গণভবনের বৈঠকের দিকে চোখ চা শ্রমিকদের

| শনিবার , ২৭ আগস্ট, ২০২২ at ৭:১৬ পূর্বাহ্ণ

মজুরি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ও চা বাগান মালিকদের মধ্যে বৈঠকে কী আলোচনা হয় সেদিকে নজর রাখছেন মৌলভীবাজারের আন্দোলনরত শ্রমিকরা। গতকাল শুক্রবারও কোনো শ্রমিক বাগানের কাজে যাননি; তারা বাগানে বাগানে বৈঠক ও আলোচনা করেছেন বলে জানা গেছে। আজ গণভবনে প্রধানমন্ত্রী ও চা বাগান মালিকদের মধ্যে বৈঠকের কথা রয়েছে।
শ্রীমঙ্গল উপজেলার কালিঘাট ইউনিয়ন পরিষদের ৩নং ওয়ার্ডের সদস্য ও কালিঘাট চা বাগানের শ্রমিক অনিল তন্তবাই বলেন, আমরা এখন প্রধানমন্ত্রীর দিকেই তাকিয়ে আছি। প্রধানমন্ত্রী আমাদের দুঃখ-দুর্দশার কথা জানেন। খবর বিডিনিউজের।
তিনি আরও বলেন, আমরা পৌনে ২০০ বছর ধরে যে জায়গায় বসবাস করছি সে জায়গার ভূমি অধিকার আজও আমরা পাইনি। সব বাগানে এখনও স্কুল হয়নি। আশা করি, দৈনিক মজুরি বৃদ্ধির পাশাপাশি এসব সমস্যারও সমাধান হবে।
দৈনিক মজুরি ১২০ টাকা থেকে ৩০০ টাকা করার দাবিতে গত ৯ আগস্ট থেকে আন্দোলনে নামেন দেশের ১৬৭ চা বাগানের সোয়া লাখের বেশি শ্রমিক। ১৩ আগস্ট থেকে অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট শুরু করেন তারা। ২০ অগাস্ট প্রধানমন্ত্রীর ১৪৫ টাকা দৈনিক মজুরির প্রতিশ্রুতিতে বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের নেতারা অন্দোলন প্রত্যাহারের ঘোষণা দিলেও তা মানেননি শ্রমিকরা। তারা কর্মবিরতি অব্যাহত রাখেন।
এর মধ্যে গত বৃহস্পতিবার জানানো হয়, শনিবার বিকাল ৪টায় গণভবনে প্রধানমন্ত্রী বাগান মালিকদের সঙ্গে সরাসরি বৈঠক করবেন। এই বৈঠক নিয়ে চা বাগানের শ্রমিকদের মধ্যে শুক্রবার দিনভর আলোচনা হয়। বৈঠক থেকে কী ফলাফল বা ঘোষণা আসে সেদিকে অনেকেরই নজর রয়েছে।
শ্রীমঙ্গলের আমরইল চা বাগানের শ্রমিক জনিস বলেন, প্রধানমন্ত্রী আমাদের শেষ ভরসার স্থল। প্রধানমন্ত্রীর দিকেই এখন আমরা তাকিয়ে আছি। জনিসের আশা, প্রধানমন্ত্রী তাদের নিরাশ করবেন না।
কালাপুর ইউনিয়নের ফুলছড়ি চা বাগানের বাগান পঞ্চায়েত কমিটির সভাপতি লক্ষ্মণ বাউরি বলেন, আমরা আন্দোলন করছি পেটের দায়ে। আমাদের যে মজুরি দেওয়া হয় তা থেকে বিদ্যুৎ বিল, রেশন, ভবিষ্যৎ তহবিল ও চা শ্রমিক ইউনিয়নের চাঁদা সব কিছু কেটে নগদ হাজরি দাঁড়ায় ১০০ টাকারও কম। এই টাকা দিয়ে দৈনন্দিন চাহিদা পূরণ করতে হয়। ছেলেমেয়ের লেখাপড়া, পোশাক, মাছ, সবজি, তেল, লবণ, ডাল সবই এ দিয়ে। এটা কী করে সম্ভব? লক্ষ্মণ বাউরি আরও বলেন, দুই টাকা কেজিতে আটা দেওয়া হয়, যা সকালে রুটিতেই চলে যায়। দুপুরে ও বিকেলে ভাত রান্না করলে ৪/৫ জনের একটি পরিবারে দুই কেজি চাল লাগে। চালের দামেই দৈনিক হাজরি চলে যায়। চা বাগানের শ্রমিকদের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করেছেন বাগানের বাসিন্দা ছাত্র-যুবরাও; যারা চা শ্রমিকেরই সন্তান।

পূর্ববর্তী নিবন্ধইপিজেডে গৃহবধূর লাশ উদ্ধার, স্বামী পলাতক
পরবর্তী নিবন্ধ৩৬% নারী গণপরিবহনে নিয়মিত যৌন হয়রানির শিকার : সমীক্ষা