ভোগ্যপণ্যের বৃহৎ পাইকারি বাজার খাতুনগঞ্জে রমজানের প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। রমজানের বাজার ধরার জন্য ব্যবসায়ীরা দুই আড়াই মাস আগে থেকে পণ্য গুদামজাতকরণ শুরু করেন। পরবর্তীতে সেইসব পণ্য ক্রেতাদের অর্ডার অনুযায়ী দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সরবরাহ করবেন তারা। তবে এবারের চিত্রটা ভিন্ন বলছেন ব্যবসায়ীরা। ডলার সংকটের অজুহাত দেখিয়ে অনেক ব্যাংকই আগের মতো এলসি (ঋণপত্র) খুলছেন না। যার ফলে রমজানের পণ্য আমদানিতে কিছুটা বিঘ্ন ঘটছে। তাই স্বাভাবিকভাবে রমজানের পণ্য সরবরাহ নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছেন ব্যবসায়ীরা।
খাতুনগঞ্জের আমদানিকারকরা বলছেন, পণ্য বুকিং থেকে শুরু করে গুদামে আসা পর্যন্ত দেড় থেকে দুইমাস সময় লাগে। গত বছরের এই সময়ে ব্যবসায়ীরা প্রচুর পরিমাণ ছোলা, মটর ও মসুর ডাল গুদামজাত করে। কিন্তু এ বছর সেই ব্যস্ততা নেই। তবে বাজারে পণ্যের কোনো ঘাটতি নেই। তাই রমজানে দামও সহনশীল পর্যায়ে থাকবে। এদিকে পাইকারী বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বর্তমানে ছোলা বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ৭৮ টাকায়। এছাড়া সাদা মটর ৫৯ টাকা, মটর ডাল ৬০ টাকা, মসুর ডাল (চিকন) ১৩০ টাকা, (মোটা) ৯০ টাকা এবং ভারতীয় গম বিক্রি হচ্ছে প্রতিমণ ১ হাজার ৬৫০ টাকায়। অন্যদিকে সয়াবিন তেল প্রতিমণ বিক্রি হচ্ছে ৬ হাজার ৬৮০ টাকা এবং পাম তেল বিক্রি হচ্ছে ৪ হাজার ৬০০ টাকায়। চিনি প্রতিমণ ৩ হাজার ৯৫০ টাকা, ভারতীয় মরিচ কেজি ৪৬৯ টাকা, হলুদ ১১০ টাকা, রসুন ৯৫ টাকা, আদা ১২০ টাকা এবং পেঁয়াজ প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩৫ টাকায়। অপরদিকে এলাচ বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ২০০ টাকা, লবঙ্গ বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৮০ টাকা এবং দারচিনি বিক্রি হচ্ছে ৪৭০ টাকায়।
খাতুনগঞ্জের আড়তদাররা জানান, রমজান এলে শরবতের চাহিদা বেড়ে যায়। তাই চিনির ব্যবহারও বাড়ে কয়েক গুণ। বর্তমানে বাজারে চিনির দাম চড়া হলেও সরবরাহে কোনো ঘাটতি নেই। এছাড়া সারা দেশে প্রায় ৮০ হাজার টন ছোলার চাহিদা থাকে।
তবে এখন পর্যন্ত ছোলার সরবরাহ স্বাভাবিক রয়েছে। অন্যদিকে রমজানের খেজুরের আলাদা চাহিদা থাকে। সাধারণত খেজুর আমদানি হয় ইরান, তিউনিসিয়া, দুবাই ও সৌদি আরব থেকে।
খাতুনগঞ্জের ভোগ্যপণ্যের শীর্ষ আমদানিকারক ও বিএসএম গ্রুপের স্বত্বাধিকারী আবুল বশর চৌধুরী দৈনিক আজাদীকে বলেন, অনেক ব্যাংকই এলসি খুলছে না। যার ফলে আমদানি আগের চেয়ে কমেছে। আমদানি কমার কারণে দামে প্রভাব পড়বে কিনা সেটি এখনই বলা যাচ্ছে না। কারণ কে কী পরিমাণ আমদানি করছে সেটি বলা মুশকিল। তবে এটুকু বলতে পারি, গত বছরের মতো ব্যবসায়ীরা পণ্য আনতে পারছেন না।
চাক্তাই খাতুনগঞ্জ আড়তদার সাধারণ ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. মহিউদ্দিন দৈনিক আজাদীকে বলেন, খাতুনগঞ্জের ব্যবসায়ীরা রজমানের তিন চার মাস আগে থেকে পণ্য আমদানির তৎপরতা শুরু করেন। কিন্তু এবার এলসি খুলতে ব্যবসায়ীদের ভালোই বিপাকে পড়তে হচ্ছে। তারপরেও আমরা কিছু কিছু পণ্য আমদানি করছি।