গুণগত বা মানসম্পন্ন শিক্ষা এবং টেকসই উন্নয়ন

মোহাম্মদ সিরাজ উদ্দিনি | সোমবার , ৩০ নভেম্বর, ২০২০ at ১০:১৮ পূর্বাহ্ণ

বিশ্ব মানবতার সমৃদ্ধিকল্পে জাতিসংঘ কর্তৃক প্রণীত সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্য (এমডিজি) অর্জনে বাংলাদেশ আটটি লক্ষ্যের সবকটিতে সফলতা লাভ করে। তারই ধারাবাহিকতায় ২০১৬-২০৩০ সময়কালের জন্য টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) নির্ধারণ করা হয়। এতে মোট ১৭টি লক্ষ্যমাত্রা ও ১৬৯টি সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য অন্তর্ভুক্ত রয়েছে এবং চতুর্থ লক্ষ্যমাত্রাটি হলো মানসম্মত শিক্ষা। মানসম্মত শিক্ষা এবং টেকসই উন্নয়ন একটি অপরটির সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। মানসম্মত শিক্ষা কি? শিক্ষা হলো জীবনব্যাপী ধারাবাহিক বা চলমান জ্ঞানানুসন্ধান। শিক্ষালব্ধ অভিজ্ঞতার প্রায়োগিক দিক হলো জ্ঞান। যিনি ভাল-মন্দ, উচিত-অনুচিত বিচার করে সর্বজন স্বীকৃত সর্বকল্যাণের কাজ করেন তিনিই জ্ঞানী। একজন জ্ঞানী ব্যক্তি তার নিরলস চেষ্টা ও প্রায়োগিক প্রজ্ঞা অর্জন করেন, এটাই হলো সুশিক্ষা, সুশিক্ষিত ব্যক্তিই গুণগত মানসম্পন্ন শিক্ষার মধ্যমণি। গুণগত বা মানসম্পন্ন শিক্ষার একটি আদর্শ মানদন্ড হলো একটি জাতীয় শিক্ষানীতি থাকবে এবং শিক্ষানীতির বাস্তব প্রয়োগ থাকবে। শিক্ষার মান উন্নয়নের সাথে সংশ্লিষ্ট উপাদানগুলো হলো :- শিক্ষার্থী, দক্ষ শিক্ষকমন্ডলী, পাঠক্রম, পাঠ্যসূচী, শিখন-শিক্ষণ পদ্ধতি ও প্রয়োজনীয় উপাদান, আদর্শ ভর্তি ব্যবস্থা, প্রশাসক ও ব্যবস্থাপকগণের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা, উপযুক্ত মূল্যায়ন ও পরীবিক্ষণ পদ্ধতি, সুষ্ঠু নিয়োগ পদ্ধতি, প্রশ্নপত্র প্রণয়নে গোপনীয়তা, প্রয়োজনীয় পরিবেশ ও অবকাঠামো এবং গুণগত বিচারে প্রতিষ্ঠানের স্থান। উপরোক্ত উপাদানগুলোর সফল প্রয়োগ ও বাস্তবায়নসহ আনুষ্ঠানিক বা প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার মান উন্নয়নে সহায়ক।
টেকসই উন্নয়ন কি? : টেকসই উন্নয়ন বলতে এ ধরনের উন্নয়নমূলক কর্মকান্ডকে বুঝায় যার মাধ্যমে অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রা নিশ্চিত হয় আবার প্রকৃতি এবং আমাদের ইকোসিস্টেমে কোন কাজে প্রভাব না পড়ে। জাতিসংঘ পরিবেশ কর্মসূচির গভর্নিং কাউন্সিলের ১৯৮৯ সালে ১৫/১২ সিদ্ধান্তে টেকসই উন্নয়নের ধারণাকে নিম্নরূপে ব্যক্ত করা হয়েছে-
Sustainable development is development that meeds the nees of the present without compromising the ability of the future generation to meet their own needs and dees not emply in any way encroachment upon national soveriegnty.
