খুলছে স্বপ্নের দুয়ার

পদ্মা সেতু আজ উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী ।। বর্ণিল সাজে দুই পাড়, উৎসব সারা দেশে

আজাদী ডেস্ক | শনিবার , ২৫ জুন, ২০২২ at ৬:০০ পূর্বাহ্ণ

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ বহুল প্রত্যাশিত ৬.১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ পদ্মা সেতু যানবাহন চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করবেন; যা রাজধানী ঢাকা এবং অন্যান্য বড় শহরের সাথে দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১টি জেলার সড়ক যোগাযোগে ব্যাপক অগ্রগতি বয়ে আনবে। পদ্মা সেতুর উদ্বোধন ঘিরে উৎসবের বর্ণিল আয়োজন হয়েছে পদ্মা নদীর দুই পাড় অর্থাৎ দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলোসহ সারা দেশে। সেতুর উত্তর প্রান্তে মুন্সীগঞ্জের মাওয়া আর দক্ষিণ প্রান্তে রয়েছে শরীয়তপুরের জাজিরা। সকাল ১০টায় মুন্সীগঞ্জের মাওয়া পয়েন্টে পদ্মা সেতু উদ্বোধন অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দেশের বৃহত্তম স্ব-অর্থায়নকৃত মেগা প্রকল্পের জমকালো উদ্বোধন উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীর কর্মসূচির সময়সূচি অনুযায়ী মাওয়া পয়েন্টে বেলা ১১টায় তিনি স্মারক ডাকটিকিট, স্যুভেনির শিট, উদ্বোধনী খাম এবং বিশেষ সিলমোহর উন্মোচন করবেন। প্রকল্পটি বাস্তবায়নের ফলে ১.২ থেকে ২ শতাংশ পর্যন্ত জিডিপি বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করা হচ্ছে। এর আগে তিনি হেলিকপ্টারযোগে সকাল ৯ টা ৩০ মিনিটে ঢাকার তেজগাঁও বিমানবন্দর থেকে মাওয়া পয়েন্টে কর্মসূচিতে যোগ দেবেন। ১১টা ১২ মিনিটে মাওয়া পয়েন্টে টোল পরিশোধের পর উদ্বোধনী ফলক ও ম্যুরাল-১ উন্মোচনের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে পদ্মা সেতুর উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি সেখানে মোনাজাতেও যোগ দেবেন। ১১টা ২৩ মিনিটে মাওয়া পয়েন্ট থেকে শরীয়তপুরের জাজিরা পয়েন্টের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করবেন। প্রধানমন্ত্রী ১১টা ৪৫ মিনিটে জাজিরা পয়েন্টে পৌঁছে সেতু ও ম্যুরাল-২ এর উদ্বোধনী ফলক উন্মোচন করবেন। সেখানে মোনাজাতেও যোগ দেবেন তিনি। দুপুর ১২টায় মাদারীপুর জেলার শিবচর উপজেলার কাঁঠালবাড়িতে সেতুর উদ্বোধন উপলক্ষে আয়োজিত দলের জনসভায় যোগ দেবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। বিকেল সাড়ে ৫টায় হেলিকপ্টারে জাজিরা পয়েন্ট থেকে প্রধানমন্ত্রী ঢাকার উদ্দেশে যাত্রা করবেন।

পদ্মা সেতু উদ্বোধন উপলক্ষে মহামান্য রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গতকাল পৃথক বাণী দিয়েছেন। ক্রোড়পত্র প্রকাশ করছে দৈনিক পত্রিকাগুলো। বিশেষ অনুষ্ঠানমালা প্রচার করবে বাংলাদেশ টেলিভিশনসহ বিভিন্ন চ্যানেলগুলো। গতকাল প্রেরিত বাণীতে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বলেছেন, পদ্মা সেতু বাস্তবায়ন বিশ্ব দরবারে দেশ ও জনগণকে আত্মবিশ্বাসের সাথে মাথা উঁচু করে দাঁড়ানোর সাহস এনে দিয়েছে।

