এতে পরিবার তিনটির অন্তত ১০ লক্ষ টাকার সম্পদ পুড়ে ছাই হয়ে যায়। এ ঘটনার পর এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে।

চকরিয়া থানার ওসি চন্দন কুমার চক্রবর্তী বলেন, ‘খবর পেয়ে রাতেই পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। আগুনে পুড়ে অঙ্গার শিশুকন্যার মরদেহ উদ্ধারের পর ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করা হয়।’

এদিকে আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার তিনটির পাশে দাঁড়িয়েছেন কক্সবাজার১ আসনের সংসদ সদস্য ও চকরিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জাফর আলম। তিনি সরজমিন পরিদর্শন করে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের হাতে নগদ ১ লক্ষ টাকা এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র ক্রয়ের জন্য আরো ২০ হাজার টাকা এবং বাড়ি তিনটি পুনরায় নির্মাণের জন্য টিন, বাঁশ, গাছ, লোহার রডসহ নির্মাণসামগ্রী প্রদান করেছেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধইমাম গ্রুপের মোহাম্মদ আলীর বিরুদ্ধে আটকাদেশ ও গ্রেপ্তারি পরোয়ানা
পরবর্তী নিবন্ধরাস্তায় হঠাৎ ফোয়ারা!