টেকসই উন্নয়ন ও গুনগত শিক্ষা : শিক্ষা একটি দেশের উন্নয়নের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যে দেশে শিক্ষার হার যত বেশী, সেই দেশ অর্থনৈতিকভাবে তত বেশী অগ্রসর। বৈশ্বিক উন্নয়ন রূপরেখা-২০৩০ বা টেকসই উন্নয়ন অভীষ্টের আওতায় (এসডিজি) সেই কারণেই শিক্ষার উপর বিশেষ গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। দীর্ঘ মেয়াদি ও টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যে সবার জন্য অন্তর্ভুক্তিমূলক ও সমতা ভিত্তিক গুণগত শিক্ষা নিশ্চিত এবং জীবনব্যাপী শিক্ষা লাভের সুযোগ সৃষ্টি করার লক্ষ্য নির্ধারিত হয়েছে বিশ্বব্যাপী। অন্য সব দেশের মত বাংলাদেশও এ লক্ষ্য অর্জনে জোর তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে। সবার জন্য অন্তর্ভুক্তিমূলক ও সমতাভিত্তিক গুণগত শিক্ষা নিশ্চিতের লক্ষ্যে টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট (এসডিজি-৪) এর সুনির্দিষ্ট কিছু লক্ষ্য বা সূচক রয়েছে। যার মধ্যে প্রধানত ২০৩০ সালের মধ্যে সব ছেলে ও মেয়ে যাতে প্রাসঙ্গিক, কার্যকর ও ফলপ্রসূ অবৈতনিক সমতাভিত্তিক ও গুণগত প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা সম্পন্ন করতে পারে তা নিশ্চিত করা; ২০৩০ সালের মধ্যে সব ছেলে ও মেয়ে যাতে প্রাথমিক শিক্ষার প্রকৃতি হিসাবে প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষাসহ শৈশবে একেবারে গোড়া থেকে মানসম্মত বিকাশ ও পরিচর্যার মধ্য দিয়ে বেড়ে ওঠে, তার নিশ্চয়তা বিধান করা। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা লাভের সুযোগসহ সাশ্রয়ী ও মানসম্মত কারিগরি, বৃত্তিমূলক ও উচ্চ শিক্ষায় সব নারী ও পুরুষের জন্য ২০৩০ সালের মধ্যে সমান প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করা। অরক্ষিত (সংকটাপন্ন) জনগোষ্ঠীসহ প্রতিবন্ধী জনগোষ্ঠী, নৃ-জনগোষ্ঠী ও অরক্ষিত পরিস্থিতির মধ্যে বসবাসকারী শিশুদের জন্য ২০৩০ সালের মধ্যে শিক্ষাও বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণের সর্ব পর্যায়ে সমান প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করা ও শিক্ষায় নারী-পুরুষ বৈষম্যের অবসান ঘটানো। নারী-পুরুষ নির্বিশেষে যুব সমাজের সবাই এবং বয়স্ক জনগোষ্ঠীর একটি উল্লেখযোগ্য অংশ যাতে ২০৩০ সালের মধ্যে সাক্ষরতা ও গণন দক্ষতা অর্জনে সফলকাম হয় তা নিশ্চিত করা।