বাংলাদেশের আত্মনির্ভরশীলতা ও আত্মমর্যাদার প্রতীক ‘পদ্মা সেতু’র শুভ উদ্বোধন হচ্ছে জেনে রাষ্ট্রপতি সন্তোষ প্রকাশ করেন। তিনি এ প্রকল্প বাস্তবায়নের সাথে সংশ্লিষ্ট সকলকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান।

শেখ হাসিনা তাঁর বাণীতে প্রমত্তা পদ্মা নদীর উপর নির্মিত দেশের সর্ববৃহৎ ‘পদ্মা সেতু’ যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়ার দিনকে বাংলাদেশের জন্য এক গৌরবোজ্জ্বল ঐতিহাসিক দিন হিসাবে অভিহিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘দেশপ্রেমিক জনগণের আস্থা ও সমর্থনের ফলেই আজকে উন্নয়নের এ নতুন অধ্যায় উন্মোচিত হয়েছে। আগামী দিনেও গণমানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষা ও স্বপ্ন পূরণে আমরা আন্তরিকভাবে কাজ করে যাব। সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় ক্ষুধা দারিদ্র্যমুক্ত ও উন্নত-সমৃদ্ধ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আজীবন লালিত স্বপ্নের ‘সোনার বাংলাদেশ’ গড়ে তুলতে সক্ষম হব, ইনশাআল্লাহ।’

মাদারীপুরের শিবচর উপজেলার বাংলাবাজার ঘাটে আয়োজিত সমাবেশে অংশ নেবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বাংলাবাজারের সমাবেশ হবে ব্যাপক আকারের। সেই অনুযায়ী বর্ণিল আয়োজনও করা হয়েছে। এ সমাবেশে যোগ দিতে দক্ষিণের জেলাগুলো থেকে বিপুল জনসমাগম হবে বলে আশা করা হচ্ছে। মাদারীপুর থেকে রিপনচন্দ্র মল্লিক জানাচ্ছেন, পদ্মাসেতুর উদ্বোধনী জনসভাকে ঘিরে এক্সপ্রেসওয়ে অসংখ্য ফেস্টুন দিয়ে সজ্জিত করা হয়েছে। ফরিদপুরের ভাঙ্গা থেকে পদ্মা সেতুর জাজিরা প্রান্তের টোল প্লাজা পর্যন্ত এঙপ্রেসওয়ে হাজার হাজার ফেস্টুনে ভরে গেছে।

এ ছাড়া টোল প্লাজা থেকে পাঁচ্চর পর্যন্ত পদ্মাসেতুর অ্যাপ্রোচ সড়কে দেড় ডজন তোরণ নির্মাণ করা হয়েছে। তোরণ, ফেস্টুন ছাড়াও ঘাট ও আশেপাশ এলাকায় পোস্টার, ব্যানার, বড় আকৃতির ফেস্টুনের ছড়াছড়ি। সব মিলিয়ে পদ্মাসেতুর উদ্বোধনকে ঘিরে বর্ণিল উৎসব বইছে মাদারীপুরের শিবচর উপজেলার বাংলাবাজার ফেরিঘাটসহ পুরো জেলায়।

মাদারীপুর পুলিশ সুপার গোলাম মোস্তফা রাসেল বলেন, ‘ঘাট এলাকায় কঠোর নিরাপত্তা রয়েছে। আমরা এসএসএফ-এর সাথে সমন্বয় করে সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছি। জনসমাবেশে নির্বিঘ্নে জনসাধারণ আসতে পারবে।’

