খুলল মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার

যেসব সুবিধা পাবেন বাংলাদেশি কর্মীরা

আজাদী ডেস্ক | সোমবার , ২০ ডিসেম্বর, ২০২১ at ৫:৫০ পূর্বাহ্ণ

দীর্ঘ তিন বছর পর বাংলাদেশ থেকে আবারও কর্মী নেওয়ার জন্য নতুন একটি সমঝোতা স্মারকে সই করেছে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ মালয়েশিয়া। গতকাল রোববার কুয়ালালামপুরে বাংলাদেশের প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদ এবং মালয়েশিয়ার মানবসম্পদ মন্ত্রী এম সারাভানান এই সমঝোতা স্মারকে স্বাক্ষর করেন। প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এই সমঝোতার আওতায় বাংলাদেশি কর্মীদের মালয়েশিয়ায় নেওয়া, আবাসন, এবং দেশে ফেরত পাঠানোসহ মালয়েশিয়াপ্রান্তের যাবতীয় খরচ বহন করবেন নিয়োগকর্তা।
নিয়োগকর্তা নিজ খরচে মালয়েশিয়ার রিক্রুটিং এজেন্ট নিযুক্ত করতে পারবে। মালয়েশিয়ায় পৌঁছানোর পর বাংলাদেশি কর্মীর ইমিগ্রেশন ফি, ভিসা ফি, স্বাস্থ্য পরীক্ষার খরচ, ইনস্যুরেন্স সংক্রান্ত খরচ, কোভিড পরীক্ষার খরচ, কোয়ারেন্টিন সংক্রান্ত খরচসহ সব ধরনের ব্যয় মালয়েশিয়ার নিয়োগকর্তা বা কোম্পানি বহন করবে। খবর বিডিনিউজ ও বাংলানিউজের।
মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়, নিয়োগকর্তা কর্মীর মানসম্মত আবাসন, বীমা, চিকিৎসা এবং কল্যাণ নিশ্চিত করবে। ফলে আশা করা যায়, কর্মীর অভিবাসন খরচ অনেক কমে যাবে।
এর আগে মালয়েশিয়া সরকার তাদের পাঁচটি খাতে সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ের সমন্বয়ে জিটুজি প্লাস পদ্ধতিতে বাংলাদেশ থেকে কর্মী নিতে ২০১৬ সালে সমঝোতা স্মারকে স্বাক্ষর করেছিল। পাঁচ বছর মেয়াদী ওই চুক্তির আওতায় লোক পাঠানোর অনুমতি দেওয়া হয়েছিল ১০টি জনশক্তি রপ্তানিকারক এজেন্সিকে। কিন্তু প্রবাসী এক বাংলাদেশি ব্যবসায়ীর নেতৃত্বে মালয়েশিয়ার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যোগসাজশে একটি চক্র ওই ১০ এজেন্সিকে নিয়ে সিন্ডিকেট করে শ্রমিকদের কাছ থেকে দুই বছরে ২০০ কোটি রিঙ্গিত হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ ওঠে।
এরপর ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বর থেকে নতুন করে বাংলাদেশি কর্মীদের আর ভিসা দেয়নি মালয়েশিয়া। তবে আগে যারা ভিসা পেয়েছিলেন তারা পরেও মালয়েশিয়া যাওয়ার সুযোগ পান। করোনার দাপট কমে এলে মালয়েশিয়া সরকার আবারও বাংলাদেশ থেকে শ্রমিক নিতে সম্মত হয়। এর মধ্য দিয়ে মালয়েশিয়ায় বিভিন্ন খাতে বহু বাংলাদেশি কর্মীর কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হবে বলে আশা করছেন বাংলাদেশ সরকারের কর্মকর্তারা।
মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়, সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের ফলে বাংলাদেশ থেকে কর্মী নিয়োগ, কর্মসংস্থান এবং প্রত্যাবাসনের একটি আদর্শ কাঠামো তৈরির সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। উভয় দেশের আইন, বিধি, প্রবিধান, জাতীয় নীতি এবং নির্দেশাবলীর আলোকে এই সমঝোতা স্মারকে কর্মীদের অধিকার ও মর্যাদাকে অধিকতর সুরক্ষিত করা হয়েছে।
মালয়েশিয়ার মানবসম্পদ মন্ত্রী এম সারাভানান বলেন, সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের পরপরই বাংলাদেশি কর্মী নেওয়া শুরু হবে। এই শ্রমিকদের জন্য বাগান, কৃষি, উৎপাদন, পরিষেবা, খনি ও খনন, নির্মাণ এবং গৃহপরিচারকসহ বিভিন্ন খাত উন্মুক্ত থাকবে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নিয়ম অনুসারে মালয়েশিয়ায় যেতে ইচ্ছুকদের সে দেশে কোয়ারেন্টিনে থাকতে হতে পারে।
এদিকে, গ্রিসের সঙ্গে একটি আগ্রহপত্র স্বাক্ষর করেছেন প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রী। একইভাবে আলবেনিয়া, মাল্টা ও বসনিয়ার সঙ্গেও কর্মী পাঠানোর জন্য চুক্তি স্বাক্ষরের অপেক্ষায় রযেছে। নতুন শ্রমবাজার হিসেবে কম্বোডিয়া, উজবেকিস্তান, পোল্যান্ড, হাঙ্গেরি, রোমানিয়া, ক্রোয়েশিয়াসহ আফ্রিকা মহাদেশের কয়েকটি দেশ এবং জাপান, সেনেগাল, বুরুন্ডি, সেশেলস, মালয়েশিয়ার সারওয়াকে কর্মী পাঠানো শুরু হয়েছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধভর্তিযুদ্ধ ও তদবির বন্ধে সব মাধ্যমিক স্কুলে লটারি : শিক্ষামন্ত্রী
পরবর্তী নিবন্ধগৃহবধূর মৃত্যু, স্বামী আটক