টেকসই উন্নয়ন ও টেকসই জীবনধারার জন্য শিক্ষা, মানবাধিকার, নারী-পুরুষের সমতা, শান্তি ও অহিংসামূলক সংস্কৃতির বিকাশ, বৈশ্বিক নাগরিকত্ব এবং সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য ও টেকসই উন্নয়নে সাংস্কৃতির অবদান সম্পর্কিত উপলব্ধি অর্জনের মাধ্যমে সব শিক্ষার্থী যাতে ২০৩০ সালের মধ্যে টেকসই উন্নয়নের জন্য প্রয়োজনীয় জ্ঞান ও দক্ষতা অর্জন করতে পারে তা নিশ্চিতকরণ। শিশু, প্রতিবন্ধিতা ও জেন্ডার সংবেদনশীল শিক্ষা সুবিধা নির্মাণ ও মানোন্নয়ন এবং সবার জন্য নিরাপদ শান্তিপূর্ণ, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও কার্যকর শিক্ষা-পরিবেশ প্রদান করা। বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি, কারিগরি, প্রকৌশল ও বিজ্ঞান সংশ্লিষ্ট কর্মমুখী ২০২০ সালের মধ্যে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বাড়ানো, এই সূচকগুলোর কাঙ্ক্ষিতমান অর্জনে বাংলাদেশ এগিয়ে চলেছে সামনের দিকে।
গুণগত শিক্ষার প্রয়োজনীয়তা : গুণগত শিক্ষা বিষয়টি কেবল শিক্ষক, প্রতিষ্ঠান, পুস্তক, শিক্ষার্থী বা শ্রেণিকক্ষের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয় বা তা কোন পদ্ধতিগত উপাদানও নয়। কারণ গুণগত শিক্ষাকে সামগ্রিক উন্নয়নের পূর্বশর্ত হিসাবে বিবেচনা করা হয়; যার সাথে প্রতিষ্ঠানের কর্মতৎপরতা ওতপ্রোতভাবে জড়িত। গুণগত শিক্ষা শিক্ষার্থীদের ন্যায়বোধ, কর্তব্যপরায়ণতা, শৃঙ্খলা, আচরণবিধি, ধর্মনিরপেক্ষতা, বন্ধুত্বপূর্ণ মনোভাব, সহাবস্থান, অনুসন্ধিৎসু, দেশপ্রেমিক, দেশের অতীত ও বর্তমান ইতিহাস, দেশের গুণীজন ও সাধারণ জনগণের প্রতি ভালবাসাবোধ, দায়বদ্ধতা, অধ্যবসায়সহ নৈতিক ও আধ্যাত্নিক অন্তর্নিহিতগুণ উন্মোচনে সহায়তা করে। এটি শিশুদের কে কুসংস্কার থেকে বিজ্ঞানমনস্ক ও সংস্কৃতমনা হিসাবে গড়ে উঠতে উৎসাহিত করে। অধিকন্তু এটি শিক্ষার্থীদের সঠিক দক্ষতা ও প্রান্তিক যোগ্যতা অর্জনের মধ্য দিয়ে উচ্চ শিক্ষা অর্জনের দিকে ধাবিত করে। শিক্ষার্থীদের বিষয়ভিক্তিক জ্ঞান, জীবন দক্ষতার উন্নয়ন, দৃষ্টিভঙ্গীর গুণগত পরিবর্তন এবং সামাজিকভাবে সচেতন করে তোলাসহ পর্যায়ক্রমে পরবর্তী উচ্চতর ধাপের শিক্ষা গ্রহণের উপযোগী করে তোলে।
সমাজে গুণগত শিক্ষার ইতিবাচক প্রভাব ও অর্থনৈতিক উন্নয়ন : গুণগত শিক্ষার প্রতিফলনই সমাজের অন্ধকার দিকগুলো যথা : মাদক সেবন, জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস, ইভটিজিং, বাল্যবিবাহের অভিশাপ, লিঙ্গ বৈষম্য, সাম্প্রদায়িক মনোভাব, খাদ্যে ভেজাল, সাইবার অপরাধ ইত্যাদি অনাকাঙ্ক্ষিত অভ্যাস ও কার্যক্রম থেকে শিক্ষার্থীদের বিরত রেখে একটি সুষ্ঠু সমাজব্যবস্থা