এদিকে, বাংলাবাজারে জনসভায় শুধু মাত্র মাদারীপুর জেলা থেকেই তিন লাখের বেশি মানুষ সমবেত করার কাজ করছে বলে আওয়ামী লীগের নেতারা জানিয়েছেন।
মাদারীপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কাজল কৃষ্ণ দে বলেন, স্বপ্নের পদ্মা সেতুর উদ্বোধন শেষে শিবচরের ইলিয়াস আহমেদ চৌধুরী [বাংলাবাজার] ফেরিঘাটে জেলা আওয়ামী লীগ জনসভার আয়োজন করেছে। দক্ষিণাঞ্চল ও পশ্চিমাঞ্চলের বিভিন্ন জেলা থেকে দশ লাখের বেশি লোকের সমাবেশ হবে। এই সমাবেশকে সফল করতে মাদারীপুর জেলা আওয়ামী লীগের সকল অঙ্গসংগঠন ও প্রতিটি ইউনিট কাজ করছে।

দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলোসহ সারাদেশে প্রশাসনের পক্ষ থেকে ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া পদ্মার উভয়পাড়ে কঠোর নিরাপত্তা বলয় তৈরি করা হয়েছে।

২০১৭ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর সেতুর নির্মাণ কাজে ৩৭ এবং ৩৮ নম্বর পিলারে প্রথম স্প্যান বসানোর মাধ্যমে পদ্মা সেতুর অংশ দৃশ্যমান হয়।
পরে একের পর এক ৪২টি পিলারের ওপর বসানো হয় ৪১টি স্প্যান। ২০২০ সালের ১০ ডিসেম্বর শেষ ৪১তম স্প্যান স্থাপনের মাধ্যমে বহুমুখী ৬.১৫ কিলোমিটার পদ্মা সেতুর সম্পূর্ণ কাঠামো দৃশ্যমান হয়ে ওঠে।

প্রকল্পের বিবরণ অনুযায়ী, মূল সেতু নির্মাণের কাজটি করেছে চীনের ঠিকাদার কোম্পানি চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি (এমবিইসি) এবং নদী শাসন করেছে চীনের সিনো হাইড্রো কর্পোরেশন। মোট ৩০, ১৯৩৩.৭ কোটি টাকা ব্যয়ে স্ব-অর্থায়নে সেতু প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হয়েছে।

মূল সেতু নির্মাণের ব্যয় ১২,১৩৩.৩৯ কোটি টাকা (৪০০ কেভি ট্রান্সমিশন লাইন টাওয়ার এবং গ্যাস লাইনের জন্য ১০০০ কোটি টাকা সহ) এবং ১৩.৮ কিলোমিটার নদী শাসন কাজের ব্যয় ৯,৪০০০.০ কোটি টাকা।

টোল প্লাজা এবং এসএ-২ সহ ১২ কিমি অ্যাপ্রোচ রোডের নির্মাণ ব্যয় ১,৯০৭.৬৮ কোটি টাকা (২টি টোল প্লাজা, ২টি থানা ভবন এবং ৩টি পরিষেবা এলাকা সহ) যেখানে পুনর্বাসনের ব্যয় ১,৫১৫.০০ কোটি টাকা, ২৬৯৩.২৬ কোটি টাকা ব্যয়ে জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে। পরিবেশ রক্ষায় ব্যয় ১২৯০.৩ কোটি টাকা, কনসালটেন্সি ৬৭৮৩.৭ কোটি টাকা এবং অন্যান্য (বেতন, পরিবহন, সিডি ভ্যাট এবং ট্যাঙ, ফিজিক্যাল এবং প্রাইস কন্টিনজেন্সি, ইন্টারেস্ট ইত্যাদি) ১,৭৩১.১৭ টাকা। শরীয়তপুরের জাজিরা পয়েন্টে পদ্মা সেতুর প্রথম স্প্যান বসানো হয় ২০১৭ সালের ৭ অক্টোবর।

২০১৫ সালের ১২ ডিসেম্বর শরীয়তপুর জেলার জাজিরা পয়েন্টে নির্মাণ কাজ শুরু হয়। প্রধানমন্ত্রী নদী প্রশিক্ষণের কাজ এবং পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্পের মূল নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করেন।

