পশ্চিম–মধ্য বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত গভীর নিম্নচাপটি ঘূর্ণিঝড় ‘হামুন’ এ পরিণত হয়েছে। এটি আরো ঘণীভূত হয়ে উত্তর–উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হতে পারে। আবহাওয়া অধিদপ্তর ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে চট্টগ্রাম, কঙবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরকে ৪ নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে সাগর উত্তাল রয়েছে। তাই উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারসমূকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত অতি দ্রুত নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে বলা হয়েছে।
আবহাওয়া অফিস জানায়, ঘূর্ণিঝড়টির অগ্রবর্তী অংশের প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়াসহ ভারী থেকে অতিভারী বর্ষণ হতে পারে। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে গতকাল নগরে দিনভর গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হয়েছে। সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত সর্বশেষ পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিস ৯ দশমিক ৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করে। পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিসের পূর্বাভাস কর্মকর্তা মো. জহিরুল ইসলাম জানান, আজ অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ অধিকাংশ জায়গায় হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি পারে। সে সাথে কোথাও কোথাও মাঝারী ধরনের ভারী থেকে ভারী বর্ষণ হতে পারে।
আবহাওয়া অফিসের সর্বশেষ বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে (৭ নম্বর) বলা হয়, গতকাল সন্ধ্যা ৬টায় ঘূর্ণিঝড়টি চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৬৭০ কিলোমিটার পশ্চিম–দক্ষিণপশ্চিমে, কঙবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৬৩০ কিলোমিটার পশ্চিম– দক্ষিণপশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৫৪০ কিলোমিটার দক্ষিণপশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৫৪০ কিলোমিটার দক্ষিণপশ্চিমে অবস্থান করছিল। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৫৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২ কি.মি., যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়া আকারে ৮৮ কি.মি. পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর খুবই উত্তাল রয়েছে।
ভারতীয় আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাস অনুসারে ঘূর্ণিঝড় হামুন আগামীকাল বুধবার সন্ধ্যার পর থেকে বরিশাল বিভাগের পটুয়াখালী জেলার খেপুপাড়া উপজেলা ও চট্টগ্রাম বিভাগের চট্টগ্রাম জেলার মধ্যবর্তী কোনো উপকূলীয় এলাকা দিয়ে স্থল ভাগে আঘাত করার সম্ভাবনা রয়েছে নিম্নাচাপ কিংবা গভীর নিম্নচাপ হিসাবে। জাপানভিত্তিক সংস্থা জয়েন টাইফুন সেন্টারও ঘূর্ণিঝড়টি বাংলাদেশ উপকূলের দিকে এগোচ্ছে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে। সংস্থা দুটির ভূ–উপগ্রহের আলোকচিত্র অনুযায়ী ঝড়টির আশপাশে প্রচুর মেঘমালা তৈরি হয়েছে।