গড়ে তুলতে পারে। গুণগত শিক্ষাই দেশের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি নিশ্চিত করে উৎপাদনশীল, সামাজিক মূল্যবোধ ও নৈতিকতা সম্পন্ন মানব তৈরী করে, ন্যায়বিচার, বৈষম্যহীন সমাজ ব্যবস্থা গঠন, সততা, নিষ্ঠা, সহযোগিতা ও সহনশীল মনোভাব তৈরির পরিবেশ নিশ্চিত করে। সুশিক্ষাই শারীরিক সুস্থতা, সৃজনশীলতা ও উদ্ভাবনী শক্তিকে ত্বরান্বিত করে সামাজিক শান্তি ও স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে সক্ষম। জ্ঞানভিত্তিক উন্নত সমাজ গড়ে তুলতে না পারলে রাস্তাঘাট ও সেতু জাতীয় উন্নয়ন ধরে রাখা সম্ভব নয়। যথোপযুক্ত ও যুগোপযোগী শিক্ষা নিশ্চিত করতে না পারলে অবকাঠামোর চাকচিক্য ও জৌলুস সমৃদ্ধ জাতি বলে আমাদেরকে বিশ্বের দরবারে পরিচিত করতে সক্ষম হবে না। শিক্ষার গুণগতমান অর্জনে ব্যর্থ হলে অবকাঠামো অন্ত:সারশূন্য হয়ে পড়বে।
গুণগত শিক্ষা বিস্তারে করণীয় :
শিক্ষার গুণগত উৎকর্ষ সাধনে বিগত তিন দশক থেকে বিভিন্ন সময়ে প্রণীত নীতিমালার নির্ধারণী কার্যক্রম বাস্তবায়নাধীন রয়েছে। এর মধ্যে ফিমেল সেকেন্ডারী স্কুল এ্যাসিসটেন্স প্রজেক্ট (১৯৯৪) ফিমেল স্কুল এ্যাসিসটেন্স প্রজেক্ট; দ্বিতীয় পর্যায় (২০০১), টিচিং কোয়ালিটি ইমপ্রুভমেন্ট ইন সেকেন্ডারী এডুকেশন প্রজেক্ট (২০০৫) এবং সেকেন্ডারী এডুকেশন কোয়ালিটি এন্ড একসেস এনহ্যান্সমেন্ট প্রজেক্ট (২০০৮) অন্যতম। নীতিনির্ধারণী ও বাস্তবায়নযোগ্য বিষয়াবলীর পাশাপাশি পর্যায়ক্রমিক স্থিরকৃত লক্ষ্যসমূহ সর্বাগ্রে চিহ্নিত করা দরকার। স্বীকৃত সামাজিক ব্যাধি দুর্নীতির আগ্রাসী ছোবল শিক্ষাক্ষেত্রেও প্রসারিত এ বিনিন্দিত ঘাতকের ক্ষতি থেকে শিক্ষা পরিমন্ডলের প্রতিটি স্তরকে মুক্ত রাখতে সকল ঐকান্তিক সদিচ্ছায় পাশাপাশি প্রতিষ্ঠানিক কার্যকরী ব্যবস্থা থাকা বাঞ্চনীয়। সর্বাবস্থায় পরিত্যাজ্য দুর্নীতির করাল গ্রাস থেকে সুরক্ষার উদ্দেশ্যে শিক্ষাক্ষেত্রের সর্বত্র প্রযুক্তি সমৃদ্ধ ই-শাসন যথাশীঘ্র চালুকরণের বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। উপরোক্ত চিহ্নিত কারণসমূহের সুষ্ঠু সমাধানকল্পে গ্রহণযোগ্য করণীয় নির্ধারণের জন্য অভিভাবক, শিক্ষক সমাজ, সমাজপতি, সুশীল শ্রেনী ও নীতি প্রণেতাদের সমবেত ও সমন্বিতভাবে কাজ করা খুবই জরুরি। কারণ শিক্ষার সুফল বা কুফল জাতি, ধর্ম নির্বিশেষে প্রতিটি নাগরিক বা ব্যক্তির উপর আবর্তিত হয়। সুদূরপ্রসারী এহেন প্রভাববলয়ের কারণে অর্জিত কাঙ্ক্ষিত বা অনাকাঙ্খিত ফলাফল প্রতিনিয়ত যথাযথভাবে মূল্যায়নের বিষয়টি বিরাজমান