১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর ১৯৯৭ সালে তিনি জাপান সফর করেন। তিনি পদ্মা ও রূপসা নদীর ওপর সেতু নির্মাণের প্রস্তাব করেন। জাপান সরকার দুটি নদীর ওপর সেতু নির্মাণে সম্মত হয়। যেহেতু পদ্মা নদী একটি শক্তিশালী নদী যার প্রবল স্রোত, জাপান পদ্মা নদী জরিপ শুরু করে এবং তারা তার অনুরোধে রূপসা নদীতে নির্মাণ কাজ শুরু করে।

জাপান ২০০১ সালে পদ্মা নদীর উপর সেতু নির্মাণের সমীক্ষা প্রতিবেদন বাংলাদেশের কাছে জমা দেয়। জাপানি জরিপে মুন্সীগঞ্জের মাওয়া পয়েন্টকে পদ্মা সেতু নির্মাণের স্থান হিসেবে নির্বাচিত করা হয়।

জরিপের ভিত্তিতে প্রধানমন্ত্রী ২০০১ সালের ৪ জুলাই মুন্সীগঞ্জের মাওয়ায় আনুষ্ঠানিকভাবে পদ্মা সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। কিন্তু ২০০১ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসতে পারেনি। ক্ষমতায় আসার পর বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার মাওয়া পয়েন্টে নির্মাণ কার্যক্রম বন্ধ করে দেয় এবং মানিকগঞ্জের আরিচা পয়েন্টে পদ্মা সেতুর জন্য আবারও জরিপ করার জন্য জাপান সরকারকে পরামর্শ দেয়।

দ্বিতীয়বার জরিপ করার পর জাপান মাওয়া পয়েন্টকে পদ্মা সেতু নির্মাণের স্থান হিসেবে উল্লেখ করে প্রতিবেদন জমা দেয়।

২০০৯ সালে আবার ক্ষমতায় আসার পর আওয়ামী লীগ সরকার পদ্মা সেতু নির্মাণকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকারের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করে।

দায়িত্ব গ্রহণের ২২ তম দিনে, নিউজিল্যান্ড ভিত্তিক পরামর্শদাতা সংস্থা মনসেল আইকমকে পদ্মা সেতুর সম্পূর্ণ নকশা প্রস্তুত করার জন্য নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল।

সেতু প্রকল্পে শুরুতে রেলের সুবিধা ছিল না। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে রেলওয়ের সুবিধা রেখে সেতুর চূড়ান্ত নকশা প্রণয়ন করা হয়। ডিজাইনটি ২০১০ সালের মধ্যে চূড়ান্ত করা হয়। পরের বছর জানুয়ারিতে, ডিপিপি সংশোধন করা হয়। সংশোধনের কারণে প্রকল্পের ব্যয় দাঁড়ায় ২০ হাজার ৫ শ’ ৭ কোটি টাকা। খরচ বাড়ার পেছনে বেশ কিছু কারণ ছিল। শুরুতে মূল সেতুর দৈর্ঘ্য ছিল ৫ দশমিক ৫ কিলোমিটার যা পরবর্তীতে ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটারে উন্নীত হয়।

প্রথম ডিপিপিতে, সেতুর ৪১টি স্প্যানের মধ্যে তিনটির নিচে নৌযান চলাচলের জন্য জায়গা রেখে নকশা তৈরি করা হয়েছিল। পরে, ডিপিপি সংশোধন করার মাধ্যমে ৩৭টি স্প্যানের নীচে জাহাজ চলাচলের সুযোগ রাখা হয়।

সংশোধিত ডিপিপিতে অনেক ওজন বহন করার ক্ষমতাসম্পন্ন রেল সংযোগ যুক্ত করা হয়েছে। কংক্রিটের পরিবর্তে ইস্পাত বা স্টিলের অবকাঠামো যুক্ত করা হয়।
সেতু নির্মাণের পাইলিং কাজের জন্যও অনেক গভীরে কাজ করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। ক্ষতিগ্রস্ত লোকদের পুনর্বাসনের খরচও বেড়েছে (জমি অধিগ্রহণের কারণে)।
২০১৬ সালে খরচ বাড়ানো হলে মূল সেতু নির্মাণ ও নদী শাসনসহ সব কাজে ঠিকাদার নিয়োগ করা হয়। এদিকে মার্কিন ডলারের বিপরীতে বাংলাদেশের মুদ্রার অবমূল্যায়ন হয়েছে ৯ টাকা। নতুন করে যুক্ত হয়েছে ১.৩ কিলোমিটার নদী শাসনের কাজ।

মূল সেতু নির্মাণ, নদী শাসন ও অ্যাপ্রোচ রোড নির্মাণে ঠিকাদার নিয়োগে যে ব্যয় ধরা হয়েছিল তা প্রায় ৮ হাজার কোটি টাকা বেড়েছে।

এছাড়া জমি অধিগ্রহণে খরচ বেড়েছে ও ফেরি ঘাট স্থানান্তরের জন্য খরচের প্রয়োজন হয় এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সেনা মোতায়েন করা হয়।

পদ্মা বহুমুখী সেতু ব্যবহারের জন্য এরই মধ্যে টোল ঘোষণা করেছে সরকার। গত ১৭ মে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের অধীন সেতু বিভাগ এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করে।

প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, ৬.১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ সেতু পার হতে একটি মোটরসাইকেল ১০০ টাকা, একটি গাড়ি ও একটি জিপ ৭৫০ টাকা।

টোল চার্ট অনুযায়ী, একটি পিকআপের জন্য ১,২০০ টাকা, একটি মাইক্রোবাসের জন্য ১,৩০০ টাকা, একটি ছোট বাসের জন্য (৩১-সিটের জন্য ১,৪০০ টাকা), একটি মাঝারি আকারের বাসের জন্য ২,০০০ টাকা (৩২ আসনের বেশি) এবং একটি বড় বাসের জন্য (তিন-অ্যাঙেল) ২,৪০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

এছাড়া ছোট ট্রাকের (৫ টন পর্যন্ত) জন্য ১,৬০০ টাকা, একটি মাঝারি ট্রাকের (৫-৮ টন) জন্য ২,১০০ টাকা এবং ৮-১১ টন ওজনের একটি ট্রাকের জন্য ২,৮০০ টাকা, একটি ট্রাকের (থ্রি-অ্যাঙেল) জন্য ৫,৫০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে এবং একটি ট্রেলারের (চার-অ্যাঙেল) জন্য ৬,০০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়। প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয় যে চার-অ্যাঙেল ট্রেলারের উপরে প্রতিটি এঙেলের জন্য ৬,০০০ টাকার সঙ্গে অতিরিক্ত ১,০০০ টাকা যোগ করা হবে।

পদ্মা সেতু উদ্বোধন উপলক্ষে বুধবার দুপুর ১২টা থেকে ২৬ জুন সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত শিমুলিয়া-মাঝিরকান্দি ও কাঁঠালবাড়ি রুটে ফেরি চলাচল বন্ধ থাকবে বলে বুধবার একটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তি জারি করে সরকার। পাশাপাশি, মেয়র হানিফ ফ্লাইওভার, পোস্তগোলা ব্রিজ এবং রাজধানী ঢাকা ও পটুয়াখালী শহরের মধ্যে জাতীয় মহাসড়ক এন-৮এই সময়ে বন্ধ থাকবে। চলাচলের জন্য জনসাধারণকে বাবুবাজার সেতু ও এর আশপাশের সড়ক ব্যবহার করতে বলা হয়েছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধস্বপ্ন থেকে বাস্তবের পথরেখা
পরবর্তী নিবন্ধট্রেনে কাটা পড়ে ব্যাংক কর্মকর্তার মৃত্যু