প্রেক্ষাপটে খুবই গুরুত্ববাহী। শিক্ষাক্ষেত্রে পরিদৃষ্ট উন্নতি বা অবনতির সূচকসমূহ সামগ্রিক পর্যবেক্ষণে দৃষ্টিগোছর হওয়া মাত্রই সংশোধনমূলক উল্লেখিত সামাজিক প্রচেষ্টা স্বয়ংক্রিয়ভাবে কার্যকরণের সংস্কৃতি যথাশীঘ্রই গড়ে তোলা উচিত। দেশের স্বার্থে গুণ গত উন্নতির অনিবার্য ক্ষেত্র হিসাবে শিক্ষা ব্যবস্থাপনায় ফলভোগী সকল সম্প্রদায়ের অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত করতে অনতিবিলম্বে একটি স্থায়ী শিক্ষা কমিশন গঠন করার বিষয়টি অত্যাবশ্যক হিসেবে বিবেচনা করা যেতে পারে। উপরন্তু, প্রস্তাবিত এ কমিশনের সমুদয় কার্যক্রম একটি শক্তিশালী পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে কার্যকরণের বিষয়টিও বিদ্যমান প্রেক্ষাপটে বিবেচনাযোগ্য।
‘গ্রন্থগত বিদ্যা আর পরহস্তে ধন, নহে বিদ্যা নহে ধন হলে প্রয়োজন”। কবির এ কথার তাৎপর্য আমরা অনেকেই হয়তো জানি। তবে আজ গুণগত শিক্ষার প্রসারে সকলকেই সচেতন তথা সামগ্রিক প্রেক্ষাপট বিবেচনায় নিরন্তর পর্যালোচনা নিবিড় পর্যবেক্ষণ এবং নিঁখুত মূল্যায়নের মাপকাঠিতে যাচাইযোগ্য যেটি সময়ের দাবী। যে বিদ্যা মানুষের কাজে লাগে না, সে বিদ্যার ব্যবহারিক প্রয়োগ সর্বাবস্থায় অনাকাঙ্ক্ষিত। যে বিদ্যার বাস্তবিক ব্যবহার রয়েছে সে বিদ্যাই সার্থক। যে জ্ঞান বা বিদ্যা মানুষের কল্যাণে আসে না এবং বুলি সর্বস্ব হয়ে বইয়ের পাতায় সন্নিবেশিত সে জ্ঞান বা বিদ্যা মূলত মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত হতে পারে না। বিশ্বায়নের এ যুগে জ্ঞানার্জনের মাধ্যমে সৃষ্টিশীল নব নব আবিষ্কার এবং সৃষ্টিধর্মী নতুন কলাকৌশল আয়ত্ত্বকরণ ক্রমবর্ধিষ্ণুভাবে বিকাশমান। তাই তথ্য ও প্রযুক্তির দক্ষ ব্যবহারের মাধ্যমে এই ধারা আরও অনেক উচ্চতায় আরোহনের বাস্তব প্রকাশ ঘটবে যখন গুনগত ও মান সম্পন্ন শিক্ষার উৎকর্ষতা সাধন হবে। আর এভাবেই জাতি হিসাবে বিশ্ব দরবারে বাঙালি মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারবে তথা ২০২১ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের দেশ, ২০৩০ সালের মধ্যে স্বল্প উন্নত দেশ এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশে পরিণত হবে ফলে দক্ষ মানব সম্পদ তৈরির মাধ্যমে টেকসই উন্নয়ন পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হবে- ইনশাআল্লাহ।
লেখক : উপাধ্যক্ষ, কর্ণফুলী সরকারি কলেজ, কাপ্তাই।

পূর্ববর্তী নিবন্ধপটিয়ার সুচক্রদণ্ডীতে রাস উৎসব
পরবর্তী নিবন্ধদ. জেলা আওয়ামী মৎস্যজীবী লীগের মাস্ক বিতরণ